রাহুল পুরকায়স্থ

রাহুল পুরকায়স্থ এর কবিতাগুচ্ছ

রঙিন কবিতা 

এক

জল, তরঙ্গজলের ধ্বনি, ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে

দেখো তার অঙ্গের বাহার, মৃত্তিকার কাছাকাছি সে-ও দুলে দুলে চলে
হাওয়াকলের গায়ে তার রেণু লেগে আছে, রক্তবর্ণ, বায়ুচর,
        হেলে আছে খানিক উত্তরে
এই পথে তিনি আসবেন —
        ভেবে ভেবে সাজিয়ে তুলেছি ছায়াপথ,
নগরসীমান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছি যেন
         ইহজন্ম, পরজন্ম, ভ্রমজন্মব্যাপী,
বাউল, ফকির, খ্যাপা খেপি, 
        মিশে যাচ্ছে অক্ষরে-অক্ষরে 
শ্বাসমাত্রা প্রলম্বিত, 
শূন্য এক গ্রামের ইস্কুলে চাঁদ ওঠে!
চাঁদের আলোয় বাজে বাঁশি
ওই বাঁশি জলধ্বনি, এইমাত্র জেনে
বেকুব মাস্টার আমি শব্দরূপে অর্থ দিতে চাই

হে তুমি অন্ধের ঈশ্বর 
আজ আমি নিজেই নিজেকে দেখো কীরূপে বাজাই



দুই

ধুলোগতি, ঘূর্ণিটান, গতিপথে হরেক বিগ্রহ,
মাথাভাঙা, হাঁটুভাঙা, কেউ কেউ আড়চোখে আমাকেই দ্যাখে,
তাদের নয়নপাশে একফালি চাঁদ খুঁজি
            পুঁতে দিই মাথার ভেতরে,
ঘুরে ঘুরে ঘুরে যাই সঙ্গমে, সন্তাপে আর 
            রৌদ্রে ভেজা গ্রন্থটির
                   প্রতিটি পৃষ্ঠায়,

কী খুঁজছি, কী খুঁজছি আমি!

তুমি যদি ধরে ফেলো
         এমন সন্দেহে
             নিজেকে লুকাই স্নায়ুজালে,
নিজেকে হারাই

তারপর খুঁজি বারবার, 
যদি তারা ধরা দেয়
আমার শরীর মৃত, ভেসে ওঠে দক্ষিণে আবার


তিন

যে-সকাল বিদ্ধ করে আমাকে আবার, বলে, হেঁটে চলো
দড়ির উপরে, আগুন জ্বলছে নীচে, ওইপানে তাকিও না
আর, বিষাদবাহারপত্র মাথার উপরে, ফল পাড়ো, ফল
খাও, শোনো পদাবলী। পদে পদে ওড়ে অলি, ঘুরপথে
গৃহে টেনে আনো। মাথা তোলো, দেখে নাও পড়শিরা
জেগে আছে কিনা। এবার কবিতা করো, শিল্পের আজানে
করো স্নান। তুমি আমি কেউ নই, উড়ে চলা ধুলোর সমান। 

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment