তপেশ দাশগুপ্ত’র কবিতাগুচ্ছ

শিমুল আঁকতে যাওনি পলাশের ছবি এঁকেছপলাশের চোখ নাক মুখ সঠিক বসিয়েছশিমুলের ছবি আঁকনিশিমুল অত সঠিক হয়নি কোনদিনওবীজ ফেটে উড়ে যায় লালঘাঘরা ইন্দুবালা নাম্নী মহিলাটিকে আমি পেলামগানের মধ্যেমনের মধ্যে গান হয়ে সে তার লালঘাঘরা দেখায়তাকে দেখায় না ময়ূর আমার কবিতা তু্মি ভালবাসনিআমার হাত ভালবেসেছআমার হাতের দিকে তাকিয়ে ময়ূরের খোঁজ করি ঢেউ একটা কবিতার বই দাঁড়িয়ে থাকেনিজের পায়ে আসতে বলেপড়তে পড়তে আসে যদি কেউ বসে আছি ছোটবেলার উঠোনে বসে বসেই দেবহাওয়ায় হাওয়ায় এগিয়ে আসছে গাছ ইট বের করা দেওয়ালের বাড়ি কিছুই তো ছিল নাকতদিন পর একটা পায়খানা হল বলো তোজামরুল গাছ জঙ্গল…

Read More

সুব্রত সরকারের কবিতাগুচ্ছ

মোছার দাগটুকু থেকে যাবে এসো, তোমাকে আজ একটু আদর করি, চলে যাওয়ার সময় আমি, আমার ছাইভস্মের লেখা, তোমার পিঠে পরম করে একটু হাত রাখব? ব্যথা যা দেওয়ার সে তো সাধ্যমতো যত পারো দিয়েছ, তোমার ভারি পাছায় অগণিত তারার আলো, কী অবাক করা সৌন্দর্য্য এই পৃথিবীর, এটুকু তো মিথ্যা ছিল না একেবারেই, শৃঙ্খলা সেটাই আমাকে যা বেঁধে রাখবার, রেখেছিল হাওয়ায়, বৃষ্টিতে, দিনের পতনে ও নিশার উপহাসের ভিতর, আমি তখন বলেছি— অন্যায় হচ্ছে, আমার উপর অনেক অবিচার করা হল, আজ সে কথা ভেবে উলটে মিটিমিটি হাসছি, বলি— এত কি সময় আছে পুরনো…

Read More

তিলোত্তমা বসু’র কবিতাগুচ্ছ

অক্ষয়তৃতীয়া কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা দিয়ে তাম্রপত্র সাজালাম। কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা গণেশের পায়ের কাছে রাখি তবে, আরম্ভ ! গাঙ্গেয় উপকূলে জন্ম হয়েছিল, শোক ও সন্তাপ অতিক্রম করে যাওয়াই পরিক্রমার লক্ষ্য । ভিতরের আলো কখনো কন্ঠস্বর , কখনো শ্রবণ। মাকে ডাকতে ডাকতে এই শুভারম্ভ … অন্নের অক্ষরে এখন অন্নপূর্ণার হাসি , যেন আর অভাব কোথাও নেই, ভগীরথ। ক্ষয় নেই — গঙ্গা হয়ে নেমে আসব আবার। শুধু কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা। চোখে জল। মহাকাব্যের সুদূরবিস্তারি প্রভাব ছেয়ে আছে ভূমন্ডল, আকাশের থেকে শাড়ি নেমে আসে ক্রমাগত একমনে ডাকি — বিপদভঞ্জন, লজ্জা ঢেকে দিও … পাঠকজন্ম…

Read More

শাশ্বতী সান্যালের কবিতাগুচ্ছ

নীল আর্মস্ট্রং সেই মেয়েটির নাম ১. জামাকাপড় খুলে দাঁড়ালে এখানে কেউ দেখবেনা আমায় জামাকাপড় খুলে দাঁড়ালেও এমনকি এখানে কেউ দেখবে না আমায় পাখির চোখের রঙ ততটা হলুদ নয় তার বসন্তপূর্ণিমার গান এখনো সঞ্চারীর কাছে অসম্পূর্ণ ছায়ার বিভঙ্গ নিয়ে লজ্জায় ঘাসবনে লুকিয়ে আছে চিত্রকূট হরিণের দল শরীরে পূর্ণিমা এলে তারা দল বেঁধে নদীবাঁধে জল খেতে আসবে শহর থেকে মাত্র বারোটা আলোকবর্ষ পার হয়ে এখানে এসেছি সঙ্গে যার আসার কথা ছিল, সে নেমে গেছে মাঝপথে মেয়েলি নামের একটা অজানা স্টেশনে ফলত এ নতুন মুলুকে বনজ্যোৎস্না পুরোনো হচ্ছেনা নগ্ন যুবক চাঁদ শরীরে সংকেত…

Read More

সমীরণ ঘোষের কবিতাগুচ্ছ

ভিক্ষু হয়তো বাইশজন তাদের মুছে যাওয়ার জন্য যা-যা দায়ী করে গেল তা ওই শরীরেরই বাইশ-কুঞ্জের বোবা হাওয়া পৃষ্ঠা থেকে আনুভূমিকতা সরালে সাদা সরাচর। আরও আরও ঠান্ডা কামানবাইশ ভিক্ষু আজ পুথির মাছপোকা। কিছুটা ক্ষয়াটে আর সংঘপ্রাচীন বাইশ শতাব্দীর ধস স্তূপের চূড়ায় হয়তো কখনও হাঁস বাইশ ভিক্ষুর ঘুণলাগা সমাধি কোলে শূন্যে উড়ছে বাইশ-কুঞ্জের লিপি বাইশ-সূত্রের অবসানহীন মেষ। কুয়াশাকঠিন নেমে জ্যোৎস্না ঢালে বাঘের থাবায় কাফিলা মন কাফিলা করছে। নগরীর শেষে মস্ততম হাওয়ার দোকান আঙুলের ক্ষত আজ শুকিয়ে এসেছে। হাঁটুভাঙা উটও উঠছে পাংশুটে ছুরির রেখায় বালির দেয়ালা ফুঁড়ে পুঁতে যাওয়া ক্যারাভান খেজুরপাতার শিস মন…

Read More

হাসনাত শোয়েব-এর কবিতা

সন্তান প্রসবকালীন গান এই পাহাড়ের নিচে যে দুপুর একা একা…বয়ে যাচ্ছো তুমিও। বাঁ কাঁধের ফেরেশতারা একে একে ভীড় করে এই পাহাড়ের ধারে। যারা একটু পরেই ফেটে পড়বে অট্টহাসিতে। তুমুল কোন নারীর যৌন জীবনের দিকে তুমিও ছুঁড়ে দেবে বর্শা। একটি তীর ক্রমশ ভেদ করে চলে যাচ্ছে অপার বর্ষা। এই তবে শেষ দিবসের গান? আজকের রাতটাই? তারপর কর্কটাক্রান্ত প্রতিটি ভোরের মৃত্যু হবে তোমাকে না জানিয়েই? আমি জানি, এইখানে ফলিত শরীরের নিচে বাসা বাঁধছে অবিশ্বাস। যারা প্রতিদিন একটু একটু করে জড়ো হচ্ছে। লিখছে কঠিন কোন শোকবার্তা। ভুল ঠিকানায় পোস্ট হয়ে যাওয়া সেইসব বার্তার…

Read More

এখনও মুখস্থ হয়নি তোমার স্বগত সংলাপ

১ কাকে কখন ছেড়ে আসা ভালো কোথায়- এসব প্রশ্নের ভেতর আরও লম্বা হচ্ছে তোমার শরীর শরীরের ভেতরে একটাই দরজা বারবার খুলে যায় মাঝে মাঝে দেখা যায় শ্মশানের নদী একেকদিন বাগানে জ্যোৎস্না  দরজা বন্ধ করে দিতে গিয়ে দেখেছো তুমি শরীর লম্বা হয়েছে অথচ হাতদুটো অসাড় থেকে গেছে অথচ জানো তুমি হাতের ভেতরে ক্রমাগত বড় হয়ে উঠেছে তোমার অপত্যস্নেহসমূহ… ২ একা থাকা ও নিঃসঙ্গতার মাঝখানের কিছু গান কাঠের আসবাবের মাঝে গুছিয়ে রাখা থাকে গানের শিকার প্রবণতাকে ভয় পেয়ে তুমি পাখির ছায়াটিকে রেখে দিয়েছো বন্ধ দরজার ওপারে অথচ তুমি জানো তোমার দেহের ভেতর…

