অনিতেশ চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

    নেহাতই কবিতাগুচ্ছ   ১ যে নক্ষত্র নিভছে, আমি তার সুড়ঙ্গের মুখে ওরা আতর মাখাচ্ছে চাদরের গায়ে। জয়দেব নদী বয়ে যাক, বয়ে বয়ে যাক, ও ছাতিম গন্ধে প্লাবিত দৃষ্টি কে নেবে? কত সুর, মন্ত্রগুপ্তি আমি লিখে গেছি সব, স্বরে ভুল নেই ঘুঙুর বেঁধে কে নামল মাটিতে! থামো, এই তাল এই লয়, জন্ম, উপত্যকা, আমাদের। এর সব কথা জেনে গেলে না-হওয়া বাসায় রোদ খেলবে না যে মাদুর ভিজছে, আমি তার ভিতরে গোটানো ওরা গুছিয়ে নিয়েছে সব– নাম, বাস্তু, যতি– জ্বরে জল আসে অঙ্গে, নক্ষত্র সাক্ষী, অসহ্য বিস্ময়ে ছটফট করতে করতে…

Read More

সৈকত সরকারের কবিতাগুচ্ছ

দক্ষিণের পিঞ্জরা ১. আরেকটু কথা বললেই কথা ফুরিয়ে যাবে যেমন বই ফুরিয়ে গেলে বন্ধ থাকে বইয়ের দোকান। আরেকটু গাছ চিনলেই, থাকবে না আগ্রহের খেলা, তোমাকে লাট্টু হাতে ধরিয়ে দিয়ে কেড়ে নিয়েছে সুতো, ঘোরানোর। যদিও কক্ষপথ থাকে আর ঘুরপাক খাওয়া তোষামোদ তোমাকে প্রদক্ষিণ করে যায় প্রতিবারের মতো…   ২. সন্ধির সমস্ত শর্ত মেনে নিয়ে টুংটাং শৈশব বাজায় ছেলেটা; হাতে কোনো বাঁশি নেই, কপালে নেই লটারি-প্রকোপ; আমার ভারাক্রান্ত মধ্যাহ্নে ভোরের চিঠি ফেরি করে তার মায়া ; আমি দেখছি দড়ি বেয়ে হেঁটে যাচ্ছে ছেলেটির মা, দুহাত প্রশস্ত পাশে, দুলে উঠছে দুপায়ে ছোবল; সন্ধির…

Read More

বর্ণালী দত্ত’র কবিতাগুচ্ছ

  ১. যেখানে পথ নেই   মৃত্যুর পথে যেতে ভয় পাই। তীব্র মাথা যন্ত্রণার ভিতর তোমাকে মনে করা আরও ভয়ানক। রেল লাইন পার করলেই তোমার বাড়ি পৌঁছানো যাবে, তারপর একটা ছোট ডোবা, তারপর তুমি। শান্তির জন্য তোমার বাড়ি পৌঁছে যেতে চাই বারবার কিন্তু ডোবা পার করতে পারিনা। আমার অনির্দিষ্ট বাড়িতে কোনো সচল জীব আসেনা যখন থেকে বড় হলাম। তুমি অবধি পৌঁছানো বেঁচে থাকার চেয়েও জটিল ভাবলে আশ্চর্য হই।     ২. তুমি একটি অবলুপ্তির মত   একতলা বাড়ির মাথা ভেঙে যাওয়ায় যে অপমান লেগে থাকে, সেখানে মার্কেজ আমি লুকিয়ে রাখি…

