কবিতা (১) বিরতিতে নিজেকে গুটিয়ে নেয় ঘোলা জলের জিওল, অল্প অক্সিজেন মেনে নেয়। ফিরনি স্কিনে মোলায়েম রাখে রোখ,নোনা পানি। পিতল ইজ্জত আর জোড়া বুকে সেজে ওঠে অবুঝমারের ঈশ্বর আবিষ্কার করা মেয়ে। সঠিক পরিমাপে জান আর থোপা জলে ধরা নরম কছুয়া… এই তো হেঁসেল। বেলেল্লার প্যাস্টেল শেডের মুড, জরিবুটি, চামচে গুলি নয় কলিজা ব্যালান্স। তা হোক। বেসিনে যারা পুরুষাঙ্গ ধোয় তারাও তো অলৌকিক ঘটনার পরে পারলৌকিক চিতল কিনতে ভালোবাসে। (২) বিজ্ঞাপনদাতা আয়োজিত অনুষ্ঠান এইমাত্র শেষ হোলো, শূন্য মেগাহার্টজ-এ আপনারা শুনবেন নৈঃশব্দ্য। মৃত মানুষের স্বপ্ন দেখতে ভিখারীকে বারণ করেছে অঘোরী।…
Read MoreDay: April 26, 2024
উত্তরাধিকার
জানুয়ারির শেষ বিকেল। সূর্য ডুববে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই। গত কয়েকদিনে বেশ গরম পড়েছে এই অঞ্চলে। হলদেটে ঘাসের রঙে যেন আরও বেশি আগুনের পরত। মেলুলি সাবি নদীর চড়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। তার পাশে তার জ্যেষ্ঠ সৎভাই জেঞ্জো। দুই সৎভাইয়ের মধ্যে মেলুলি একবছরের বড়ো। জেঞ্জোকে বলা যায় তার রাইট-ইন কমান্ড। তাদের সংগঠনে এবং এলাকায় মেলুলির পরেই জেঞ্জোর অঘোষিত স্থান। তবে, সেইসব দিন আর নেই। সাবি নদীর গায়ে যেটুকু অল্প জল রয়েছে, সেখানে অস্তগামী সূর্যের ছায়া পড়েছে। মেলুলি সেদিকে তাকিয়ে ছিল। একঝাঁক পোকা তার চোখে-নাকে উড়ে বেড়াচ্ছে, সে বারবার মাথা নাড়িয়ে তাদের সরানোর…
Read Moreনিউটন – ১৩
মানসিক বিপর্যয় কাল ও টাকশালের ওয়ার্ডেন পদ-প্রাপ্তি ১৬৯৬-এ পাকাপাকি ভাবে কেমব্রিজ ছাড়েন নিউটন। বসবাস শুরু করেন লন্ডনে। কিন্তু কেমব্রিজ ছেড়ে যাওয়ার আগে, ১৬৯০-এর দশকের প্রথম কয়েক বছর ছিল তাঁর জীবনের বৌদ্ধিক চর্চার চূড়ান্ত অধ্যায়। এমন নিমগ্নতা, এমন আলোর ঝলকানি, এমন আত্মবিস্মৃতি, আবার গভীর অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া আগে কখনো ঘটেনি। আর কখনো ঘটবেও না পরবর্তী জীবনকালে। পার্লামেন্টে সদস্য পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, দ্বিতীয়বারের জন্য ১৬৯০-এ যখন নতুন করে উইলিয়াম ও মেরির পার্লামেন্ট গঠন করা হচ্ছে, তাতে সদস্য হতে চাইলেন না নিউটন। পার্লামেন্ট-কক্ষের অন্দরে তেরো মাসের যে অভিজ্ঞতা তা উল্লেখযোগ্য…
Read Moreজিৎ পালের কবিতাগুচ্ছ
তোমার একান্ত পথে, একা ৬. পথ শেষ হবে না জেনেও এই এই পথ চলা তোমার উদ্দেশ্যে চলা… এমন বিরোধাভাস তোমার সমীপে যাওয়া হবে না কখনও ক্রমশ ফুরিয়ে যায় জীবনের আয়ুরোদ… তাপ মধ্যাহ্ন সায়াহ্নে ঢলে… সকলের… অমোঘ নিশ্চিত সম্মুখে দুরপনেয় পথ… অগম্য সংকেত… অন্ধকার জীবনের… আমাদের… ব্যবহারহীন এই প্রাণ অজ্ঞেয় অবোধ্য ক্রমচলমান প্রাণ… একে একে মুছে যাবে পথ শেষ হবার আগেই… মুছে যায় ব্যবহারবিধি তার জানাই হবে না ৭. হোঁচট খেয়েছি পথে তোমার হোঁচট ভরা পথ বন্ধুর গোলোকধাঁধা… অবিচল… অন্ধকার… ঘন আমার অন্ধত্ব ছিল উপলব্ধিহীন এতকাল তোমার হোঁচট দিয়ে বুঝিয়েছ… এভাবে…
Read Moreঅরূপ গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ
যৌনতার দিকে দুপাশে মাধবীলতার ঝুঁকে পড়া ভারের ভেতরে মানুষটা হেঁটে যাওয়া একাকী নির্জন রাস্তা, কাঁকরমেশানো, নম্র বুকের ওপর দিয়ে হেঁটে যায় মেঘ, ময়ূরীর পেখম- উচ্ছ্বাস, আবেশে এলানো, ভিজে রাস্তা ক্রমশ ঘন হয় আসে— দ্রুত চেপে ধরে, ফর্সা ও গোলাপী পায়ের রূপোলি নুপুর উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়ে ময়ূরী শরীর— লজ্জায় কেটে ফেলে জিভ চারপাশে পাতাদের ওড়াউড়ি মুছে দেয় চলমান পদরেখাগুলি অন্য পৃথিবীর কথা কবেকার বাঁধা গানগুলি ফাটছে হাওয়ায়; পাঁজরে পাঁজরে ভালবাসা খসে পড়ছে, শূন্যে জ্বলছে পুরাণ-পাখির ডানা সাপেরা মেতেছে উৎসবে, অতিশকুনেরা লুব্ধ চাটে গোটা পানশালা বড়োরা কিছুটা জানে, শিশুরা জানে…
Read Moreসংযম পালের কবিতাগুচ্ছ
পুঞ্জ ১. খুব ছোট রসের পাহাড়ে চড়লাম। পড়ে গিয়ে হাড় গুঁড়ো হল। ওঠার সময়ে বেশ যথাসাধ্য মনে হয়েছিল। উঠে গেলে পাথর আলগা লেগে গেল। দুটো হাড় ভেঙেছে, অনেক দাঁত খুঁজে এখনো পাইনি। ছেঁড়া মাংস দিয়ে এইবার বড় শক্ত পাহাড় বানাব। ২. কেউ কাটবে, ভুল ধরিয়ে দেবে। কেউ লালে মুখ চুবিয়ে দেবে। এত জীবিতের মধ্যে আমার ভূতের ভাবনিধি বিরক্তিই টেনে আনবে। অতীত ও ভবিষ্যৎ জীবিতের দ্যাখার কথা না। পুজো আর প্রেমের গীতিকাগুলো অন্ধের হাসির মতো। জীবিতের ওটাই প্রলাপ। ৩. বলব না ভেবে কথা অনেক বলেছি। বলে ফেলা ঝোঁকটা কবিতা। জীবিত থাকার…
Read Moreনেকলেস
