বাপি গাইন

বাপি গাইনের কবিতাগুচ্ছ

শীতের সন্তাপগুচ্ছ

১.
খুব যত্নে এলোমেলো হয়ে আছে
অন্য কারও বাঁশি
এই অন্ধকার চর্চা
দু এক মুহূর্তের হাওয়া ছাড়া কেউ না
এই পরমার্থ মেঘের দেশে
এসেছি ভ্রমণ হেতু
দু একটি সাড়াশব্দ শেষে কারও নির্জনে ঝরে যাব
হৃদয়ের প্রান্তিকে পথ হবে অন্য কারও সংসার সমগ্র
যেভাবে পায়ের চিহ্ন চলে যায়
ঠোঁট যাবে, আয়ু যাবে
মেঘ থেকে নিভে যাবে মেঘের সূচনা সম্মতি।

 

২.

শীতের প্রভাব কমে এসেছে এখন বাইরের পৃথিবীতে
রোদ এসেছে আর ঘরের বাইরে বেরোতে শুরু করেছে যারা মানুষ অথচ ভীষণ রকম পাখি

টিন আর কাঠের এই স্বেচ্ছা নির্বাসন আমাকে অসামাজিক করে রেখেছে বহুদিন হলো
যদিও এই জেলখানা, মাথার ভেতর উন্মাদ এই জেলখানা

আমি ছেড়ে যেতে চাইনা কখনও

এক একটা ঋতু আসে প্রণয়ের ঋতু আসে
গান হয় গান শেষ হয় একসময়

অথচ নিজস্ব জেলখানার মেয়াদ শেষ হয় না কখনও

 

৩.

এই পরিমিত মদ ও আকন্ঠ শরীর
সারাদিন বিছানায় উল্টে থাকে
ভাঁজ শুধু, হৃদয়ের মধ্যবর্তী ভাঁজ
ভুলে গিয়ে
ওঠানামা জলের ভেতর
বুঝি এক দ্রোহকাল
এই ভেসে যাওয়া
আর সাঁতার শেষে বালির ওপর ঘুমোতে যাওয়া
শিশুর আকৃতি
ভেঙে গেলে
যে নারী
বালি ঝেড়ে আবার শান্ত করবে জন্মমাত্র লোহা
আর মৃদু মৃদু থাপ্পড় দেবে পিঠে ও অভাবে
যে স্বল্পায়ু ঘুম
যে মাতৃগর্ভ
যে গর্ভমুক্তি
রান্নাঘর আর বাজার
আর স্নেহলুন্ঠিত সন্ধ্যের অপেক্ষায়
একমাত্র দৃশ্যমান হয়ে ওঠে
এই বীজ, এই পৌরুষ
তার করুণা মাত্র ভূমি
পৃথিবীবিদ্ধ যন্ত্রণা।

 

৪.
শরীরের খেলনা ভেঙে কেঁদে উঠছে অবুঝ শিশু
বাইরে অপ্রকৃতিস্থ জল বাইরে যে যার নিজেই রুমাল
ঢেউ দিচ্ছে আর এই দুহাত কেবলমাত্র পরিত্রাণ নয়
যা ছিলো অথৈ সাদাপৃষ্ঠার নীচে
যা ছিলো সকল মেঘের পিছনে একটি স্পর্শ অন্ধের।

তবুতো খেলনা মাত্র, অস্হির কোনো অসুখের
নীচে আটকে যাওয়া ফড়িংয়ের আয়ু
কোথাও যাবেনা তবু মিথ্যে এই আগুনের ছটফট।

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment