রাহুল পুরকায়স্থ এর কবিতাগুচ্ছ

রঙিন কবিতা এক জল, তরঙ্গজলের ধ্বনি, ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে দেখো তার অঙ্গের বাহার, মৃত্তিকার কাছাকাছি সে-ও দুলে দুলে চলে হাওয়াকলের গায়ে তার রেণু লেগে আছে, রক্তবর্ণ, বায়ুচর, হেলে আছে খানিক উত্তরে এই পথে তিনি আসবেন — ভেবে ভেবে সাজিয়ে তুলেছি ছায়াপথ, নগরসীমান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছি যেন ইহজন্ম, পরজন্ম, ভ্রমজন্মব্যাপী, বাউল, ফকির, খ্যাপা খেপি, মিশে যাচ্ছে অক্ষরে-অক্ষরে শ্বাসমাত্রা প্রলম্বিত, শূন্য এক গ্রামের ইস্কুলে চাঁদ ওঠে! চাঁদের আলোয় বাজে বাঁশি ওই বাঁশি জলধ্বনি, এইমাত্র জেনে বেকুব মাস্টার আমি শব্দরূপে অর্থ দিতে চাই হে তুমি অন্ধের ঈশ্বর আজ আমি নিজেই নিজেকে দেখো কীরূপে…

Read More

Poems of Amelia Walker

Gone. Now. Still. Written on Kaurna Yarta, the lands of the Kaurna people, where I was born and live as a non-indigenous person ignorant of so very much. I was born here, decades gone now, still I have no way of saying where — no words for this red glory I call dirt. But that’s not one, not any of the names to which it answers. Soundless, the mouths of my feet seal over like they were never there — here (true: they never were — whoever heard of feet…

Read More

সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কবিতাগুচ্ছ

পুনর্বার কবিতাগুচ্ছ ১. শীতের সমূহ ভয় থলি ভরে এল এই সন্ধে-শনিবারে সর্পভয় সবুজে সবুজ আর রক্তমাখা ঘোরলাল বেগুনি কালশিটে সদ্য জেগে-ওঠা মুখ ভাঙা ও পাণ্ডুর দ্যাখো দূর থেকে একে বলো মার, বলো সরস্বতীবৎ সাদা কলহের গুণে জিভ পুড়ে যাচ্ছে চুনে, মনে পড়ে কথা সব মনে পড়ে শীতের থাপ্পড় রোমশ দুবাহু আজ ঝুঁকে পড়ছে শীতের বাজারে কী কঠিন পেশি, তাতে ঝুলে রয়েছে খাদ্যাখাদ্যসমুচ্চয়, থলি যে-থলিতে ভরা আছে ছোটো ছোটো অঙ্গরাশি হাসি, বাঁকা একে একে গুনে নিই হিসেব মিলিয়ে গুনে নিই নিজের আঙুল নিমেষে মচকে যাই ভেঙে যাই ব্যথায় ফ্যাকাশে সবজির উৎসব…

Read More

বুধা

বুধা আমাদের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখায়। স্বপ্ন দেখায় সূর্যোদয় দেখানোর। বুধা আমাদের খাম্বা থৈবির কাহিনি শোনায় তার আরোপিত ইংরেজি উচ্চারণে। দুপুরের দিকে আমি লেকটার সামনে চুপ করে বসে থাকি চিল ওড়া রোদের গায়ে গা লাগিয়ে। ঘরে অমলেন্দু ঘুমোয়, তাকে বিরক্ত করতে মন চায় না, অথচ একটা রামধনু এমন উঠেছে যে না ডাকলেই নয়। নৈঃশব্দ্য নিয়ে নয় ছয় খেলি, দরজার কাছে দাঁড়িয়ে একবার রামধনু একবার অমলেন্দু দেখি, ডাকার আগেই যদি রামধনু মিলিয়ে যায়? ডাকার আগেই অমলেন্দু ডাকে, “কিছু বলবি?” আঙুল তুলি আকাশে, রামধনুকে যে রামধনু বলা হয় সেটা ভাবতে সময়…

Read More

শংকর চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

কলঙ্কের কথা গাড়ির বাইরে চাঁদ ভিজে যায় স্নানে তারারা কোথায়? খোলামেলা নিপুণ ভঙ্গিমা চাঁদে শিশিরকণায় মুখ দেখেছিল একবার সে ছিল বর্ষার কাব্য―–কালো রাতে অসুখী শরীর হাত ছুঁয়ে দেখে নেয় শিউলি গাছের ডালগুলি সে ছিল শ্যামলা মেয়ে মুখচোরা এমনই পুতুল কলঙ্কে ফেলেছে আলো বিপুল আভায় তখনও বাইরে চাঁদ মেঘের আড়ালে আঙুল ভিজিয়ে নিয়ে এঁকেছিল ঢেউ স্নান শেষ হলে বারবার রাতগুলো দেখে মনে হবে শূন্যতায় বুঝি গরাদ এঁকেছে কেউ।   রাস্তা রাস্তা থেকে আলো সরিয়ে নিল কেউ বড়ো রাস্তা জুড়ে মানুষের ভিড় গিজগিজ করছে তুমিও লুকিয়ে বারান্দায় কাঁদছিলে সেদিন তোমার মুখ ও…

