শিশির আজমের কবিতাগুচ্ছ

    গোল্লা   স্কুলের পরীক্ষায় রচনা লিখন এসেছিল ‘গরু’ আমি কিছুই লিখিনি টিচার আমায় গোল্লা দিয়েছিলেন আমি আদৌ ঘুমিয়ে ছিলাম না আর গরু বিষয়ে আমি জানি যদিও এখনো আমার মাথায় আসেনি টিচার আমায় গোল্লা দিলেন কেন গরু নিরীহ আর মহৎ একটা প্রাণি ওকে নিয়ে কী লিখবো আমি আচ্ছা আমাকে নিয়ে যদি রচনা লিখতে বলা হয় গরু কী লিখবে তাহলে টিচার ওকে কত নম্বর দেবেন ওই গরুকে না কি ও-ও পাবে আস্ত এক গোল্লা     যে কথাটা বেমালুম চেপে যাওয়া হয়   উয়ারী আর বটেশ্বর দুটো গ্রাম অথবা একটাই…

Read More

বর্ণালী কোলের কবিতাগুচ্ছ

  চন্দ্রের আকর্ষণ ও প্রহার   ফসল জোয়ারের প্রবল জলস্রোত। চন্দ্রের আকর্ষণ ও প্রহার। ধুইয়ে দিয়ে গেছে। অজস্র নতুন পলি জমেছে আমার দেহে। অবিরাম ঢেউ শেষে উর্বর শস্যভূমির মতো জেগে আমার শরীর। আবাদ করো।     মানচিত্র কথারা সব চুপ আর্তিরা চুপ কেন এটা হল, কেন,কেন ভুল বুঝেছ, সব অভিযোগ স্তব্ধ শীত রাত্রির মতো যেন রাতের সায়েন্স সিটি বুকের মধ্যে অজস্র স্পন্দন নিয়ে ঘুমে যেন অঘ্রানের মাঠ ফসল কাটার শব্দ নিয়ে নিদ্রিত যেন মহাকাশ থেকে দেখা রাতের পৃথিবী কয়েকটি আলোর অগ্রসর নিয়ে ঘুমিয়ে     সম্পর্ক ইউরেনাস, নেপচুন গ্রহের মতো…

Read More

হাসনাত শোয়েবের কবিতাগুচ্ছ

    হারানো সন্তানদের জন্য প্রার্থনা   ৩৭ পিটার বিকসেলের গল্প থেকেই বেরিয়ে এসেছিল সে বুড়ো। যে চেয়েছিল সব কিছুর নাম বদলে দিতে। ইতিহাসকে সে বদলে দিয়েছিল পৌরনীতিতে৷ তার গল্পে কবিরা হয়ে উঠেছিল সর্বনাশা জুডাস৷ রাজ্যের পর রাজ্য দখল করে নিয়েছিল তারা। হলদে পাখির গায়ে সে পরিয়েছিল কালাশনিকভের জামা। রোদকে সে ডাকত নমরুদ আর তার পৃথিবীতে যুদ্ধগুলো সব ছিল প্রার্থনা। ভাষার এই প্যাচে সে দেবদূতদেরও ফেলে দিয়েছিল বিভ্রান্তিতে৷ দুনিয়াজুড়ে স্থায়ী হতে শুরু করল নিপীড়কদের অত্যাচার। রাষ্ট্রের পর রাষ্ট্র আচ্ছাদিত হয়ে গেল বিষণ্ণ দেবদারু গাছে। হত্যা, যুদ্ধ, প্রতারণা, জিঘাংসা সবকিছুই লেখা…

