হুল
১.
হে মানবতা, তুমি জানো
এখনো শীতকাল আসেনি
তবুও বহু শরীর
শীতল আলুর গুদামে অথবা
দিনের অন্ধকারে আকাশের নিচে
থরথর করে কাঁপছে
কাঁপতে কাঁপতে ওরা স্থির হয়ে যায়
বহু গল্প ভেসে ওঠে, মিলিয়ে যায়
২.
এক পৃথুলা অন্ধকারে ঘুমিয়ে আছি
কিছু গুলি লক্ষ্যভেদ করে
শরীরের ওপর আছড়ে পড়ল
শরীর ভেদ করে গাছ হল
যার প্রতিটি ফুল
একেকটি সদ্যোজাতের মুখ
৩.
হে ঈশ্বর, মৃত পাতাটির মত স্থির
এক দেশের কথা জেনেছি
শুনেছি সেখানে আগ্নেয়গিরি থেকে
লাভার বদলে রক্ত বেরিয়ে আসে
৪.
ঐ দেখো পিরামিড তৈরি হচ্ছে
প্রতিটি স্তরে গুঁজে দেওয়া হয়েছে মৃতদেহ
বাতাস থমকে গেছে আতঙ্কে
নিশ্চল এক হত্যাপুরীতে
ঐ দেখো সভ্যতার সমাধি তৈরি হচ্ছে
৫.
কিছু বন্ধু আমাকে বলেছে
যুদ্ধের কথা শুনলে যে কলম
উথলে ওঠে
আলোকিত সময়ে কোথায় থাকে
আমি আহত হৃদয়ে
পাখিদের দিকে তাকালাম
একটি মা হারা শিশুপাখি কাঁদছিল
তাদের বাসাটি ভেঙে ফেলেছে
একটি পরিকল্পিত ঝড়
৬.
কীভাবে কাগজ প্রস্তুত হয়
জানার আগে শিশুরা জেনে রাখো
কিছু শব্দ
ভালোবাসা, ফুল, মা এই তিন
শব্দ শেখো আপাতত ।
ভ্রমরের মত ভেসে ভেসে
পরস্পরের কানে বলাবলি কর
ততক্ষণ অবধি, যতক্ষণ না
তোমাদের জিভ হুলে পরিণত হয় ।
৭.
নাহ, আমাদের প্রাণ কাঁদে না
দুঃখ বলতে রজনীগন্ধার সুবাস
দুয়েক ছটাক জোছনা–
খুব সহজে দীর্ঘঃশ্বাস বেরিয়ে আসে
৮.
তীব্র অসুখের পর কিছু লিখলাম
মনের ভেতরে বিড়বিড় করে পাঠ করছি কথামৃত
ভাবছি শিশুরা কখন ভেসে উঠবে আলোর পথে
তীব্র যন্ত্রনায় কেঁদে ওঠার পর চাঁদটি খসে গেল
একটি গোল মাংসপিণ্ড রোজ অন্ধকারে
আকাশ ছিঁড়ে ভেসে ওঠে
আলোর পথে বেঁকে যাওয়া
শিশুদের কথা মনে পড়ে
মৃত্যু বোধ করি