Read More

কবিতাগুচ্ছ

একটি মার্জার ও ক্ষুধা ১. অবশেষে একটি মার্জার ডিঙাইয়া গেল আমার লেখা। আমার কবিতাগাড়ির কতটা বিপদ হইতে পারে তাহা দেখিবার জন্য আমিও উন্মুখ হইয়া আছি বহুকাল হইতে । একটি খতরনাক পরিবেশনার জন্য আমার মনন আমাকে বেপথে চালিত করে ।ক্রমশ একটি দুর্ঘটনার দিকে একটি ঘাট হইতে আঘাটার দিকে অচেনা তড়িৎ চুম্বকীয় বলের দ্বারা আমি পরিচালিত হইতে লাগিলাম। আমার আজীবন শব্দ সঞ্চয় নিজেরাই যুক্ত ও বিযুক্ত হইতে আরম্ভ করিলে আমার চালিকা শক্তি ক্ষীণ হইয়া আসে। অদৃষ্টের উপর ছাড়িয়া দিলেও স্টিয়ারিং কোনোক্রমে তখনো হাতে । ভাবিয়া চলিতেছি যাহা এতদিন আমার কব্জির মোচড় দিয়া…

Read More

শাশ্বতী সরকারের কবিতাগুচ্ছ

১.  আজ তুমি আমাকে কী কথা বা মনে করাবে? কোন কাজ বাকি রয়ে গ্যাছে? অন্য দেশ, অন্য নগর-গ্রাম, ভুল পিনকোড আসন্ন সমুদ্রে রাত কাটে, দিনগুলি বেলা হলে দূরে চলে যায় আরও দূরে নক্ষত্রবীথিটি, বজ্র এসে দাগ কাটল–সে দিবাবসানে তোমার পিঠের ‘পরে মনে করো নখরাভিঘাত… চিনেবাদামের খোসা উড়েছে অঢেল, নীলাভ জঙ্গল–তাকে খুঁজে নিতে গেছি তোমার কোলের কাছে পড়ে আছে হাত, ঢেউয়ে বিক্ষত সেই হাত-কে জাগাও? এখন, অন্য কোথাও যাওয়া রোদে সাঁতলানো ভাতের থালার পাশে গেরস্থ ছবিটি আমার মুখের পাশে চুল তোমার কাঁধেও গতচুম্বনের জ্বালা, দাগ আজ তুমি ফের বলো কী মনে…

Read More

শৈলেন চৌনীর কবিতাগুচ্ছ

লবণহীন বাকি বয়স লবণের দাগ। ভীতু ফুল। আর সমাপতনের ভেতর সংশয়ী রেণু ফেটে পড়েছে অযুত। হ্যালুশিনেশন ঘেরা আমিই তোমার সেই প্রথম অভব্য। পশমের বিপরীতে ক্রমাগত লাল হচ্ছে শালগ্রাম শিলা। সাদা পাতাটির মাঝে তুমিও পেরিয়ে গেলে আমি নীল শোকে রেখে যাই তোমার বয়স…   তদন্ত আশাহত চিরুনি। তদন্ত করি রোজ, নাড়ি থেমে গেছে, আহা বিভ্রম! ছুরির গায়ে মরিচের দাগ, চমৎকার মৃত্যুর পাশে সমস্ত পরিকল্পনা, ঋজু স্মৃতির দিন… থেমে থেমে উর্বর হয় পাড়ি, প্যাডেলের বীজগণিত — একমাত্র তুমিই জানো, হে আততায়ী বালিকা, রি-সাইকেল বিন থেকে উদ্ধারের পদ্ধতি!   ফাঁসুড়ে কারা যেন শিস্…

Read More

হিয়া মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

মন্টানা হোমস্টে ১. সরলরেখার মত দিনগুলো কাটছে৷ অনুত্তেজক। অনুশোচনাহীন। মাঝেমধ্যে টুপটাপ রক্তপাত। সেটুকু অভিপ্রেত। বাকিটা ঘুমঘুম কমফর্টার। রোদে জড়ানো ফার্নে বিকেলের ছায়া দোলে। মৃদু পোর্সিলিনের নীচে বসে ছড়া গাঁথার দিন এসব। শিস দিতে দিতে টি এস্টেটের আলোগুলো একে একে নিভিয়ে দেওয়ার দিন। আপাতত সব ঠান্ডা। দু একবার শিরশিরে হাওয়া দিলে শুধু সবার অলক্ষ্যে ট্যাবলেটের ভাষায় তুমি জানি কাকে ডেকে উঠছো।   ২. আবার এসেছো তুমি বিষণ্ণ গ্রীলের পাশে। অতর্কিতে আবার দাঁড়িয়েছো হা হা করা খাদের পাঁচিলে। হাওয়ায় পাইন দুলছে। নিভু নিভু শ্রমিক কলোনী। দূরদূরান্ত অব্দি কেউ নেই, শুধু একা তুমি।…

Read More

পাখিজগত

১ মাঘমাসে বৃষ্টি-বৃষ্টি মাত্রা গুনে খুন-জখম হলো লতানে শিরা থেকে গাছ, গাছের টুনিবাল্ব পাতায় শুকনো মুখটুকু পড়ে আছে বিবর্ণ আনাজদাগে স্থির টাটকা খয়েরি দেহ থেকে ছিন্ন তুলে নেব তাকে ? আমি যে তার শেকল সেটা বুঝিনি, শঙ্খপুষ্পে বাতাস আলো কেটে-কেটে সারাবেলা পাখিজগত হাসি ঠিক বুঝতে পারিনি তাও, মনে হয় ব্লেডের কৌশলে তবু কয়েকটি কাঁপা-কাঁপা রেখা রক্তপ্রবাহে আঙুলের ফিতে ।। ২ টুনিবাল্ব মুখে পুরে বলেছিলাম এই হল উপগ্রহ মাঝারি চাপে ভেঙে..গিলে নাও অশ্রুবিগলিত শহর কাঁচের জমাট ক্লাস্টার বিসর্পিণী জিভের মায়া লালাভর্তি পৃথিবীতে তোমার স্বর অন্ধকার বাঁকা ইলেক্ট্রিক এক-একটি অনুস্বার তন্তু ছিঁড়ে-ছিঁড়ে…

Read More

প্রায়োপবেশন

১ কিশোর ফ্ল্যাটবাড়ি দুমড়ে নামিয়ে এনেছে যে অংশ আকাশ, অপ্রাপ্ত জলের যে পূর্ণ, তার উদ্দেশ্যে বৈধ দিই ধৃত বাহিরখন্ড নগ্ন জল্লাদের চিরউত্থিত সবক’টি। এক এক করে প্ল্যাটফর্ম ছুঁয়ে কাম্য অবশেষ এলে বন্ধু বকবক জেগে ওঠে। চতুর কামদানী উপচে গেলেও শব্দ করে না। ওই চিত্তে অসংজ্ঞাত ফিল্টার জেগে আছে ৷   ২ ইদানীংনাম্নীটি উপেক্ষিতা হলে পাপ হয় সবেধন এক্সকিউজ থেকে ফুলকি উড়ে যায় যেন তার যমজ হয়েছে। যমজ আমাদের এই মৌচাকের গোপনতমে যত্ন করে রাখা। চিবুকে পলাশ ঢাকা যেন তার ঔরসে ধুলো না পড়ে। তাও পড়ে আমরা সেতু ভাঙতে ভাঙতে এতসর্বস্ব…

