খুকি ও তার ভূতেরা

‘খুকু’ দেবারতি মিত্রের ডাকনাম। এ-তথ্য জানা গিয়েছে তাঁর ছোটবোন দেবার্চনা সরকারের সঙ্গে কথাবার্তায়। নিজের দিদির সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে দেবার্চনা জানাচ্ছেন: “…ওর ডাকনাম খুকু, তা কিন্তু শুধু বাবা-মায়ের কাছে নয়, বিশ্বজগতের কাছেও তাই। আমিও ওকে খুকু-ই বলি। আমাদের ভাইজিরাও এমনকী ওকে খুকু বলে। আজকের মানুষেরা নিজেকে প্রোজেক্ট করতে চায়, ও ঠিক উলটো।” ছোটবেলা থেকেই, থমকে যাওয়া, আত্মবিশ্বাসহীন, রক্তমাংসের দেবারতিকে এই কথাবার্তায় দেবার্চনা যে নৈর্ব্যক্তিকতার সঙ্গে উপস্থাপনা করেছেন, দেবারতির কবিতা পর্যালোচনার ক্ষেত্রে তা অপরিহার্য সহায়ক হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে। যদিও আপাতত এই নিবন্ধের মুখপাতে দেবারতির ডাকনাম সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে যাওয়ার উদ্দেশ্য একটাই।…

Read More

রাজদীপ রায়ের কবিতাগুচ্ছ

নীরব বেহাগ১মৃত্যু নিয়ে আদিখ্যেতা করা, এসব মানুষের স্বভাবহাসিমুখে কাউকে বিদায় জানানো—তারপর তার কথা ভেবে সহজে চোখের জল ফেলা…এসব স্ববিরোধ নিয়েই তো বেঁচে থাকাজনরুচি মেনে লেখা কবিতার মতোযার কয়েক পঙক্তি পড়েই তুমিথুতু ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিলে—ছ্যা ছ্যা আত্মহননের দিন শেষ হয়ে এল তাড়াতাড়িএবার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবেতার আগে প্রস্তুতির পর প্রস্তুতিদৃশ্য আবছা হয়ে আসে দূরের গেরুয়া রং দেখে ঠিকবোঝা যায় না তেমন, সূর্যোদয় না কিসূর্যাস্তের ভাষা ছড়িয়ে পড়েছে…তুমি হাঁটু মুড়ে প্রার্থনায় বোসো—জন্মদিন লুকিয়ে ফেলাসব থেকে প্রশ্নাতীত কাজ…   ২ওই পথ ছেড়ে এই পথে এসোএই পথ ছেড়ে ওই পথে চলে যাও—তেমন সমস্যা…

Read More

কারুকর্মীর নিরন্ধ্র বলয়

১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে আঠারো বছর বয়সে দস্তয়েভস্কি তাঁর ভাইকে লিখেছিলেন: “Man is a mystery: if you spend your entire life trying to puzzle it out,then do not say that you have wasted your time. I occupy myself with this mystery, because I want to be a man.” সেই কারণে তাঁকে অনেকেই মনস্তত্ত্বিক কথাকার বললেও তিনি নিজেকে রিয়েলেস্টিক বলতে চেয়েছেন। তাই বলে কি তাঁর লেখায় মনস্তাত্ত্বিক উপাদান নেই? ঠিক এই কথা লেখবার তিরানব্বই বছর পরে অপমানে ক্ষরিত হতে হতে এক মৃত্যুর যাযাবর লিখে রাখছিলেন তাঁর গোপন খাতায় একটি উপন্যাসের অবয়ব। মানুষ দেখেছেন…

Read More

চর্যাপদ: প্রথম পা ফেলা বাংলা কবিতা

চর্যাপদ বাংলাভাষার সেই অভিজ্ঞান, যা গোপনে একটি নিজস্ব পরিসর গড়ে তুলে সৃষ্টি করেছিলো বাংলা কবিতার ভুবন নিজেরই অজান্তে। অজান্তে এই কারণে যে, যে বৌদ্ধ-তন্ত্র কায়াবাদী সাধকেরা এই পদগুলির নির্মাতা, তারা কিন্তু সচেতনভাবে কবিতা লিখতে চাননি, তারা চেয়েছিলেন তাদের প্রান্তিক ধর্মকে ব্রাহ্মণ্য-ধর্মের ঘেরাটোপ থেকে বাঁচিয়ে সুরক্ষিত করতে। কিন্তু এই কাজ তো সহজ নয়। তাহলে উপায়? উপায় গড়ে দিলো এমন এক নব্যআবিষ্কৃত ভাষা যার সঙ্গে সমাজে মূলস্রোতে বসবাসকারী মানুষদের তেমন সংস্পর্শ তৈরি হয়নি। লোকে বলতো প্রাকৃতজনের ভাষা। উচ্চবর্ণের মানুষের যে ভাষার প্রতি ছিলো ভীষণ উপেক্ষা। পাল-সেনযুগের রাজাদের ক্রূরচক্ষু এড়িয়ে এইসমস্ত সিদ্ধাচার্যদের ওই…

Read More