Read More

সুমন সাধু’র কবিতাগুচ্ছ

১ বিষাদ ভুলিয়ে দিচ্ছেন জীবন যেন তাকের আড়ালে রাখা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ধুলো ঝেড়ে নাম লেখাচ্ছে হিজড়েদের দলে আর পাড়ায় জমছে অশান্তিতুতো হ্যান্ডসামরা যেদিকে তাকাই শুধু ধূ-ধূ শরীর যত্নআত্তি না পেয়ে ক্রমশ শরীর শুকোচ্ছে মন রয়ে যাচ্ছে মনে দ্রুত ব্যস্ততায় হাতে সময় থাকছে না মানুষ মানুষকে ভালোবাসছে না আর         ২ বর্ণময় অতীতের কাছে ফেলে আসছি ঘুম জীবদ্দশায় আর কোনো অশান্তি থাকছে না তোমার স্পর্ধার গায়ে এঁকে দিচ্ছি কালচিহ্ন অকস্মাৎ শরীরে ক্ষয় হৃদয়ে জলজ ডানার আর্তি এ নশ্বর দেহ তোমায় উৎসর্গ করে যাব হে ক্ষণকাল, হে পরাগমিলন      …

Read More

হিন্দোল ভট্টাচার্য’র কবিতাগুচ্ছ

  অস্ত্র   যেখানে দাঁড়াই, দেখি, মূর্তিগুলো ভাঙা, পড়ে আছে যুদ্ধে মৃত সৈনিকের রক্তমাখা শরীর যেমন। চকচকে ধারালো অস্ত্র দিনে দিনে মরচে পড়ে যায়। প্রতিটি মূর্তির কিছু কথা আছে, জানেন ভাস্কর। প্রতিটি অস্ত্রের থাকে বেদনা, বিষাদ। ক্ষতস্থান থেকে শুধু রক্ত পড়ে। রক্ত, প্রাণ নয়। ভাস্কর জানেন, তিনি কার মূর্তি গড়তে গিয়ে কাকে গড়ে তুলেছেন একা। যুদ্ধক্ষেত্র জুড়ে পড়ে থাকে তার ক্ষয়।     অভিশাপ   যে বিষাক্ত হয়ে আছি, এই বিষ তোমাদের দেওয়া। আমার ওষুধ নেই, অপমান আছে। মনে হয় এ কথাটি বলেছি আগেও; মনে হয় খোকা খোকা মুখ করে…

Read More

অনুপম পোল্লে’র কবিতাগুচ্ছ

    শূন্য ক্ষতস্থান   প্যাঁচার নির্জনতা বাড়ায় যে নক্ষত্র তাকে আমি ছেড়ে এসেছি- জ্যোৎস্নায় আধো ডোবা অবৈধ মৃত্যুর লোভে ভালোবেসেছি বিষণ্ন রাতের জবানবন্দী জুড়ে ছেঁকে ওড়া জোনাকির মতো ফুটে থাকা তোমার গন্ধরাজ, শৈশবের রঙীন নদী যত; হারানো বাড়ি-চিঠি-স্নেহ ফিরিয়ে আনে সমুদ্র বারবার তোমাকে কীভাবে ভোলে শূন্য ক্ষতস্থান তোমাকে কীভাবে ভোলে কবিতা আমার! শৃগাল ক্ষুধার্ত হলে রাত্রি বেড়িয়ে পড়ে সম্ভোগ শিকারে; হুহু মেঘ-চোখে, তুমি আড়াল হয়েছো দীর্ঘ শ্রাবণের ভারে যেন উড়ন্ত চিলের আদলে ছেড়ে যাচ্ছ প্রতি পিছুটান যেন পিছু নাও অন্তহীন মর্মরের যা স্বপ্নকে ঘর বলে মানে আর হাওয়ায় হারিয়ে…

Read More

আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

পার্শ্ব চরিত্র   ১ পিছিয়ে রয়েছে ভাষা অনিবার্য প্রজন্মের ফাঁক যে লোকটি তুলে আনে বিতর্কিত এই শব্দ কপালে রেখেছি তার চুম্বন পুরোনো প্রয়োগে সতত পিছনে হাঁটা প্রতিদিন চাল ডাল কেনা উত্তরের গাড়ি ধরা বিজ্ঞানও সেসব জানে না জানে না অফিস গেলে দু’বাক্স সিগারেট রোজ কীভাবে ফুরিয়ে যায় ভদ্রতার খাতির বশত ২ বয়স তিরিশ ছোঁবে, বাবা-মা’র ষাটের স্তবক সামান্য ঘুমের শব্দে হেরফের কানে আসে যদি শরীরে রক্তের স্রোত জল হবে কেননা সময় বড় বেয়াদপ তাকে বাঁচিয়ে খারাপ কবিতায় পুষেছি বেআব্রুভাবে তুমি তার সাক্ষী হও যদি দুবেলা ভাতের পরে চাইব না নরম…