Read More

মণিশংকর বিশ্বাসের কবিতাগুচ্ছ

    মুনমুন আপনার সঙ্গে আমার কখনও যৌনতা হয়নি হওয়া সম্ভবও ছিল না তবু আপনার সঙ্গে আমার যে কত যৌনস্মৃতি কত যে স্মৃতিকাতরতা! আপনার নামের ভিতর দু’ দু’বার ‘চাঁদ’ শব্দটা আছে সেটা আমি বুঝি ঠিক এভাবে: একটা ট্রেন টানেলের ভিতর ঢুকছে আর আলোয় ভরে উঠছে কামরার ভেতরটা তারপর ট্রেনটা যখন বাইরে বেরিয়ে আসছে বাইরেটা আবার আলোঝলমলে     দুঃখ ২ ইমতিয়াজ মাহমুদ ভাই লিখেছেন, “অসুখী মানুষ যখন ঘুমায় তখনও তার চেহারায় দুঃখ জেগে থাকে।” এটা পড়েই আমার মনে পড়ল, মৃত্যুর পরে বাবার মুখখানা— বাবা যেন হাসছেন! মানুষ মরে গেলে তাহলে…

Read More

দেবাঞ্জন দাসের কবিতাগুচ্ছ

  ঐ পথ জন্মের   ১. ঐ পথ জন্মের বলে বিকেল ছুঁয়ে অমল চিনেছে ওরা আলোর শিশুদের নাচে যখন মোরগ রঙ হল রক্ত হল মাংস থেকে ইমানের ছবি উঠেছিল আকাশে বলো, ভালো লাগছে না কাঁচের গুলিতে মিশে যাওয়া চোখ এই প্রসব দেখছে লাল হচ্ছে আঙুরের বিভ্রম…     ২. না থেমে চলেছে মাঠ এ’ভাবে সব ভালো থাকা ঝরে শীতে এগুলো সত্যি হবে ভেবে ডিম থেকে পাখিরা ফেরে পাখনায় রাত হয় বিপাশার মুখে চাঁদ ওঠে ঝড়ের স্বপ্নে এক দ্রুত ফড়িং দেখি যেন শেষ পাফের কাশিতে এই পৃথিবীর যত শব্দ জল-জঙ্গল-যুদ্ধের যত…

Read More

কৌশিক ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ

    সন্ধ্যায়, আনমনে   ১ হাওয়ার মর্মবেদনার গায়ে চুম্বনটুকুর রেখে আসে যে রেশ তারে তুমি বীজের সম্ভাবনা দিও প্রেম শিশিরের নিশিডাক শুনে যে জীবন ব্রাত্য রয়ে গেল তার হৃদকমলে তুমি ফুটে উঠবে সন্ধ্যামণি ফুল? এদিকে এ দেহে কৃষিকাজের সম্ভাবনা নেই বলে পাড়ায় পাড়ায় কী ভীষণ বদনাম রটে গেছে বদনখানি তার আলুথালু পড়ে থাকছে বস্ত্রহীনের ডেরায় চোখে একদিন ঘুঙুর বেজেছিল এই তার অপরাধ নিঃশ্বাসে একদিন নদী ডেকেছিল এই তার অপরাধ? আলোর আস্তানা দেখে মাটির ময়লা যে ঝেরে ফেলেনি তার খোঁপায় তুমি একদিন তারা হয়ে দুলো, দুলে উঠবে তো জোনাকি?  …

Read More

তন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ

    সময়জ্ঞান চোখ বুজলেই মৃত একটা শরীর। হাত বাড়িয়ে বলছে টেনে তোলার কথা। মৃত, অথচ দেখে মনে হয় ঘুমন্ত—এমন ভুলচুক দিন আমাদেরও কেটেছে অনেক। তালু থেকে ছিটকে পড়েছে জলের ঝাপট। সাড়া না-পেলে সন্দেহ গাঢ় হয়। কান গিয়ে হাজির হয় বুকের ওপর। যে শরীর মৃত, সে কি টেনে তুললে বসে থাকতে পারে? ভাবতে পারে, হাসপাতালের পথেই জীবের ক্রমমুক্তি? সাতপাঁচ ভেবে চোখ বুজে ফেলি। কেউ এসে হাত ধরে টানুক, আমি জানি, বসতে পারব ঠিক। বন্ধুরা পৌঁছয় ঠিকই, দেরি করে খুব—     সীমাবদ্ধ শুরুর খানিক পরই বোঝা যায়, এ কোনো নতুন…

