তোমার নয় যাবার দিন
তোমার শুধু যাবার দিন, ফেরার দিন নেই
আমার খুশি আমি খুশি, খুশি তো অল্পেই
কাটাকুটি যোগবিয়োগের এমন বিষম খেলা
খেলারামের হুহুঙ্কারে কাটলো সারা বেলা
যাবার সময় পিছুডাকের পুরনো অভ্যেসে
মিলের থেকে অমিল খুঁজে হদ্দ হলে শেষে
আল বেঁধে জল ধরতে গিয়ে জোড়াতালির মাঠে
ডানার জখম লুকোয় পাখি উড়ন্ত পাখসাটে
ভাব বলতে গিয়ে যদি মুখ ফসকে আড়ি
আনবাড়িতে পা দিয়ে ফের মাথায় সারা বাড়ি
মুখ ভেংচে বলছো — তুমি বাসি বাসি বাসি
তবু আমি ঘৃণা দিয়ে তীব্র ভালোবাসি
ক্রিয়ামাতৃক
মুখের কথা খুঁজতে খুঁজতে ঢুকছি তোমার মুখের ভেতর
ও-কার কখন ওঙ্কার হয় — ভাবতে-ভাবতে কাটছে না ঘোর
খিদে পাবার অনেক আগেই অ-য় অজগর আসছে ছুটে
এমন দৃশ্যে উত্তেজিত আমজনতা কী মারকুটে!
ঈগল পাখি দেখে যতই ভয় পাক না ইঁদুরছানা
পণ করেছে ভর্তি না হোক ধানের গোলা কানায় কানায়
উটের গ্রীবার অন্ধকারে দীর্ঘ ঊ-টি ঝুলছে বলে
কেবল ঋষি মশাই পুজোয় — ডিগবাজি খায় আর সকলে
কাজের বাইরে কেউ কিছু না — অতন্দ্র তাই কর্মজগৎ
ক্রিয়ার জন্ম — নান্যপন্থা — সপ্তলোকে একখানা গৎ
এক্কা গাড়ির বাড়ছে গতি — বাড়ছে শরীর-মনের ক্ষত
সেই গহনে ডুব দিয়ে কে চাঁদ না দেখেও চন্দ্রাহত!
ধরা গলায় বলছে যা তার অর্থ বুঝি আরোপিত
কথার মানে খুঁজতে কথার গর্ভে রাস্তা অবিকৃত
বর্ণ ছুঁয়ে বর্ণচোরা অজান্তে যায় শব্দ-বধে
অর্থ নিষ্কাশনের ব্যাধি — খোঁজ দেবে কে মহৌষধের
এ লোক নয় — ওই লোকটা — খুনখারাপির ও-ই আসামী
তোমার মুখের কথার ভেতর নিজের মুখই দেখছি আমি
দেখতে দেখতে শব্দভেদী বাণে যখন সবাই অবাক
বজ্রগর্ভ মেঘের মধ্যে জাগছে তোমার বৈখরী বাক
জাগছে না — সে পাশ ফিরছে গভীরতর ঘুমের ঘোরে
তোমার মুখের কথা দিয়েই ঢুকবো তোমার খুব ভেতরে
শব্দ ক্রিয়াকারী যদি প্রকৃতি তার সঙ্গে অভেদ
শব্দার্থ ক্রিয়ার পুরুষ — সম্পর্কে পড়বে না ছেদ
স্বরবর্ণ শক্তিস্বরূপ — ব্যঞ্জন যায় শিবস্বরূপে
আধার খোঁজে আধেয় আর সামরস্য বলির যূপে
প্রাণ খুঁজে পায় বীজবপনে — সম্মোহনে জুড়োয় জ্বালা
চৈতন্যে স্বয়ম্প্রকাশ করুন রঙিন বর্ণমালা