রাতে নার্সিং হোম থেকে ফিরে বাথরুমের বিরাট আয়নাটার সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে আস্তে আস্তে তার ক্লান্তিটা কেটে যায়। তখন ও নিজের চেহারাটার ওপর খুব তীক্ষ্ণ একটা পর্যবেক্ষণ চালায়। সে আর পাঁচটা সুন্দরী মেয়েদের মত রূপবতী হয়ত নয় কিন্তু তার চেহারার মাপজোক এমনই অসামান্য যে পথফিরতি পুরুষদের চোরা নজর সে সবসময় আকর্ষণ করে। তবু যত দিন যায় তত যেন আয়নাটাকে সে কখনও কখনও এড়িয়ে যেতে পারলে বাঁচে। প্রতিদিন যারা অত্যন্ত যত্ন নিয়ে নিজেদের চেহারার দিকে তাকায় ছোটখাট পরিবর্তন কিছুতেই তাদের নজর এড়ায় না। সে যেমন কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছে তার…
Read Moreঅপেক্ষা
অপেক্ষা হর্হে লুই বোর্হেস অনুবাদ : গৌতম সেনগুপ্ত অনুবাদকের কথা : [ ১৯৪৯ এ দি আলেফ বলে বোর্হেসের গল্প গ্রন্থের লা এস্পারা গল্পটি এন্দ্ড্র ু হার্লি ইংরিজিতে অনুবাদ করেন দ্য ওয়েটমে ।এটা তারই তরজমা । বোর্হেসের জন্ম ২৪ অগাস্ট ১৮৯৯ বুয়েন্স এয়ার্সে ,মৃত্যু জুন ১৪ ১৯৮৬ ভিয়েনায় । ছোটবেলা থেকেই চোখের সমস্যা ,শেষ জীবনে প্রায় অন্ধ হয়ে যান ।গল্প ছাড়াও লিখেছেন অজস্র কবিতা, প্রবন্ধ ।অনুবাদ করেছেন একাধিক ধ্রুপদী সাহিত্যের । আর্জেন্টিনার লোক হলেও বোর্হেসের লেখার সঙ্গে ল্যাটিন আমেরিকান ঘরানার কোনও মিল নেই । প্রায় সবসময়ই তাঁর লেখার বিষয় বই ,পুরনো বই…
Read Moreপিয়াস মজিদের কবিতাগুচ্ছ
অলীক সব পেয়ে গেছ তবু আমার স্তব্ধতা তো পাও নি! এত এত চোখের ধু ধু, ভরা পেটে ভয় ধরিয়ে দেয় না? রাস্তায় হঠাৎ হরিধ্বনি , রিকশার পাশ ঘেঁষে চলে যায় নতুন কফিনবাহী পুরানা গাড়ি। নিশ্চয়ই নিশ্চই, কবরের শান্তিতে ছেয়ে যাবে জিন্দা লাশের চরাচর! যেতে যেতে এই রাস্তা কতটা ট্রেন্ডি, দেখা যাক আজ। স্মৃতির শাহেনশাহিতে বিস্মৃতিরও আছে অধিকার। দুনিয়ার দূর কোনও ক্যাফেতে আমার কথা মনে করে কে আর ০১ কাপ কফি বেশি ঢালে,বলো! পলকা কানে ভারী বোধ হয় কি কোনও আর বিকট আতশ? খাঁ খাঁ এহেন সন্ধ্যায় এমন হেরে যাওয়া শহরের…
Read Moreপ্রস্ফুটিত দুপুর
প্রবাসের অন্যতম অপেক্ষক স্বজনহীনতা। প্রবাসের দূরত্ব ও প্রকৃতিভেদে এই স্বজনের সংজ্ঞাও বদলে যায়, তার জড়তা ও প্রাত্যহিকতা একে অপরকে নেগেট করতে থাকে অহরহ। এ যেন তারকোভস্কির Stalker (১৯৭৯)-এর এক বিশ্বপ্রিয় স্টিল, পরিত্যক্ত দালানে মরুভূমির মত বালিয়াড়ি জমে রয়েছে, ইতস্তত দাঁড়িয়ে রয়েছে