Read More

ধৃতিরূপা দাসের কবিতাগুচ্ছ

লেখা বাছাই ধর্ গোটা শহরটার সরকারি নল খোলা। জল পড়ে এর বাড়ি ওর বাড়ি রাস্তা পার হচ্ছে আর একজলেই হাফ কাটা ফুল কাটা তর্জনী-মধ্যমার দুইটি পা ধুচ্ছে কেউ। ধর্ অসীমতমের পর ফের প্রথম বই-সাজের এই আয়ু! ফের বমির কফ ঘেঁটে ন্যাংটোকে শুশ্রূষার পর লালা ফেলবে হাঁ। বিস্মিত হওয়া ঠিক নয় তখন। যুক্তিহীন- তর্কহীন মন দিয়ে শোল মাছের রক্ত খুব ডলতে হয় শেখাচ্ছেন শস্যকে তক্খুনি গ্রস্ত-মা।   ততদিনে ততদিনে পায়ের পাতা মিশতে মিশতে কার মতো নয়? শনি ছোঁয়া প্রসাদ ঘরে নেওয়া বারণ, হেই দেবতা ছেড়ে যেতে দেওয়া কি ঠিক এখন তোকে?…

Read More

বাপি গাইনের কবিতাগুচ্ছ

বাপি গাইন-এর কবিতা ১ লোকটা সিলিং জুড়ে আয়না লাগিয়ে ছিলো বেডরুমে। বালিশ ছাড়াই তার অভ্যাস হয়ে গেছে এখন। ডাক্তারবাবুর বারণ। আরো অনেক বারণের মধ্যে একমাত্র বালিশটাই ছুঁড়ে ফেলা গেছে। বালিশ, নির্জন আসবাব, প্রতিবাদ পারেনি। না প্রতিবাদের ভেতর হু হু মেঘ, মেঘভর্তি তুলোবীজ, বৃষ্টিহীন তুলোবীজ …       ২ কীভাবে হৃদিকে বোঝাবো যতই বিষয় দিয়ে আড়াল করি পেট প্রিয়তম, সব নেশা ছুটে যায় ইহজন্মের। সন্ধের দিকে ঝুঁকে পড়া বাবাটির চোখে আজও একফালি ছাদ লেগে থাকে। আমি তার যোগ্যতর সন্তান, কবিতা লিখি। কতদিন লিখবো – বলতে পারিনি। অন্ধকার ঘনিষ্ঠ হলে বাবাকে…

Read More

সার্থক রায়চৌধুরী’র কবিতাগুচ্ছ

বসন্ত উৎসব আজ আকাশ রঙ করার দিন, হাওয়ায় নেশা মিশিয়ে দেবার দিন আজ, আজ পুরোনো পাতা পুড়িয়ে বর্ষার মেঘ তৈরি করার দিন, রাধাকান্ত আর গোপাল কে সিনেমার টিকিট কেটে দেবার দিন আজ, আজ তোমার গহন স্পন্দনে আতর ছড়ানোর দিন, পাগলের শরীর থেকে আজ ছেলেদের ঢেলে দেওয়া আলকাতরা সরানোর দিন, আজ গরম ভাতের থেকে মুছে দেওয়ার দিন সমস্ত রঙিন মস্করা।     নভেম্বরে আক্রমণ করো দেখি রক্ত বিভাবরী, আপাত কালো শূন্যময় আলোর ব্যাপারী দু’একটি নক্ষত্র রেখে সান্ধ্য পিলসুজে ভাবছ আলো ছড়িয়ে যাবে দুঃখ বুঝে বুঝে! তুমি তো হিংস্র প্রাণী, তুমি তো…

Read More

অভিষেক নন্দী’র কবিতাগুচ্ছ

    কালি দিয়ে আঁকা চাঁদ ১ এভাবে পিছু ডাকতে নেই শরীরের অনেক ভেতর ঘুমিয়ে থাকা সমস্ত রাখালের মাথা তোমার দিকে হেলে পড়ছে— যেন লোকাল ট্রেনের আশ্চর্য মায়া! চোখের টকটকে লাল দেখে, নিজমাংসে আয়োজিত পিকনিক ফেলে এসে অস্ত্রব্যবসায়ী, তার মূল্যবান সময় নষ্ট করবে গলির মোড়ে যেখানে দাঁড়িয়ে অস্বীকার করেছি প্রেমকে, আর ফেরার পথে আমারই শরীর থেকে ছায়া সরে এসে সে এক আস্ত পুরুষকে ভালোবেসেছে ঠিক তোমার মতো!   ২ ছুটে বেড়াচ্ছি এক ঘর থেকে অন্য ঘর দরজার সামনে নিজেকে উলঙ্গ দেখি এই বারান্দায় গোলগোল ভূতের বসবাস— কেবল শুনি, মুকুটের চূড়া…

Read More

বৈশাখী মিত্র’র কবিতাগুচ্ছ

হে হরিণশিশু ১. ক্ষিতিপদ্মাসনে তোমার চন্দনগন্ধ রেখে আগুন জ্বেলেছি সন্ধিপুজোর কমলের মতো ফুটে উঠেছে শরীর বৃষ্টিমাসের জলে কাদার আশ্লেষে ফুটে উঠেছে চারা আঙুল থেকে খুলে যাচ্ছে কুশাঙ্গুরি ! তোমার গ্রীবাভঙ্গির কাছে নত হয়ে বসি দু-একটা স্ফুলিঙ্গের আগুনে ফুটো হয়ে যাক গরদ স্তুতি করি মৃত্যুর, এসো     ২. তোমার মতো ঐন্দ্রজালিক দেখেছি স্বপ্নে শ্বেত মর্মরে বলিদানের রক্ত সে মুছে দিয়েছিল মন্ত্রে আকাশ থেকে কবুতর পেড়ে তার দম্ভের বুক শূন্য করে প্রজাপতি উড়িয়েছিল, হাততালি! তুমি মরুপ্রদেশে গমক্ষেত বুনেছো তন্ত্রীর মেদসুতোয় বাজিয়েছো ভৈরবী একশো শিখায় পুড়ে গেছে আমার নাভি   ৩. ঝুরো…

Read More

অনিতেশ চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

    নেহাতই কবিতাগুচ্ছ   ১ যে নক্ষত্র নিভছে, আমি তার সুড়ঙ্গের মুখে ওরা আতর মাখাচ্ছে চাদরের গায়ে। জয়দেব নদী বয়ে যাক, বয়ে বয়ে যাক, ও ছাতিম গন্ধে প্লাবিত দৃষ্টি কে নেবে? কত সুর, মন্ত্রগুপ্তি আমি লিখে গেছি সব, স্বরে ভুল নেই ঘুঙুর বেঁধে কে নামল মাটিতে! থামো, এই তাল এই লয়, জন্ম, উপত্যকা, আমাদের। এর সব কথা জেনে গেলে না-হওয়া বাসায় রোদ খেলবে না যে মাদুর ভিজছে, আমি তার ভিতরে গোটানো ওরা গুছিয়ে নিয়েছে সব– নাম, বাস্তু, যতি– জ্বরে জল আসে অঙ্গে, নক্ষত্র সাক্ষী, অসহ্য বিস্ময়ে ছটফট করতে করতে…

Read More

সৈকত সরকারের কবিতাগুচ্ছ

দক্ষিণের পিঞ্জরা ১. আরেকটু কথা বললেই কথা ফুরিয়ে যাবে যেমন বই ফুরিয়ে গেলে বন্ধ থাকে বইয়ের দোকান। আরেকটু গাছ চিনলেই, থাকবে না আগ্রহের খেলা, তোমাকে লাট্টু হাতে ধরিয়ে দিয়ে কেড়ে নিয়েছে সুতো, ঘোরানোর। যদিও কক্ষপথ থাকে আর ঘুরপাক খাওয়া তোষামোদ তোমাকে প্রদক্ষিণ করে যায় প্রতিবারের মতো…   ২. সন্ধির সমস্ত শর্ত মেনে নিয়ে টুংটাং শৈশব বাজায় ছেলেটা; হাতে কোনো বাঁশি নেই, কপালে নেই লটারি-প্রকোপ; আমার ভারাক্রান্ত মধ্যাহ্নে ভোরের চিঠি ফেরি করে তার মায়া ; আমি দেখছি দড়ি বেয়ে হেঁটে যাচ্ছে ছেলেটির মা, দুহাত প্রশস্ত পাশে, দুলে উঠছে দুপায়ে ছোবল; সন্ধির…

Read More

বর্ণালী দত্ত’র কবিতাগুচ্ছ

  ১. যেখানে পথ নেই   মৃত্যুর পথে যেতে ভয় পাই। তীব্র মাথা যন্ত্রণার ভিতর তোমাকে মনে করা আরও ভয়ানক। রেল লাইন পার করলেই তোমার বাড়ি পৌঁছানো যাবে, তারপর একটা ছোট ডোবা, তারপর তুমি। শান্তির জন্য তোমার বাড়ি পৌঁছে যেতে চাই বারবার কিন্তু ডোবা পার করতে পারিনা। আমার অনির্দিষ্ট বাড়িতে কোনো সচল জীব আসেনা যখন থেকে বড় হলাম। তুমি অবধি পৌঁছানো বেঁচে থাকার চেয়েও জটিল ভাবলে আশ্চর্য হই।     ২. তুমি একটি অবলুপ্তির মত   একতলা বাড়ির মাথা ভেঙে যাওয়ায় যে অপমান লেগে থাকে, সেখানে মার্কেজ আমি লুকিয়ে রাখি…

Read More

সুমন সাধু’র কবিতাগুচ্ছ

১ বিষাদ ভুলিয়ে দিচ্ছেন জীবন যেন তাকের আড়ালে রাখা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ধুলো ঝেড়ে নাম লেখাচ্ছে হিজড়েদের দলে আর পাড়ায় জমছে অশান্তিতুতো হ্যান্ডসামরা যেদিকে তাকাই শুধু ধূ-ধূ শরীর যত্নআত্তি না পেয়ে ক্রমশ শরীর শুকোচ্ছে মন রয়ে যাচ্ছে মনে দ্রুত ব্যস্ততায় হাতে সময় থাকছে না মানুষ মানুষকে ভালোবাসছে না আর         ২ বর্ণময় অতীতের কাছে ফেলে আসছি ঘুম জীবদ্দশায় আর কোনো অশান্তি থাকছে না তোমার স্পর্ধার গায়ে এঁকে দিচ্ছি কালচিহ্ন অকস্মাৎ শরীরে ক্ষয় হৃদয়ে জলজ ডানার আর্তি এ নশ্বর দেহ তোমায় উৎসর্গ করে যাব হে ক্ষণকাল, হে পরাগমিলন      …

Read More

হিন্দোল ভট্টাচার্য’র কবিতাগুচ্ছ

  অস্ত্র   যেখানে দাঁড়াই, দেখি, মূর্তিগুলো ভাঙা, পড়ে আছে যুদ্ধে মৃত সৈনিকের রক্তমাখা শরীর যেমন। চকচকে ধারালো অস্ত্র দিনে দিনে মরচে পড়ে যায়। প্রতিটি মূর্তির কিছু কথা আছে, জানেন ভাস্কর। প্রতিটি অস্ত্রের থাকে বেদনা, বিষাদ। ক্ষতস্থান থেকে শুধু রক্ত পড়ে। রক্ত, প্রাণ নয়। ভাস্কর জানেন, তিনি কার মূর্তি গড়তে গিয়ে কাকে গড়ে তুলেছেন একা। যুদ্ধক্ষেত্র জুড়ে পড়ে থাকে তার ক্ষয়।     অভিশাপ   যে বিষাক্ত হয়ে আছি, এই বিষ তোমাদের দেওয়া। আমার ওষুধ নেই, অপমান আছে। মনে হয় এ কথাটি বলেছি আগেও; মনে হয় খোকা খোকা মুখ করে…

