পৃথিবীর সাতরঙা মাছ
আরেকটা কলকাতার হেরে যাওয়া দেখছি আমি।
শহীদ মিনার থেকে দেখছি উড়ে চলেছেন প্রেমিক যুগল, ডানা ঝাপটানোয় সামান্য আদানপ্রদান।
নাগরিক ম্যানহোল জার্নি, তাতে ডুবে যাওয়া হাসি- সবটাই খেয়ে নেবে রাত-বিছানা।
আমরা ঘাঁটি ঘড়ির সেকেণ্ড কাঁটা-
সময়োপযোগী বিফ রোলে বেশ ছটফটটি হয়ে তর্কে ওড়াই ধুলো,
স্লোগানে হাঁটি আর মিছিলে বুজি ঠোঁট।
ট্রান্স আর হিজড়াদের দেখি এক, তফাৎ মানিনা তাদের। স্বপ্ন? ধুস ধুস! যেদিকে মন চায় আমি সেদিকেই হুস।
সটান চুমু খেয়ে জাপটে ধরে লজ্জা পাই, নাক লম্বা তাই গলাই। ধর্ম মানিনা, ঈশ্বর মানিনা, এ শহরের ভিড়ে আমরাই কালজয়ী, আমরাই স্ট্রেট- বাই অথবা হোমো।
যা হোক বলো আমায়।
আমি তো উড়ে চলি আর ডানা ঝাপটাই।
পালক
অদৃশ্য রাত পেরোতেই রাস্তা জুড়ে আজান
বেজে ওঠা গাছেদের সারি, সারিবদ্ধ প্রতিবেশী হাওয়া
যেন কাক-পক্ষীদের শহরে তুমুল মিছিল হচ্ছে; হঠাৎ, যেন উড়ন্ত ফানুশ থেকে ঝরেছে মাঘ মাস।
এই রাতে হাওয়া আসে শীতের। এই রাত, অদৃশ্য ভাবে ভরাট করে পাণ্ডুলিপি।
শাদা মলাট ওড়ে, খসখসে পাতা ওড়ে ঘিয়েটে স্বভাবে, ওড়ে হা-পিত্যেশ কবি স্বভাব।
আজ তুমি অদৃশ্য পাখি। দুর্বল কবিতা থেকে দু-একটা খসে পড়ে পালক…
পালক
পালক
খসে পড়ে…
তোমার মতোই অন্যকিছু
সবকিছু শোনার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখাও একধরনের অভ্যেস।
এই বুঝি আছি এই বুঝি নেই;
টানা জড়িয়ে ধরছি কয়েকদিন।
অথচ যেই নিম্নরেখার মতো নেমে গেলে, তক্ষুনি তোমার মতো করে অন্য কারোর প্রেমে পড়লাম।
অবিকল।
মাৎস্যন্যায়
১
প্রাণপুরুষ তুমি, তুমি গতানুগতিক ন্যায়পথ
অথচ ফল-ফুল-শস্যের মধুকাল এতটাই অনুপস্থিত!
নিতান্ত ক্ষুদ্র প্রাণী আমি। প্লুটোর ন্যায় ঘূর্ণিপাকে একবারটি সাথ সঙ্গ দিও।
২
গহ্বর জুড়ে ভাসমান ক্ষত, বুদ্ধপূর্ণিমা এসে জুড়িয়ে দেবে ভরাট উঠোন।
সার্থক প্রকোষ্ঠের দেহরস থেকে বেরিয়ে যাবে এযাবৎ অহংকার
ক্ষততে মুখ দিয়েই আমি স্থির। তার হাত ধরে ইচ্ছাপূর্বক কাঁটা ফুটিয়েছি নিজেই।
৩
রাজা শশাঙ্ক, কী হে জাদু তোমার!
ধীরে ধীরে ছড়িয়ে দিলে লাশ, আততায়ী খোলস।
তোমার পরবর্তী ইতিহাস – অস্থির হতাশাখ্যাত। বৃহস্পতি দ্বারে দাঁড়িয়ে দেখে চলেছেন অনামী প্লুটোটিকে। ছিন্ন হল পাতার শাদাটে। প্রেমে ঢেলে দিলে বিষ।
খাদ থেকে উঠে এলেন গোপাল, প্রাচীনতর শিলালিপি নিয়ে।