সুদীপ চট্টোপাধ্যায়

সেলাই অঞ্চল


সন্ধে একটা বানানের নাম, যার মেরুন বোতাম একসময় সাদা শার্ট থেকে হারিয়ে যায়, পড়ে থাকে তিন-চার রকমের গোধূলি
সন্ধে এমন কোনও মাতৃতান্ত্রিক যখন ফিরে আসাটা অভ্যেস, বাড়ি না থাকলেও
বাড়ি না থাকলেও তুমি ডানা ভাববে, আর ঠিক নেমে আসবে প্রসারিত সন্ধে
হাওয়ার কসম। আমরা একদিন ঠিক সন্ধে খাবো
তারপর ছোটো ছোটো নুড়ি জল দিয়ে গিলে নেব, প্রকৃত পরিপাকের জন্য
এভাবেই আমরা একদিন ঠিক সামুদ্রিক হব, একটা নির্ভুল সন্ধের জন্য


আমাদের বিস্ময়গুলো ক্রমাগত এক একটা কাচের গ্লাসের নির্দয়তা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে, তৃষ্ণাহীন। তুমি তো টেবিল, তুমি তো টেবিলের সম্পর্কিত ভাই
তুমি আদাব। আমার পাঠ্যপুস্তকের ভেতর ঘুমিয়ে পড়েছ
আর আমি চোখ বন্ধ করে গুনছি রুদ্ধদল, মুক্তদল। গুনছি মুক্তস্বর খণ্ডস্বর
ভাবছি উপেক্ষার দেয়াললিখন বেঁচে থাকা, আর একএকটা জানাজায় নিজস্ব রঙ লাগিয়ে কারা দখল করে নিচ্ছে আমাদের মৃতদেহ


যোনি, একটা চিৎকারের নাম। মাংস, আরও একটা চিৎকার
এসব চিৎকারে প্রমোদকর বসাতে চাইছেন শাহানশাহ্‌। বসাতে চাইছেন অনাবিল তীর্থস্থান অথবা নবীন টুরিস্টস্পট
ভেড়ার লোম উড়ছে আকাশে, অসংখ্য ভেড়া উড়ছে আকাশে
সাতদিন ধরে পৃথিবী সৃষ্টি করে ঈশ্বর ঘুমোতে গেলেন, আর সেই সাতদিন, হাজার হাজার সাতদিন, অসংখ্য সাতদিন ঘণ্টার মতো বাজতে বাজতে এগিয়ে চলেছে পৃথিবীর দুপায়ের ফাঁকে, এগিয়ে চলেছে এমন একটা অষ্টম দিন আনতে যার সারা শরীর জুড়ে ছড়িয়ে থাকবে রক্তাক্ত পৃথিবীর অন্ত্র পাকস্থলী প্লীহা অগ্ন্যাশয়, আর ক্ষতবিক্ষত যোনি ও মাংসের চিৎকারেও ঘুমিয়ে থাকবেন অভ্যস্ত ঈশ্বর


সূর্যফল। মুখে দিলে গলে যায়। বাস থেকে নেমে পড়ছেন বাসের ছায়া। সিট পরিত্যক্ত। সিট মৈথুনপ্রিয়। নীরব দণ্ডায়মান। সূর্যফল, অকস্মাৎ পক্ব ও গোলাপি। চাকার ব্যবহারে চাকা। অনন্তে গড়িয়ে যায়। যাত্রী বিরুৎজাতীয়
মস্তিষ্কে বসিয়েছি ট্রিগার, বিদ্ধ করছি ওই ছায়া—কেবলই গড়িয়ে পড়ছে, কেবলই রেটিনা
ওই ফোঁটা ফোঁটা ফ্লেভার ভ্যানিলা

হাত ও পায়ের সভ্যতা, আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে ব্যবহারিক উন্মাদনার ভেতর! বটফলের দেশ, অসংখ্য কুন্ঠার দেশ, তোমার হারানো পুঁথির ভেতর সযত্নে ঘুমিয়ে আছে পুরুষালি লোভসিক্ত দাঁত। দংশন প্রসারিত হয়; সমস্ত রাস্তা ও নদীর ভেতর কেবলই দীর্ঘায়িত হয় লালাভ তীক্ষ্ণ দাঁত, আর ঈশান ও নৈর্ঋত থেকে একটানা শুরু হয় নরম মাংসের বর্ষণ


ব্যথা, তৃতীয় ধ্বনি। ওঁকারসহ উঠে আসে। নাভিকুণ্ডে গাঁথা তীক্ষ্ণ নিষাদ। দৃশ্য খাই, আর চরাচরব্যাপী প্রসারিত হয় অসংখ্য পথ। ধর্মের রেফ এসে বিদ্ধ করে তৃতীয় নয়ন, পথ গলে যায়, লালাভ জিভ বেয়ে গড়িয়ে নামে অন্ত্রে
হে তুষার, আগ্নেয় সম্পাত– রক্ত ও ঋণের দেশ
লিপি। দৃশ্যত প্রথমবাদ্য। আর ওই রতিলা—প্রাণের কুচি, ছিটকে এল মাথায়
ওঁ বর্ণে সাঁই, সেও কি টোটেমিক
অশ্রুর রিমেক দেখে হেসে উঠছে বারবার

Facebook Comments

Related posts

One Thought to “সেলাই অঞ্চল”

  1. Lokenath Mukherjee

    Khub bhalo laglo lekhata.. egie cholunn

Leave a Comment