সেবন্তী ঘোষ-এর কবিতাগুচ্ছ

পাহাড় বিষয়ে আমি যা জানি বৃষ্টি বৃষ্টি বড়ো চেনাশোনা এখানে যে কোন সময় পথ হয়ে ওঠে ঝোরা আবার বাক ঘুরলেই কোথায় কী? কম্বলের মতো মেঘের দল ভিজিয়ে দেয় লাল টুকটুকে নাকের ডগা মেয়েটির ছাতার নিচে মিহি জল ঝরে হেয়ার পিনে মসৃন গিয়ার টানতে টানতে ফাটা জিন্সের প্রেমিক সংগীতের ধুনে ইশারা দিয়ে যায়- বৃষ্টির দল ওকে ঘিরে নামে পর্দার মতো সম্ভ্রান্ত ইয়াকের দুধের ছুরপি আর মোমোর ভাপ নিতে নিতে টিনের ছাদের ওপর যেই সুর তোলে জল গিটার ধরবে বলে মগ্ন যুগল, শেষ ট্রিপ ছেড়ে চলে যায় বাঁধ ফড়িং জানে ওই শ্যাওলা…

Read More

পঙ্কজ চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

সান্ধ্যভাষার জলস্রোত ১. বৃথা মানুষের সঙ্গে দিন কাটে । কতদিন তার সাথে দেখা হল জলে ও জঙ্গলে, আশ্চর্য লাইব্রেরির মাথায়। আজ সে একা হাতে বাজার করে। সবুজে সবুজ হয়ে ঘরে ফেরে মাংসময়। রবিবার। রবিবার নয় এমন দিনে ওই তার উচ্চকিত ফেরা… ২. গান জানো। তবে শোনাও। শ্রোতার চোখ যেন দেখতে পায় দুপুরের জোনাকি। যেন মনে হয় মরু শহরের উটের মালিকের বিষণ্ণতা জলীয় বিষয়। অচেনা হাত এইমাত্র ছুঁয়ে এল কাঁথাবোনা সুর। আমি শীতাতপ গানের মালিক। আমি শ্রোতার চোখ ঘুরিয়ে দিতে পারি ভাঙাচোরা জনতার দিকে ৩. বার্ধক্যভাতার মতো নেমে আসছে বারোয়ারি সিঁড়ি।…

Read More

শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

খসড়া সঙ্গীত ৭. দেবদূত বৃষ্টি মানে আচমকা বাবার সঙ্গে এসে পড়া ধাঙড় বস্তি কাটা-ফুল-ফ্যাকাশে সকালে পাঁকাল খাদ থেকে কিছু তোলা যায় না শুধু একঝাঁক ছাই-ছবিঃ চোখের উপর স্রোত কেননা তারা সকলেই ক্ষণস্থায়ী ধাঙড়ের দীর্ঘ মদ্যপান তাড়িত সকাল বাবার বুঝতে চাওয়া সামাজিক সমস্যা আমি শুধু টের পাই গতকালের সান্ধ্য ফুলের মধ্যে বন্দি বৃষ্টি বাতাস আমি শুধু বুঝতে পারি আমার চামড়ার রং সেই মাটির মত যে সব লুকিয়ে রাখতে জানে পিঁপড়ের রাসায়নিক ভাষায় আমার পালাতে চাওয়া বারবার কোনও কিশোরীর অকারণ হাসির দমবন্ধ পাঁজর   ৮. ক. সমস্ত বেরিয়ে পড়া আস্ত একটা শীতের…