Read More

অনুপম পোল্লে’র কবিতাগুচ্ছ

    শূন্য ক্ষতস্থান   প্যাঁচার নির্জনতা বাড়ায় যে নক্ষত্র তাকে আমি ছেড়ে এসেছি- জ্যোৎস্নায় আধো ডোবা অবৈধ মৃত্যুর লোভে ভালোবেসেছি বিষণ্ন রাতের জবানবন্দী জুড়ে ছেঁকে ওড়া জোনাকির মতো ফুটে থাকা তোমার গন্ধরাজ, শৈশবের রঙীন নদী যত; হারানো বাড়ি-চিঠি-স্নেহ ফিরিয়ে আনে সমুদ্র বারবার তোমাকে কীভাবে ভোলে শূন্য ক্ষতস্থান তোমাকে কীভাবে ভোলে কবিতা আমার! শৃগাল ক্ষুধার্ত হলে রাত্রি বেড়িয়ে পড়ে সম্ভোগ শিকারে; হুহু মেঘ-চোখে, তুমি আড়াল হয়েছো দীর্ঘ শ্রাবণের ভারে যেন উড়ন্ত চিলের আদলে ছেড়ে যাচ্ছ প্রতি পিছুটান যেন পিছু নাও অন্তহীন মর্মরের যা স্বপ্নকে ঘর বলে মানে আর হাওয়ায় হারিয়ে…

Read More

আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

পার্শ্ব চরিত্র   ১ পিছিয়ে রয়েছে ভাষা অনিবার্য প্রজন্মের ফাঁক যে লোকটি তুলে আনে বিতর্কিত এই শব্দ কপালে রেখেছি তার চুম্বন পুরোনো প্রয়োগে সতত পিছনে হাঁটা প্রতিদিন চাল ডাল কেনা উত্তরের গাড়ি ধরা বিজ্ঞানও সেসব জানে না জানে না অফিস গেলে দু’বাক্স সিগারেট রোজ কীভাবে ফুরিয়ে যায় ভদ্রতার খাতির বশত ২ বয়স তিরিশ ছোঁবে, বাবা-মা’র ষাটের স্তবক সামান্য ঘুমের শব্দে হেরফের কানে আসে যদি শরীরে রক্তের স্রোত জল হবে কেননা সময় বড় বেয়াদপ তাকে বাঁচিয়ে খারাপ কবিতায় পুষেছি বেআব্রুভাবে তুমি তার সাক্ষী হও যদি দুবেলা ভাতের পরে চাইব না নরম…

Read More

অর্পিতা কুণ্ডু-এর কবিতাগুচ্ছ

বিকল্প ১ নিজেকে দেখার চেয়ে বড় খেলা পৃথিবীতে নেই আমি কী কী পারি আর কতটা পারি না কতটা ক্ষমতা আর কীভাবে বৃত্তের শেষে পরিধি পেরোই, কীভাবে জলের পাশে বেজে ওঠে ড্রাম, বিউগল স্তব্ধতার বুক চিরে কীভাবে ছিটকে ওঠে কান্নার ফোয়ারা, তাই দেখি, তাই দেখি, সেভাবেই খেলা জমে ওঠে… ২ ছিঁড়ি ছিঁড়ি ভাব করি, ধুয়ো তুলি এই ছিঁড়লাম ধাবিত রক্তের পাশে ফেলে রাখি মরচে-ধরা ব্লেড মাথার ভেতর খুঁজি গলি-ঘুঁজি, পর্দা তুলে নামি পরবর্তী পর্দা খুলে যায়, মজার খেলা রে ভাই, হাওয়ার রেখায় আর কালের রেখায় আলো সরে সরে যেতে থাকে, নিভে…

Read More