সুমন সাধু

সুমন সাধু’র কবিতাগুচ্ছ

বিষাদ ভুলিয়ে দিচ্ছেন জীবন
যেন তাকের আড়ালে রাখা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ
ধুলো ঝেড়ে নাম লেখাচ্ছে হিজড়েদের দলে
আর পাড়ায় জমছে অশান্তিতুতো হ্যান্ডসামরা

যেদিকে তাকাই শুধু ধূ-ধূ শরীর
যত্নআত্তি না পেয়ে ক্রমশ শরীর শুকোচ্ছে
মন রয়ে যাচ্ছে মনে
দ্রুত ব্যস্ততায় হাতে সময় থাকছে না
মানুষ মানুষকে ভালোবাসছে না আর

 

 

 

 

বর্ণময় অতীতের কাছে ফেলে আসছি ঘুম
জীবদ্দশায় আর কোনো অশান্তি থাকছে না
তোমার স্পর্ধার গায়ে এঁকে দিচ্ছি কালচিহ্ন
অকস্মাৎ শরীরে ক্ষয়
হৃদয়ে জলজ ডানার আর্তি
এ নশ্বর দেহ তোমায় উৎসর্গ করে যাব
হে ক্ষণকাল, হে পরাগমিলন

 

 

 

হৃদয়ের বাঁপাশ দিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে ট্রেন
আর দূরের মালকোষ
সমূহ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তখন ম্লান
শরীরের ঘুম ভেঙে দেখছি, তুমি
আমার থেকে পালাও, আমি তোমার থেকে
এইভাবে রুগ্ন যুদ্ধ চলে ওস্তাদের শেষ রাতে
কবুতর উড়ে গেলে আমার পায়ে নূপুর খেলে যায়
ট্রেনের গন্তব্য থাকে না আর

 

 

 

তোমার চোখ দীর্ঘমেয়াদি পারিজাত
নিশ্বাসে অবিশ্বাস্য মিডনাইট ব্লু
অনতিদূরের ভোরে অপলক আমরা, চোখের ঘুম নেই
মজাচ্ছলে সকাল শুরু হয়
আমরা ভাবি ভায়োলেটের মনমরা সংলাপ
রঙের বুননপথে প্রেম হয়, শরীর হয়
করুণ শঙ্খের মতো খেলে যায় সন্ধেটির মেরুন

 

 

 

পাড়ায় আজ ঝিঁঝিদের দৃশ্যমান ডাক
স্তব্ধতার রাত্রি বরাবর নেমে আসা চাঁদে
জ্যোৎস্নার ঝলকানি দুলছে ডাল থেকে ডালে
অদূরে কোন মালগাড়ি চলে যায় রাশভারি আওয়াজে
অবিকল বেপাড়ার মন্দ মেয়েরা আসে
চোখের পর্দা সরে না
জোনাকি শান্ত হয়ে আসে শরীর-রেখায়
কাল ভোর ভোর বেরনো
সে ভোরে সাত চড়ে রা নেই
সে ভোর ঢুলুঢুলু নিদ্রাহীন
শুধু অসভ্য তোমার চোখে দেখি আমার চোখ বুজে আসছে

 

 

 

 

দূরের বলাকা থেকে দেখা যায় তাহাদের বাড়ি
তাহাদের দুপুর গড়িয়ে পড়ে রাস্তায়
তাহাদের নিভু নিভু গা-গতর, আয়েশা শিশু উদ্যান
খেলা ফুরিয়ে আসে আরেক খেলায়
তাহাদের কড়া আঁচে পাক খায় মৃত মাছ
ফুলটির নাম যেন দোলনচাঁপা
তাহাদের দোল দোল বাড়ি
আহা সে কি ঢাকা, সে কি বিক্রমপুর
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
আওড়ানো শ্লোক কথা কয়
তাহাদের বাড়ির চোখে জল

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment