হেমন্তে লেখা
এক
মূক ও বধির হাওয়া, নিশীথে পেতেছ বায়ুজাল। আমি
ধরা পড়ে গেছি। আমার চশমা দেখি উড়ছে বাতাসে!
খরস্রোতা দৃষ্টি আজ ভ্রমের সাঁকোয় দুলে ওঠে ! পারাপার
ভাবি তোমাকেই। মক্ষিকাও ভাবি। মাতাল মক্ষিকা।
পেরিয়ে অযূত সাঁকো আহত ভাষার কাছে বসি। বলি,
আমাকে বিপুল দাও, আমাকে বিনাশ দাও। পাতাল-ধুলোয়
অবিনাশী গলিত অক্ষরে যেন ভেসে যেতে পারি। জল দিতে
পারি যেন বিষাদের বংশলতিকারে।
হেমন্তে লেখা
দুই
সব কবিতাই হেমন্তের। ধূসর ঈশ্বরীতলা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
এই কথা মনে এল আজ। আবছা সন্ধ্যায় ছায়া-ছায়া চা-দোকান
থেকে মৃদু হিম স্বর ভেসে আসছিল। ভেসে আসছিল
আলুর চপের গন্ধ, বেগুনির গন্ধ। মন কেমনিয়া বাঁশি
ভেসে আসছিল। বাঁশি কে বাজায় তবে বলো?
বাঁশবন। ঢেকে আছে কার্তিকের অন্ধকারে। কুয়াশার
ছেঁড়া-ছেঁড়া চাদর বিছিয়ে গুঁড়ো পোকাদের ওড়াউড়ি।
গুঁড়ো হিম। গুঁড়ো গুঁড়ো স্মৃতি। গুঁড়ো গুঁড়ো মৃত্যু ।
অহনা পিসির গান। স্বামী ও সন্তান হারা গান।-
“কাশ ঝরে যায়, ঝরে যায়”…
আর কিছুক্ষণ এগোলেই দোপেরিয়া। কবরের ওম।
হেমন্তে লেখা
তিন
কোপ। মুন্ড গড়াগড়ি ৺সিদূর মাখা কাঠে।
স্পর্শ। ৺কুকড়ে যাচ্ছি লজ্জায়।
দৃষ্টি। চলে যাচ্ছি অগোচরে।
রক্তচক্ষু। চোখ নামাচ্ছি মাটিতে।
বৃষ্টি। ধারাস্নানে বিলিয়ে দিচ্ছি নিজেকে।
চাবুক। টগবগ টগবগ।
মৃত্যু। এসো আলিঙ্গন।
সমর্পণ।