Read More

অর্পিতা কুণ্ডু-এর কবিতাগুচ্ছ

বিকল্প ১ নিজেকে দেখার চেয়ে বড় খেলা পৃথিবীতে নেই আমি কী কী পারি আর কতটা পারি না কতটা ক্ষমতা আর কীভাবে বৃত্তের শেষে পরিধি পেরোই, কীভাবে জলের পাশে বেজে ওঠে ড্রাম, বিউগল স্তব্ধতার বুক চিরে কীভাবে ছিটকে ওঠে কান্নার ফোয়ারা, তাই দেখি, তাই দেখি, সেভাবেই খেলা জমে ওঠে… ২ ছিঁড়ি ছিঁড়ি ভাব করি, ধুয়ো তুলি এই ছিঁড়লাম ধাবিত রক্তের পাশে ফেলে রাখি মরচে-ধরা ব্লেড মাথার ভেতর খুঁজি গলি-ঘুঁজি, পর্দা তুলে নামি পরবর্তী পর্দা খুলে যায়, মজার খেলা রে ভাই, হাওয়ার রেখায় আর কালের রেখায় আলো সরে সরে যেতে থাকে, নিভে…

Read More

রাহুল পুরকায়স্থ এর কবিতাগুচ্ছ

রঙিন কবিতা এক জল, তরঙ্গজলের ধ্বনি, ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে দেখো তার অঙ্গের বাহার, মৃত্তিকার কাছাকাছি সে-ও দুলে দুলে চলে হাওয়াকলের গায়ে তার রেণু লেগে আছে, রক্তবর্ণ, বায়ুচর, হেলে আছে খানিক উত্তরে এই পথে তিনি আসবেন — ভেবে ভেবে সাজিয়ে তুলেছি ছায়াপথ, নগরসীমান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছি যেন ইহজন্ম, পরজন্ম, ভ্রমজন্মব্যাপী, বাউল, ফকির, খ্যাপা খেপি, মিশে যাচ্ছে অক্ষরে-অক্ষরে শ্বাসমাত্রা প্রলম্বিত, শূন্য এক গ্রামের ইস্কুলে চাঁদ ওঠে! চাঁদের আলোয় বাজে বাঁশি ওই বাঁশি জলধ্বনি, এইমাত্র জেনে বেকুব মাস্টার আমি শব্দরূপে অর্থ দিতে চাই হে তুমি অন্ধের ঈশ্বর আজ আমি নিজেই নিজেকে দেখো কীরূপে…

Read More

সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কবিতাগুচ্ছ

পুনর্বার কবিতাগুচ্ছ ১. শীতের সমূহ ভয় থলি ভরে এল এই সন্ধে-শনিবারে সর্পভয় সবুজে সবুজ আর রক্তমাখা ঘোরলাল বেগুনি কালশিটে সদ্য জেগে-ওঠা মুখ ভাঙা ও পাণ্ডুর দ্যাখো দূর থেকে একে বলো মার, বলো সরস্বতীবৎ সাদা কলহের গুণে জিভ পুড়ে যাচ্ছে চুনে, মনে পড়ে কথা সব মনে পড়ে শীতের থাপ্পড় রোমশ দুবাহু আজ ঝুঁকে পড়ছে শীতের বাজারে কী কঠিন পেশি, তাতে ঝুলে রয়েছে খাদ্যাখাদ্যসমুচ্চয়, থলি যে-থলিতে ভরা আছে ছোটো ছোটো অঙ্গরাশি হাসি, বাঁকা একে একে গুনে নিই হিসেব মিলিয়ে গুনে নিই নিজের আঙুল নিমেষে মচকে যাই ভেঙে যাই ব্যথায় ফ্যাকাশে সবজির উৎসব…

Read More

শংকর চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

কলঙ্কের কথা গাড়ির বাইরে চাঁদ ভিজে যায় স্নানে তারারা কোথায়? খোলামেলা নিপুণ ভঙ্গিমা চাঁদে শিশিরকণায় মুখ দেখেছিল একবার সে ছিল বর্ষার কাব্য―–কালো রাতে অসুখী শরীর হাত ছুঁয়ে দেখে নেয় শিউলি গাছের ডালগুলি সে ছিল শ্যামলা মেয়ে মুখচোরা এমনই পুতুল কলঙ্কে ফেলেছে আলো বিপুল আভায় তখনও বাইরে চাঁদ মেঘের আড়ালে আঙুল ভিজিয়ে নিয়ে এঁকেছিল ঢেউ স্নান শেষ হলে বারবার রাতগুলো দেখে মনে হবে শূন্যতায় বুঝি গরাদ এঁকেছে কেউ।   রাস্তা রাস্তা থেকে আলো সরিয়ে নিল কেউ বড়ো রাস্তা জুড়ে মানুষের ভিড় গিজগিজ করছে তুমিও লুকিয়ে বারান্দায় কাঁদছিলে সেদিন তোমার মুখ ও…

Read More

পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

শীত এখন আমরা সব ভুলে ভুলে যাই। বয়স হয়েছে। কোনও হুটোপাটি নেই। রয়েসয়ে গল্প হয়। তারিয়ে তারিয়ে। এ ওর সমস্যা বুঝি,সমাধান চাই। আমাদের যৌথ সমস্যা নেই কোনও। আমাদের শীতকাতরতাগুলি ঘুমন্ত এখন বেলা-অবেলার অঙ্ক ভুলে গিয়ে, মুগ্ধ তন্দ্রাতুর সূক্ষ্ম সুতোর কাজে সেজে ওঠে পশমিনা দিয়ে। দূর রুপোলি জুলফির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জ চোখ বলেছে আমায় রোদের ঝালর দেখছি, অন্য কিছু নয় বিদ্যুৎ এলাকা ছেড়ে চলে গিয়ে স্বীকার করেছে, সে এই রোদের খুবই দূরাত্মীয় হয়। ইশারা চিত্রার্পিত ভাষা। এক তুমুল বাইসন। আমার কীলক লিপি। রক্তে লেখা খিদে। যে পালায় স্বপ্নে তাকে বাস্তব অক্ষরে…

Read More

ঋতব্রত মিত্র-এর কবিতাগুচ্ছ

তোমার নয় যাবার দিন তোমার শুধু যাবার দিন, ফেরার দিন নেই আমার খুশি আমি খুশি, খুশি তো অল্পেই কাটাকুটি যোগবিয়োগের এমন বিষম খেলা খেলারামের হুহুঙ্কারে কাটলো সারা বেলা যাবার সময় পিছুডাকের পুরনো অভ্যেসে মিলের থেকে অমিল খুঁজে হদ্দ হলে শেষে আল বেঁধে জল ধরতে গিয়ে জোড়াতালির মাঠে ডানার জখম লুকোয় পাখি উড়ন্ত পাখসাটে ভাব বলতে গিয়ে যদি মুখ ফসকে আড়ি আনবাড়িতে পা দিয়ে ফের মাথায় সারা বাড়ি মুখ ভেংচে বলছো — তুমি বাসি বাসি বাসি তবু আমি ঘৃণা দিয়ে তীব্র ভালোবাসি   ক্রিয়ামাতৃক মুখের কথা খুঁজতে খুঁজতে ঢুকছি তোমার মুখের…

Read More

তপোব্রত মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

১। মায়ামেঘ – ১ ছায়া ঘনাইছে… ঘরে ঘরে যেটুকু অন্ধকার ঢোকে, তার ফাঁকে ফাঁকে ফাঁক গলে বিচিত্র ছবি এসে পড়ে — থুক করে ফেলে যাওয়া দেওয়ালের গায়ে গায়ে লাল পিক এভাবে সম্মান করে নাক চেপে চলে যাওয়াদের, সবটুকু দাঁত বার করে ছোপধরা, যতক্ষণ না মাড়ি গাল ব্যথা হয়ে ফের হাসি থেমে আসে। এমতি ঘনায় ছায়া বাড়িঘরে যেটুকু দেখা যায় তার চেয়ে বেশী চোখ রাস্তায় রাস্তায় আলো খোঁজে, কলকাতার পুজো — পুঁজ হয়ে সাদা সাদা আলো রঙ জ্বলে ওঠে বাজনায় বাজনায়; ঢাকে যে দাঁতন পড়ে সে দাঁতের ঠিকানা মেপে নেবে সাদা…

Read More

বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায়-এর কবিতগুচ্ছ

  এলাম্নি মিট শেষমেশ সে এলো না। আমরা তার হাত ধরে ঝোলাঝুলি করলাম ফেরার রাস্তায় দেখি কড়া মদ্যপ রোদ উদ্যত চাবুকে দুপুরকে পেটাচ্ছে, যে দুপুর তার বউ নয় এই মফস্বলের দুপুর যার কোমরে মেদের ঘামে চিকচিকে হঠাৎ কামনা শান দেওয়া বাড়িগুলোর ঠাণ্ডা মেঝেয় কারা সারি সারি ঘুমোয়? উঁকি দিলাম, অন্ধকারে দেখাই গেলো না শেষমেশ সে এলো না আমরা তার পা ধরে বলতে গেছি “দেহি পদপল্লবম উদারম” কিন্তু তার পায়ে ব্যাখ্যাহীন চোট তার ব্যাণ্ডেজ খুললেই সে কি গন্ধ আর ব্যাণ্ডেজের মধ্যে আমাদের কবেকার একতাড়া চিঠি সেই গন্ধে পুরো পাড়া ওপাশ ফিরে…

Read More

সৌমাল্য গরাই এর কবিতাগুচ্ছ

বিভ্রম যতটা সীমানা তার ততদূর নয় আসমান আলোরা মায়ার মৃগ অন্ধকার বনে অতর্কিতে ফাঁদ পাতে দৃষ্টির আড়ালে অনেক ভ্রমণ শেষে ধ্বংসস্তূপে এখনো দাঁড়ালে কেবল বিভ্রমে কেঁপে উঠি, যাকে এতকাল ধরে খুঁজেছি নিজের ভেবে সাক্ষী রেখে নিজস্ব আয়নায় মিলেনি কিছুই তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপ আমিও নকল তাই বিপরীত দিকে আমাকেই ভ্রম ভেবে ছায়া আরও বড় হতে চায়   অভিলেখ বিষাদ শূকরী পুুুষি, দিই তাকে প্রভূত খাবার হাঁটু মুড়ে বসে নখ দাঁতসহ, ক্রমে তার ছায়া অন্ধকারে সবেগে ঝাঁপায়। শেষ অব্দি পৌঁছাতে না পেরে ব্যর্থ ওই লাফগুলি জোড় বেঁধে রমণে বেরোয় ফাঁকা কাচঘরে…

Read More

দেবব্রত কর বিশ্বাসের কবিতাগুচ্ছ

তোমাকে বলছি, নিজেকে বলছি ৬. বিকেল আর সন্ধের মাঝে যে অন্ধকার সেখানে যখন অঝোর বৃষ্টিপাত হয়, ঠিক তখন সেই আবছায়ার ঘন শীতল হাওয়ায়, বিছানায় শুয়ে শুয়ে তোমার কথা মনে পড়ে আমার মনে হয়, বুকের ভেতরটা একটা ভিজে মাঠ বৃষ্টির জল পড়ে পড়ে নরম হচ্ছে মাটি আমি আর টাল রাখতে পারি না কিছুতেই জল কতরকমের হয় আমি কি জানি না? শুধু কিছুতেই বুঝতেই পারি না কতটা ডুবে গেলে অন্ধকার সয়ে যায় কীভাবে ঘুমোলে নিজেকেই মনে থাকে না আর?   ৭. মাঝেমধ্যে পাগল পাগল লাগে আমি একা একা আর নিতে পারছি না…