Read More

নিম অন্নপূর্ণা সিরিজ

এক তুমি যদি জানো ভুল, তাহলে ঈশ্বর বাড়িতে অনুসরণ করবে না। ঈশ্বরের নক্ষত্র পতনের দিনক্ষণ ভ্রষ্ট হয় না। আমাদের মধ্যে অনেক ছোট ছোট বিশ্বাসঘাতকতা আছে। একটি বিশ্বাসঘাতকতা যে ভঙ্গুর, ক্রমে বিরতি দেয়… ভয়াবহ ত্রুটি চিৎকার করে পাঠালে, ভাঙা আলিঙ্গনে। আলিঙ্গনের মাধ্যমে খেলা আউট, ঝড়। এবং প্রত্যেক খেলা শেষে আত্মার প্যারেড। কিন্তু তুমি যদি সার্কাস ভাবো, ভাণ করো শরীর, তবে যাত্রীবাহী পথটি খুঁজে পাবে না। আমি নিষ্ঠুর এবং সম্ভবত সব নিষ্ঠুরতার জন্য কী ঘটে, জানি না সত্য। তাই একটি অস্থিরতার আবেদন, কিছু ছায়া নয়, মায়া। যদিও আমরা একে অপরকে বোকা বানাতে…

Read More

শুভ আঢ্যর কবিতাগুচ্ছ

ম্যাড মঙ্ক  ১. ঘর পেরিয়ে যাও তোমরা, আর আমার ভেতর দাঁড়াও, আমিই এক পথ, যে পথে তোমাদের আসা যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়টুকু আলো পায় এই সরাইখানায় তোমাদের স্বাগত, এই স্যাঁতস্যাঁতে প্রায়ান্ধকার ঘর তোমাদের কনফেশন রুম, এই ঘর তোমরা পেরোতে পেরোতে রাশিয়ার মানচিত্র পেরিয়ে গ্রীসের দিকে চলে যাও, সেই অর্থোডক্স গির্জায় অতএব, পবিত্রকরণ… এই দেহের ভেতর বোকা গ্রিশকা ধারণ করেছে কত আত্মা, তার চৌখুপি ভরে উঠেছে কথায়, অথচ যাকে তোমরা বিশ্বাস করছো, সে তোমাদের তামার থালার ভেতরে দস্তাটুকু ভরে দেবে এমন সংশয় তোমাদের হয় না, হাঃ, ধর্ম অন্ধ, এই কৃষকশ্রেণীর অতীন্দ্রিয়তা তোমরা…

Read More

ব্যক্তিগত কান্নার নিকটে

১. এমন হাতের টান; মনে হয় লিপিটি অস্থির যেন কিছু কাঠুরিয়া সার বেঁধে সারি সারি গাছে কুঠার বসিয়ে দিচ্ছে, অবিশ্বাস্য হরফের ভিড়ে পাঠে ব্যর্থ কোন এক পুরুষের দৃষ্টি জমে আছে ২. এখানে বিকেল, গায়ে হলুদ আলোয় ম্রিয়মাণ; গান নিয়ে ঘুরে ফেরে, সমুদ্রের পাড় বরাবর, ক্রেতা-বিক্রেতা, ঢেউ, মদ, ছুটি, লৌকিক চা-পান মানুষের ছাপ নেই, বহুদিন বালির ওপর ৩. সে কিসের স্মৃতি, যার সাথে তুমি তুলনামূলক দুঃখ-মুহূর্তে তাকে রোমন্থন করে কোনদিন ভেবেছি উপায় হবে, অতঃপর মন্ত্রমুগ্ধবৎ আনন্দের ক্ষণগুলি হয়ে গেছে দুঃখের অধীন। ৪. তবুও বিশ্রাম পেলে মগজ পুনর্পাঠে ডোবে উতল ছটফটানি-দৃশ্যকে থামিয়ে…

Read More

নবকুমার পোদ্দারের কবিতাগুচ্ছ

অভিশপ্ত সম্রাট সাতজন্ম তপস্যা করেও তোমাকে পাইনি। ঈশ্বরের অসমাপ্ত ট্রেনে শুয়ে থাকি এখানে জাগাবার কেউ নেই বিদ্যুৎ চমকায়। আধপোড়া। তোমাকে সেঁকবো বলে আগুন সেঁকেনি বহুকাল। শীত ব্যালকনি বাইছে তার গুনাগুন কে বিচার করবে। আক্ষরিক অর্থে মেঘের পদাবলি সব উপন্যাসেই রক্ষণশীল শুধু চারপাশ বরফগোলা নাবিক নাবিক খেলছে।   একটি গুড নাইট কবিতা ঘুমতে যেতে চাই ঘুম আসে না। অল্প মাত্রায় হাহাকার খাই একটু হাঁটাচলা দিই ঘুম পরগনায় তখন জোয়ার শুধু আবছায়ায় মনে পড়ে কাল খুব ভোরে তোমাকে পৌঁছে দিতে হবে।   চিঠি ভিজব বলে কথা দিই ভেজা হয় না। রাখালের মত…