বিয়োগান্ত দাবার ছকের মত গোটাতিনেক গুটিমানুষ। দুজন খুব কাছাকাছি, চোখ থেকে দূরে, দরজার কাছে। একজন দৃষ্টিসীমার মধ্যেই। তিনজনের শামুকসদৃশ রসায়ন পুরো ছবির গতিকেই মরুভূমির মত মন্থর করে রাখছে। তাদের স্বজনহীনতার মন্তাজ-ই তাদের স্বজন হয়ে উঠবার ব্লু-প্রিন্ট রচনা করছে বারবার, আবহ জুড়ে। তাই তারকোভস্কির ছবির বৈশিষ্ট্য তার স্লথতায় নয়, বরং…
Read Moreবাপি গাইনের কবিতাগুচ্ছ
শীতের সন্তাপগুচ্ছ ১. খুব যত্নে এলোমেলো হয়ে আছে অন্য কারও বাঁশি এই অন্ধকার চর্চা দু এক মুহূর্তের হাওয়া ছাড়া কেউ না এই পরমার্থ মেঘের দেশে এসেছি ভ্রমণ হেতু দু একটি সাড়াশব্দ শেষে কারও নির্জনে ঝরে যাব হৃদয়ের প্রান্তিকে পথ হবে অন্য কারও সংসার সমগ্র যেভাবে পায়ের চিহ্ন চলে যায় ঠোঁট যাবে, আয়ু যাবে মেঘ থেকে নিভে যাবে মেঘের সূচনা সম্মতি। ২. শীতের প্রভাব কমে এসেছে এখন বাইরের পৃথিবীতে রোদ এসেছে আর ঘরের বাইরে বেরোতে শুরু করেছে যারা মানুষ অথচ ভীষণ রকম পাখি টিন আর কাঠের এই স্বেচ্ছা নির্বাসন আমাকে…
Read Moreউজান-এর কবিতাগুচ্ছ
মরে গেছি তবু ১. রাষ্ট্র তোমায় দেবতা ছাড়া দেয়নি কিছু। নীচু তাই বুকের থেকে অনেক নীচু পেটের কাছে- সেই ভগবান ভাতের মতো দাঁড়িয়ে আছে। ২. শব গুনতে ভুল করেছি, গুনেছি কেবল কার্তুজ; আত্মহত্যাকে কবির বিষাদ ভেবে গিয়েছি স্নানে নদী খুঁজি – সে তো গেছে শব গুনতে, ক্ষেতের মাঝখানে। ৩. দুর্ঘটনা একলা ঘটে। আমরা যারা চারপাশে তার হঠাৎ জুটি, তারা জানি সুরক্ষিত রাগ বিদ্বেষ হাল্কা কত, হৃদয় কেমন শয্যাশায়ী ; ভোর হলে তো সেই দেখা যায় অক্ষত মুখ, মুখোশ পরে রাষ্ট্র জাগে চিরস্থায়ী। ৪ রাষ্ট্র কেন নিয়ম দিল,…
Read Moreসব্যসাচী মজুমদারের কবিতাগুচ্ছ
কতটা সিগাল তুমি কতটা সিগাল তুমি ,সে জানে আমার গুল্ম … গুল্ম বলতে মেঘ বুঝো ,বুঝো তার কবীরের হাড় যেন পড়ে আছে মাঠে… মাঠে কত ভোরের মনসা ! মনসা মানেই গাছ … সিঁদুরের ফলা এ ধার ও ধার … পরনে কয়েক রতি সহজ পাথর পাথরের নীচে গ্রাম,বিশ্ব সাহিত্যের টুকর টুকর… — এ তুমি পড় হে, তুমি, কমলা লেবুটি , বুঝো পাহাড়ের ওপাশে পাহাড় পাখি নেমে আসে যেন জীবনে লেখেনি কেউ তাকে … কাকচক্ষু কাকচক্ষু ফুটে আছে অপর্যাপ্ত ফসলের ক্ষেতে ঘটল মানুষের শক্তি মানুষের অপরাধ বৃত্তি ঘটেছে অপরিসীম চিন্তা-ভাবনাময় মনোবল…
Read More