Read More

নির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

ছায়াহরিণের বন  ১. মাঠ ভেঙে জল ভেঙে পুরোনো সঞ্চয় ভেঙে এতটা এসেছ এবার জিরোও তবে, স্নান সেরে এসো নধর ফুলের মাংস নিভু আঁচে উনুনে বসিয়ে নিজের ছায়ার সঙ্গে জুয়া খেলো কিছুক্ষণ বিড়ি টানো, কাশো ছায়াহরিণের বনে অস্ত্র হাতে কখনো যেয়ো না হোক না বেসুরো, গান ধরো শরীরে লুকোনো আলো দিয়ে রাত্রির ঠোঁটের ধার ছেঁটে দাও যত্নসহকারে   ২. নিপুণ সেলাই থেকে, কেকা থেকে কী কৌশলে নিজেকেই সরিয়ে নিয়েছ যেন দরজা ছিল, আর নেই আঘাতের বিপ্রতীপে রক্তমাখা বাতিদান ঝোলে ঘোরালো হাওয়ার স্তন কী দিয়েছে মুঠো মুঠো শুকনো পাতা ছাড়া ধিকধিকে আগুন…

Read More

ঋতুপর্ণা খাটুয়ার কবিতাগুচ্ছ

মনোলগ ও গুচ্ছ কবিতা (১) ওই পথটি খুঁজে পেয়েছি। কালচে সবুজ পাথরের পিঠে, প্রিয় দার্জিলিং একেই এতদিন লুকিয়ে রেখেছিল, হাঁটতে তো ইচ্ছে করেই, অপেক্ষার রাস্তা কথা বলে। কিন্তু একটু ভয় ও ইতস্তত বোধ ছড়িয়ে আছে রাস্তায় পড়ে থাকা রোদে— কেউ কি হেঁটেছেন এখানে গেলে কেমন হয় এসব জানতে আগ্রহ বাড়ে এমন দোনোমোনো কিছু একটা নিয়ে তারুণ্য থেকে যৌবনে হেঁটেছিলাম (২) আজকাল কেউ লেখে না, একটি রঙিন দিনের গল্প। অ্যাকোরিয়ামে সাজাপ্রাপ্ত মাছেদের জীবনীগ্রন্থ — এলেম আছে কিনা প্রমাণ দাও, লেখো তো দেখি। শরীর খেকো গরমে ডাবের জলের মতো উপশম কিংবা নিদেনপক্ষে…

Read More

প্রদীপ্ত রায়ের কবিতাগুচ্ছ

  কবিতা (১) বিরতিতে নিজেকে গুটিয়ে নেয় ঘোলা জলের জিওল, অল্প অক্সিজেন মেনে নেয়। ফিরনি স্কিনে মোলায়েম রাখে রোখ,নোনা পানি। পিতল ইজ্জত আর জোড়া বুকে সেজে ওঠে অবুঝমারের ঈশ্বর আবিষ্কার করা মেয়ে। সঠিক পরিমাপে জান আর থোপা জলে ধরা নরম কছুয়া… এই তো হেঁসেল। বেলেল্লার প্যাস্টেল শেডের মুড, জরিবুটি, চামচে গুলি নয় কলিজা ব্যালান্স। তা হোক। বেসিনে যারা পুরুষাঙ্গ ধোয় তারাও তো অলৌকিক ঘটনার পরে পারলৌকিক চিতল কিনতে ভালোবাসে।   (২) বিজ্ঞাপনদাতা আয়োজিত অনুষ্ঠান এইমাত্র শেষ হোলো, শূন্য মেগাহার্টজ-এ আপনারা শুনবেন নৈঃশব্দ্য। মৃত মানুষের স্বপ্ন দেখতে ভিখারীকে বারণ করেছে অঘোরী।…