Read More

সুকুমারীকে না-বলা কথা

১ অন্ধকার একটা ঘোড়া ছুটে বেড়াচ্ছে প্রভুর সন্ধানে, মিছে হতে মিছে, এ প্রহেলিকা হতে অন্য প্রহেলিকায়, অন্ধকার একটা ঘোড়ার কেশর থেকে ঘাম ঝরছে এ প্রহেলিকায়, ও প্রহেলিকায় অশ্বক্ষুরের আঘাত ৷ সদ্যমৃত এই মাঠে তুমি যে বারবার ফিরে আসছ আমি তার কতটুকু বুঝি, তবু, চোখ ফেরাতে পারি না; যত বড় জয় তত বৃহৎ ধ্বংসস্তূপ, মাঝরাস্তায় ততবার হারিয়ে যাই, সামান্য এই পথনাটিকায় ৷ ততবার, গণনাসঙ্কুল আমার এ রাত্রিপটমাঝে, দূর হতে শুনি তারে, টিলার ধার বেয়ে ধোঁয়ার মতো উঠে আসছে সে, চোয়ালের কোণ থেকে অবিরাম ফেনা ঝরছে, আমরা মরলোকের শেষ ক্রোশ পেরিয়ে যাচ্ছি…

Read More

রাহুল পুরকায়স্থের কবিতাগুচ্ছ

হেমন্তে লেখা এক মূক ও বধির হাওয়া, নিশীথে পেতেছ বায়ুজাল। আমি ধরা পড়ে গেছি। আমার চশমা দেখি উড়ছে বাতাসে! খরস্রোতা দৃষ্টি আজ ভ্রমের সাঁকোয় দুলে ওঠে ! পারাপার ভাবি তোমাকেই। মক্ষিকাও ভাবি। মাতাল মক্ষিকা। পেরিয়ে অযূত সাঁকো আহত ভাষার কাছে বসি। বলি, আমাকে বিপুল দাও, আমাকে বিনাশ দাও। পাতাল-ধুলোয় অবিনাশী গলিত অক্ষরে যেন ভেসে যেতে পারি। জল দিতে পারি যেন বিষাদের বংশলতিকারে।   হেমন্তে লেখা দুই সব কবিতাই হেমন্তের। ধূসর ঈশ্বরীতলা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এই কথা মনে এল আজ। আবছা সন্ধ্যায় ছায়া-ছায়া চা-দোকান থেকে মৃদু হিম স্বর ভেসে আসছিল। ভেসে…

Read More

সুমন সাধুর কবিতাগুচ্ছ

পৃথিবীর সাতরঙা মাছ আরেকটা কলকাতার হেরে যাওয়া দেখছি আমি। শহীদ মিনার থেকে দেখছি উড়ে চলেছেন প্রেমিক যুগল, ডানা ঝাপটানোয় সামান্য আদানপ্রদান। নাগরিক ম্যানহোল জার্নি, তাতে ডুবে যাওয়া হাসি- সবটাই খেয়ে নেবে রাত-বিছানা। আমরা ঘাঁটি ঘড়ির সেকেণ্ড কাঁটা- সময়োপযোগী বিফ রোলে বেশ ছটফটটি হয়ে তর্কে ওড়াই ধুলো, স্লোগানে হাঁটি আর মিছিলে বুজি ঠোঁট। ট্রান্স আর হিজড়াদের দেখি এক, তফাৎ মানিনা তাদের। স্বপ্ন? ধুস ধুস! যেদিকে মন চায় আমি সেদিকেই হুস। সটান চুমু খেয়ে জাপটে ধরে লজ্জা পাই, নাক লম্বা তাই গলাই। ধর্ম মানিনা, ঈশ্বর মানিনা, এ শহরের ভিড়ে আমরাই কালজয়ী, আমরাই…

Read More