বিভ্রম
যতটা সীমানা তার ততদূর নয় আসমান
আলোরা মায়ার মৃগ অন্ধকার বনে
অতর্কিতে ফাঁদ পাতে দৃষ্টির আড়ালে
অনেক ভ্রমণ শেষে ধ্বংসস্তূপে এখনো দাঁড়ালে
কেবল বিভ্রমে কেঁপে উঠি, যাকে এতকাল ধরে
খুঁজেছি নিজের ভেবে সাক্ষী রেখে নিজস্ব আয়নায়
মিলেনি কিছুই তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপ
আমিও নকল তাই বিপরীত দিকে
আমাকেই ভ্রম ভেবে ছায়া আরও বড় হতে চায়
অভিলেখ
বিষাদ শূকরী পুুুষি, দিই তাকে প্রভূত খাবার
হাঁটু মুড়ে বসে নখ দাঁতসহ, ক্রমে তার ছায়া
অন্ধকারে সবেগে ঝাঁপায়। শেষ অব্দি পৌঁছাতে না পেরে
ব্যর্থ ওই লাফগুলি জোড় বেঁধে রমণে বেরোয়
ফাঁকা কাচঘরে সেইসব স্মৃতি জন্তুপ্রায় হেঁটে যায়
সুসজ্জিত অঙ্কের ভিতর, ছুরিহীন মাংসহীন।
অপেক্ষা করো না আর
প্রদক্ষিণ করো,এই শস্যবীজ,সূর্যমুন্ডসহ
কাঠামো বানিয়ে নাও, যেতে হবে বর্জ্য অণুতে অণুতে
অনেক ফেলেছ লালা বিষাদ শূকরী
চেটে নাও এইবার, যে-কোনও একটা হাওয়া এসে
ছুঁড়ে ফেলতে পারে…
সূত্র
আমাদের দেখা হয় রোজ দশমিকে, বিন্দুতে বিন্দুতে
অথচ চিনি না তেমন
ধরি তুমি এক অজ্ঞাত রাশি
আমি তোমার মান জানতে চাই,
কতপথ, কেমন হবে তার ফলাফল
জানি বিয়োগের গায়ে ব্যথা
তবু যদি এসে বসো তার পাশে
দুটিতে সমান হই
গণিত এভাবে মেলে
যদি ঠিকঠাক এগোনো যায়
অবোধ বালিকা তুমি, অংকে কাঁচা
অচেনাকে ভয় পাও
সূত্র কাছেই ছিল, আমিও ধ্রুবক ছিলাম
শুধু মান অজ্ঞাত ভেবে
ঠিকমতো ধরলে না আমায়..
আলোকবর্ষ
শূন্যের সম্মুখে যাই, আকাশের গায়ে
আমার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ফুটে ওঠে সপ্তর্ষি মন্ডলে
হয়তো বা প্রশ্নচিহ্ন নয়, হয়তো বলির খাঁড়া, তার চারপাশে
মাংসের চিৎকারে বেঁচে ওঠে মহাকাল;
আকারে বিশাল তবু তার
অন্ধকার
প্রতিটি নক্ষত্রে দেখো
(আছি কিংবা নেই— এই দ্বন্দ্ব থেকে বহুদূরে )
আমার বেদনাগুলি আলো জ্বেলে রাখে
নিরাভরণ
ভাঙা বাড়ির নিঃশ্বাস পড়ে কুকুরের গায়ে। নিজেকে অপরাধী মনে করে কুকুর। সেহেতু তার ঘ্রাণ আরও তীব্র হয়, শুক্লপক্ষের প্রথম জ্যোৎস্নার মতন শুঁকে বেড়ায় ভাঙা বাড়ি।
বাড়িটা নিশ্চই কোথাও আছে, এ সন্দেহে কুকুরের খিদে পায়, লালা ঝরে,
রক্ত চেটে নেয় খানিক ক্ষুধার ভেতর,
ঠিক তখনি জানালা গলতে শুরু করে এবং দরজাও। প্রবেশ ও প্রস্থানের সব পথ মুছে যায়।
অপরাধীকে ছেড়ে, অপরাধের দিকে দৌঁড়াতে শুরু করে বিশ্বাসী কুকুর ।