Read More

নীলাব্জ চক্রবর্তী-র কবিতাগুচ্ছ

  সিনট্যাক্স ভাবতে ভাবতে একটা অ্যালগরিদম সরে পড়ছে দু আঙুলের ফাঁক দিয়ে গলে যাওয়া মানে জ্যোৎস্নার সিনট্যাক্স ভাবতে ভাবতে উপকূলবর্তী শব্দটার ঘ্রাণ কেমন ফারাক এনে এতদূর দৃশ্যচেতনায় বাউন্স করছে একটা কাগুজে ইশারা মাংসের শব্দে শব্দে যে স্মৃতি এক ঘটমান বর্তমান ক্রিয়া হয়ে…   রঙ এক ফ্রেম রঙ এক ফ্রেম ছিঁড়ে ফেলছে জলে পড়া একটা দিনের ভেতর বোটানিকা বোটানিকা উচ্চারণে পাতার বিজ্ঞাপন শান্ত একটা পতাকায় সরে যাচ্ছে একটা ব্যালান্সিং অ্যাক্ট খুব ফিকে ছায়া খুলে ভাঙা ভাঙা লাইন পড়েছে পোড়া ভাষায় যা কিছু জন্মদাগ পর্যন্ত চকোলেট ক্ষেতের আরও ডানদিক বরাবর জ্বর আসার…

Read More

শ্রীদর্শিনী চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

বর্ষার লেখা ৩ আকাশে প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়, তবুও আষাঢ় তুমি ইদানিং হারিয়েছ পুরাতন গ্লোরি। শহরে কদমের ফুল এখন বাড়ন্ত আর বিরক্ত মুখের কাছে হেরে যাচ্ছে সুখী বর্ণমালা। তাও এই বিকেলের নিজস্ব গহ্বরে ফিরে ঠুমরির বিলাসিতা করি আমি ক্লান্ত নাগরিক – দেশ যে রাগের নাম তাকে ভাঙা যায়নি এখনও।   ৪ বুগেনভিলিয়ার ডাল পাতাশূন্য পুঁতে দিয়ে অপেক্ষায় আছি গোলাপি দুপুরের। কাঁটার স্পর্শে যে ব্যথা – বলে দেয় কিছু তবু হল – তার। এ ঋতু টুকরো থেকে গাছ হয়ে ওঠার কথায় সম্ভাবনার মত মায়া ছড়িয়েছে মাটিময়। তুমি তাকে ভালোবাসো – অপেক্ষা করো দুটি-একটি…

Read More

অনিন্দিতা গুপ্ত রায়-এর কবিতাগুচ্ছ

প্রকৃতি, পরমা এক নিজেকে পড়তে পড়তে প্রতিবার খুঁজে পাই নদীর ওপর ঝুঁকে পড়া গাছ বেগুনী বেগুনী ফুল, কালচে পাতায় ঘুম, মৃত্যুজটিল ফাঁদ। আমার আঙুল সেই গিঁট খুলে খুলে ঘুম দিতে চায়। অবিন্যস্ত মায়া থেকে কাচপোকা বেছে রাখে কলসির অতল গভীরে, গর্ভগৃহে। ভেজা গামছায় ঢাকে গতরাত্রের পান্তা ডোবানো টকজল। কোথাও বৃষ্টি এলে এ পাড়ায় নদী ফুলে ওঠে। কাত হয়ে থাকা নৌকোর খোলে স্যাঁতসেঁতে শীতলপাটির খুলে যাওয়া লেখার পাতার মত অবিকল। পান্ডুলিপির গায়ে জমে ওঠা বাস্পবিতান, মেঘপুরাণের ইতিকথা, জলভারনত অক্ষরমালা। সন্ধ্যাসকাল তবু দেওয়ালের কাছে যাই অভ্যেসবশে। জানলাবিহীন তার দৃষ্টি ছাড়িয়ে উঠে যাওয়া…

Read More