Read More

জিৎ পালের কবিতাগুচ্ছ

তোমার একান্ত পথে, একা ৬. পথ শেষ হবে না জেনেও এই এই পথ চলা তোমার উদ্দেশ্যে চলা… এমন বিরোধাভাস তোমার সমীপে যাওয়া হবে না কখনও ক্রমশ ফুরিয়ে যায় জীবনের আয়ুরোদ… তাপ মধ্যাহ্ন সায়াহ্নে ঢলে… সকলের… অমোঘ নিশ্চিত সম্মুখে দুরপনেয় পথ… অগম্য সংকেত… অন্ধকার জীবনের… আমাদের… ব্যবহারহীন এই প্রাণ অজ্ঞেয় অবোধ্য ক্রমচলমান প্রাণ… একে একে মুছে যাবে পথ শেষ হবার আগেই… মুছে যায় ব্যবহারবিধি তার জানাই হবে না ৭. হোঁচট খেয়েছি পথে তোমার হোঁচট ভরা পথ বন্ধুর গোলোকধাঁধা… অবিচল… অন্ধকার… ঘন আমার অন্ধত্ব ছিল উপলব্ধিহীন এতকাল তোমার হোঁচট দিয়ে বুঝিয়েছ… এভাবে…

Read More

অরূপ গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

যৌনতার দিকে দুপাশে মাধবীলতার ঝুঁকে পড়া ভারের ভেতরে          মানুষটা হেঁটে যাওয়া একাকী নির্জন রাস্তা, কাঁকরমেশানো,                  নম্র বুকের ওপর দিয়ে  হেঁটে যায় মেঘ, ময়ূরীর পেখম- উচ্ছ্বাস,  আবেশে এলানো, ভিজে রাস্তা ক্রমশ ঘন হয় আসে— দ্রুত চেপে ধরে, ফর্সা ও গোলাপী পায়ের রূপোলি নুপুর   উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়ে ময়ূরী শরীর—           লজ্জায় কেটে ফেলে জিভ চারপাশে পাতাদের ওড়াউড়ি                            মুছে দেয় চলমান পদরেখাগুলি   অন্য পৃথিবীর কথা কবেকার বাঁধা গানগুলি ফাটছে হাওয়ায়; পাঁজরে পাঁজরে  ভালবাসা খসে পড়ছে, শূন্যে জ্বলছে পুরাণ-পাখির ডানা সাপেরা মেতেছে উৎসবে,            অতিশকুনেরা লুব্ধ চাটে গোটা পানশালা বড়োরা কিছুটা জানে, শিশুরা জানে…

Read More

সংযম পালের কবিতাগুচ্ছ

পুঞ্জ ১. খুব ছোট রসের পাহাড়ে চড়লাম। পড়ে গিয়ে হাড় গুঁড়ো হল। ওঠার সময়ে বেশ যথাসাধ্য মনে হয়েছিল। উঠে গেলে পাথর আলগা লেগে গেল। দুটো হাড় ভেঙেছে, অনেক দাঁত খুঁজে এখনো পাইনি। ছেঁড়া মাংস দিয়ে এইবার বড় শক্ত পাহাড় বানাব। ২. কেউ কাটবে, ভুল ধরিয়ে দেবে। কেউ লালে মুখ চুবিয়ে দেবে। এত জীবিতের মধ্যে আমার ভূতের ভাবনিধি বিরক্তিই টেনে আনবে। অতীত ও ভবিষ্যৎ জীবিতের দ্যাখার কথা না। পুজো আর প্রেমের গীতিকাগুলো অন্ধের হাসির মতো। জীবিতের ওটাই প্রলাপ। ৩. বলব না ভেবে কথা অনেক বলেছি। বলে ফেলা ঝোঁকটা কবিতা। জীবিত থাকার…

Read More

পিয়াস মজিদের কবিতাগুচ্ছ

অলীক সব পেয়ে গেছ তবু আমার স্তব্ধতা তো পাও নি! এত এত চোখের ধু ধু, ভরা পেটে ভয় ধরিয়ে দেয় না? রাস্তায় হঠাৎ হরিধ্বনি , রিকশার পাশ ঘেঁষে চলে যায় নতুন কফিনবাহী পুরানা গাড়ি। নিশ্চয়ই নিশ্চই, কবরের শান্তিতে ছেয়ে যাবে জিন্দা লাশের চরাচর! যেতে যেতে এই রাস্তা কতটা ট্রেন্ডি, দেখা যাক আজ। স্মৃতির শাহেনশাহিতে বিস্মৃতিরও আছে অধিকার। দুনিয়ার দূর কোনও ক্যাফেতে আমার কথা মনে করে কে আর ০১ কাপ কফি বেশি ঢালে,বলো! পলকা কানে ভারী বোধ হয় কি কোনও আর বিকট আতশ? খাঁ খাঁ এহেন সন্ধ্যায় এমন হেরে যাওয়া শহরের…

Read More

বাপি গাইনের কবিতাগুচ্ছ

শীতের সন্তাপগুচ্ছ ১. খুব যত্নে এলোমেলো হয়ে আছে অন্য কারও বাঁশি এই অন্ধকার চর্চা দু এক মুহূর্তের হাওয়া ছাড়া কেউ না এই পরমার্থ মেঘের দেশে এসেছি ভ্রমণ হেতু দু একটি সাড়াশব্দ শেষে কারও নির্জনে ঝরে যাব হৃদয়ের প্রান্তিকে পথ হবে অন্য কারও সংসার সমগ্র যেভাবে পায়ের চিহ্ন চলে যায় ঠোঁট যাবে, আয়ু যাবে মেঘ থেকে নিভে যাবে মেঘের সূচনা সম্মতি।   ২. শীতের প্রভাব কমে এসেছে এখন বাইরের পৃথিবীতে রোদ এসেছে আর ঘরের বাইরে বেরোতে শুরু করেছে যারা মানুষ অথচ ভীষণ রকম পাখি টিন আর কাঠের এই স্বেচ্ছা নির্বাসন আমাকে…

Read More

উজান-এর কবিতাগুচ্ছ

মরে গেছি তবু ১. রাষ্ট্র তোমায় দেবতা ছাড়া দেয়নি কিছু। নীচু তাই বুকের থেকে অনেক নীচু পেটের কাছে- সেই ভগবান ভাতের মতো দাঁড়িয়ে আছে।   ২. শব গুনতে ভুল করেছি, গুনেছি কেবল কার্তুজ; আত্মহত্যাকে কবির বিষাদ ভেবে গিয়েছি স্নানে নদী খুঁজি – সে তো গেছে শব গুনতে, ক্ষেতের মাঝখানে।   ৩. দুর্ঘটনা একলা ঘটে। আমরা যারা চারপাশে তার হঠাৎ জুটি, তারা জানি সুরক্ষিত রাগ বিদ্বেষ হাল্কা কত, হৃদয় কেমন শয্যাশায়ী ; ভোর হলে তো সেই দেখা যায় অক্ষত মুখ, মুখোশ পরে রাষ্ট্র জাগে চিরস্থায়ী।   ৪ রাষ্ট্র কেন নিয়ম দিল,…

Read More

সব্যসাচী মজুমদারের কবিতাগুচ্ছ

কতটা সিগাল তুমি কতটা সিগাল তুমি ,সে জানে আমার গুল্ম … গুল্ম বলতে মেঘ বুঝো ,বুঝো তার কবীরের হাড় যেন পড়ে আছে মাঠে… মাঠে কত ভোরের মনসা ! মনসা মানেই গাছ … সিঁদুরের ফলা এ ধার ও ধার … পরনে কয়েক রতি সহজ পাথর পাথরের নীচে গ্রাম,বিশ্ব সাহিত্যের টুকর টুকর… — এ তুমি পড় হে, তুমি, কমলা লেবুটি , বুঝো পাহাড়ের ওপাশে পাহাড় পাখি নেমে আসে যেন জীবনে লেখেনি কেউ তাকে …   কাকচক্ষু কাকচক্ষু ফুটে আছে অপর্যাপ্ত ফসলের ক্ষেতে ঘটল মানুষের শক্তি মানুষের অপরাধ বৃত্তি ঘটেছে অপরিসীম চিন্তা-ভাবনাময় মনোবল…

Read More

শিশির আজমের কবিতাগুচ্ছ

    গোল্লা   স্কুলের পরীক্ষায় রচনা লিখন এসেছিল ‘গরু’ আমি কিছুই লিখিনি টিচার আমায় গোল্লা দিয়েছিলেন আমি আদৌ ঘুমিয়ে ছিলাম না আর গরু বিষয়ে আমি জানি যদিও এখনো আমার মাথায় আসেনি টিচার আমায় গোল্লা দিলেন কেন গরু নিরীহ আর মহৎ একটা প্রাণি ওকে নিয়ে কী লিখবো আমি আচ্ছা আমাকে নিয়ে যদি রচনা লিখতে বলা হয় গরু কী লিখবে তাহলে টিচার ওকে কত নম্বর দেবেন ওই গরুকে না কি ও-ও পাবে আস্ত এক গোল্লা     যে কথাটা বেমালুম চেপে যাওয়া হয়   উয়ারী আর বটেশ্বর দুটো গ্রাম অথবা একটাই…

Read More

বর্ণালী কোলের কবিতাগুচ্ছ

  চন্দ্রের আকর্ষণ ও প্রহার   ফসল জোয়ারের প্রবল জলস্রোত। চন্দ্রের আকর্ষণ ও প্রহার। ধুইয়ে দিয়ে গেছে। অজস্র নতুন পলি জমেছে আমার দেহে। অবিরাম ঢেউ শেষে উর্বর শস্যভূমির মতো জেগে আমার শরীর। আবাদ করো।     মানচিত্র কথারা সব চুপ আর্তিরা চুপ কেন এটা হল, কেন,কেন ভুল বুঝেছ, সব অভিযোগ স্তব্ধ শীত রাত্রির মতো যেন রাতের সায়েন্স সিটি বুকের মধ্যে অজস্র স্পন্দন নিয়ে ঘুমে যেন অঘ্রানের মাঠ ফসল কাটার শব্দ নিয়ে নিদ্রিত যেন মহাকাশ থেকে দেখা রাতের পৃথিবী কয়েকটি আলোর অগ্রসর নিয়ে ঘুমিয়ে     সম্পর্ক ইউরেনাস, নেপচুন গ্রহের মতো…

Read More

হাসনাত শোয়েবের কবিতাগুচ্ছ

    হারানো সন্তানদের জন্য প্রার্থনা   ৩৭ পিটার বিকসেলের গল্প থেকেই বেরিয়ে এসেছিল সে বুড়ো। যে চেয়েছিল সব কিছুর নাম বদলে দিতে। ইতিহাসকে সে বদলে দিয়েছিল পৌরনীতিতে৷ তার গল্পে কবিরা হয়ে উঠেছিল সর্বনাশা জুডাস৷ রাজ্যের পর রাজ্য দখল করে নিয়েছিল তারা। হলদে পাখির গায়ে সে পরিয়েছিল কালাশনিকভের জামা। রোদকে সে ডাকত নমরুদ আর তার পৃথিবীতে যুদ্ধগুলো সব ছিল প্রার্থনা। ভাষার এই প্যাচে সে দেবদূতদেরও ফেলে দিয়েছিল বিভ্রান্তিতে৷ দুনিয়াজুড়ে স্থায়ী হতে শুরু করল নিপীড়কদের অত্যাচার। রাষ্ট্রের পর রাষ্ট্র আচ্ছাদিত হয়ে গেল বিষণ্ণ দেবদারু গাছে। হত্যা, যুদ্ধ, প্রতারণা, জিঘাংসা সবকিছুই লেখা…

Read More

মণিশংকর বিশ্বাসের কবিতাগুচ্ছ

    মুনমুন আপনার সঙ্গে আমার কখনও যৌনতা হয়নি হওয়া সম্ভবও ছিল না তবু আপনার সঙ্গে আমার যে কত যৌনস্মৃতি কত যে স্মৃতিকাতরতা! আপনার নামের ভিতর দু’ দু’বার ‘চাঁদ’ শব্দটা আছে সেটা আমি বুঝি ঠিক এভাবে: একটা ট্রেন টানেলের ভিতর ঢুকছে আর আলোয় ভরে উঠছে কামরার ভেতরটা তারপর ট্রেনটা যখন বাইরে বেরিয়ে আসছে বাইরেটা আবার আলোঝলমলে     দুঃখ ২ ইমতিয়াজ মাহমুদ ভাই লিখেছেন, “অসুখী মানুষ যখন ঘুমায় তখনও তার চেহারায় দুঃখ জেগে থাকে।” এটা পড়েই আমার মনে পড়ল, মৃত্যুর পরে বাবার মুখখানা— বাবা যেন হাসছেন! মানুষ মরে গেলে তাহলে…

Read More

দেবাঞ্জন দাসের কবিতাগুচ্ছ

  ঐ পথ জন্মের   ১. ঐ পথ জন্মের বলে বিকেল ছুঁয়ে অমল চিনেছে ওরা আলোর শিশুদের নাচে যখন মোরগ রঙ হল রক্ত হল মাংস থেকে ইমানের ছবি উঠেছিল আকাশে বলো, ভালো লাগছে না কাঁচের গুলিতে মিশে যাওয়া চোখ এই প্রসব দেখছে লাল হচ্ছে আঙুরের বিভ্রম…     ২. না থেমে চলেছে মাঠ এ’ভাবে সব ভালো থাকা ঝরে শীতে এগুলো সত্যি হবে ভেবে ডিম থেকে পাখিরা ফেরে পাখনায় রাত হয় বিপাশার মুখে চাঁদ ওঠে ঝড়ের স্বপ্নে এক দ্রুত ফড়িং দেখি যেন শেষ পাফের কাশিতে এই পৃথিবীর যত শব্দ জল-জঙ্গল-যুদ্ধের যত…

Read More

কৌশিক ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ

    সন্ধ্যায়, আনমনে   ১ হাওয়ার মর্মবেদনার গায়ে চুম্বনটুকুর রেখে আসে যে রেশ তারে তুমি বীজের সম্ভাবনা দিও প্রেম শিশিরের নিশিডাক শুনে যে জীবন ব্রাত্য রয়ে গেল তার হৃদকমলে তুমি ফুটে উঠবে সন্ধ্যামণি ফুল? এদিকে এ দেহে কৃষিকাজের সম্ভাবনা নেই বলে পাড়ায় পাড়ায় কী ভীষণ বদনাম রটে গেছে বদনখানি তার আলুথালু পড়ে থাকছে বস্ত্রহীনের ডেরায় চোখে একদিন ঘুঙুর বেজেছিল এই তার অপরাধ নিঃশ্বাসে একদিন নদী ডেকেছিল এই তার অপরাধ? আলোর আস্তানা দেখে মাটির ময়লা যে ঝেরে ফেলেনি তার খোঁপায় তুমি একদিন তারা হয়ে দুলো, দুলে উঠবে তো জোনাকি?  …

Read More

তন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ

    সময়জ্ঞান চোখ বুজলেই মৃত একটা শরীর। হাত বাড়িয়ে বলছে টেনে তোলার কথা। মৃত, অথচ দেখে মনে হয় ঘুমন্ত—এমন ভুলচুক দিন আমাদেরও কেটেছে অনেক। তালু থেকে ছিটকে পড়েছে জলের ঝাপট। সাড়া না-পেলে সন্দেহ গাঢ় হয়। কান গিয়ে হাজির হয় বুকের ওপর। যে শরীর মৃত, সে কি টেনে তুললে বসে থাকতে পারে? ভাবতে পারে, হাসপাতালের পথেই জীবের ক্রমমুক্তি? সাতপাঁচ ভেবে চোখ বুজে ফেলি। কেউ এসে হাত ধরে টানুক, আমি জানি, বসতে পারব ঠিক। বন্ধুরা পৌঁছয় ঠিকই, দেরি করে খুব—     সীমাবদ্ধ শুরুর খানিক পরই বোঝা যায়, এ কোনো নতুন…

Read More