Read More

পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

শীত এখন আমরা সব ভুলে ভুলে যাই। বয়স হয়েছে। কোনও হুটোপাটি নেই। রয়েসয়ে গল্প হয়। তারিয়ে তারিয়ে। এ ওর সমস্যা বুঝি,সমাধান চাই। আমাদের যৌথ সমস্যা নেই কোনও। আমাদের শীতকাতরতাগুলি ঘুমন্ত এখন বেলা-অবেলার অঙ্ক ভুলে গিয়ে, মুগ্ধ তন্দ্রাতুর সূক্ষ্ম সুতোর কাজে সেজে ওঠে পশমিনা দিয়ে। দূর রুপোলি জুলফির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জ চোখ বলেছে আমায় রোদের ঝালর দেখছি, অন্য কিছু নয় বিদ্যুৎ এলাকা ছেড়ে চলে গিয়ে স্বীকার করেছে, সে এই রোদের খুবই দূরাত্মীয় হয়। ইশারা চিত্রার্পিত ভাষা। এক তুমুল বাইসন। আমার কীলক লিপি। রক্তে লেখা খিদে। যে পালায় স্বপ্নে তাকে বাস্তব অক্ষরে…

Read More

ঋতব্রত মিত্র-এর কবিতাগুচ্ছ

তোমার নয় যাবার দিন তোমার শুধু যাবার দিন, ফেরার দিন নেই আমার খুশি আমি খুশি, খুশি তো অল্পেই কাটাকুটি যোগবিয়োগের এমন বিষম খেলা খেলারামের হুহুঙ্কারে কাটলো সারা বেলা যাবার সময় পিছুডাকের পুরনো অভ্যেসে মিলের থেকে অমিল খুঁজে হদ্দ হলে শেষে আল বেঁধে জল ধরতে গিয়ে জোড়াতালির মাঠে ডানার জখম লুকোয় পাখি উড়ন্ত পাখসাটে ভাব বলতে গিয়ে যদি মুখ ফসকে আড়ি আনবাড়িতে পা দিয়ে ফের মাথায় সারা বাড়ি মুখ ভেংচে বলছো — তুমি বাসি বাসি বাসি তবু আমি ঘৃণা দিয়ে তীব্র ভালোবাসি   ক্রিয়ামাতৃক মুখের কথা খুঁজতে খুঁজতে ঢুকছি তোমার মুখের…

Read More

তপোব্রত মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

১। মায়ামেঘ – ১ ছায়া ঘনাইছে… ঘরে ঘরে যেটুকু অন্ধকার ঢোকে, তার ফাঁকে ফাঁকে ফাঁক গলে বিচিত্র ছবি এসে পড়ে — থুক করে ফেলে যাওয়া দেওয়ালের গায়ে গায়ে লাল পিক এভাবে সম্মান করে নাক চেপে চলে যাওয়াদের, সবটুকু দাঁত বার করে ছোপধরা, যতক্ষণ না মাড়ি গাল ব্যথা হয়ে ফের হাসি থেমে আসে। এমতি ঘনায় ছায়া বাড়িঘরে যেটুকু দেখা যায় তার চেয়ে বেশী চোখ রাস্তায় রাস্তায় আলো খোঁজে, কলকাতার পুজো — পুঁজ হয়ে সাদা সাদা আলো রঙ জ্বলে ওঠে বাজনায় বাজনায়; ঢাকে যে দাঁতন পড়ে সে দাঁতের ঠিকানা মেপে নেবে সাদা…

Read More

বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায়-এর কবিতগুচ্ছ

  এলাম্নি মিট শেষমেশ সে এলো না। আমরা তার হাত ধরে ঝোলাঝুলি করলাম ফেরার রাস্তায় দেখি কড়া মদ্যপ রোদ উদ্যত চাবুকে দুপুরকে পেটাচ্ছে, যে দুপুর তার বউ নয় এই মফস্বলের দুপুর যার কোমরে মেদের ঘামে চিকচিকে হঠাৎ কামনা শান দেওয়া বাড়িগুলোর ঠাণ্ডা মেঝেয় কারা সারি সারি ঘুমোয়? উঁকি দিলাম, অন্ধকারে দেখাই গেলো না শেষমেশ সে এলো না আমরা তার পা ধরে বলতে গেছি “দেহি পদপল্লবম উদারম” কিন্তু তার পায়ে ব্যাখ্যাহীন চোট তার ব্যাণ্ডেজ খুললেই সে কি গন্ধ আর ব্যাণ্ডেজের মধ্যে আমাদের কবেকার একতাড়া চিঠি সেই গন্ধে পুরো পাড়া ওপাশ ফিরে…

Read More

নিউটন – ১০

প্রিঙ্কিপিয়ার প্রেক্ষাপট          ১৬৮৪-র আগস্ট মাস। ঘোড়াটানা একখানি গাড়িতে লন্ডন থেকে কেমব্রিজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বছর আটাশের এক যুবক। জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসাবে ইতিমধ্যে কিছু নাম-ডাক হয়েছে এই যুবকের। লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানী যুবকটির নাম এডমন্ড হ্যালি। ভিতরে-ভিতরে বড় অস্থির হয়ে আছেন। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে তাঁর কিছু জরুরী কাজ আছে। কিন্তু সে-সব নয়, এমন এক প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে যা শান্তি দিচ্ছে না। এ-প্রশ্নের সমাধান তাঁর কাছে নেই। এমন-কি রয়্যাল সোসাইটির সভায় উপস্থিত প্রায় সকল বিজ্ঞানীই নিজেদের অপারগতার কথা জানিয়েছেন। হ্যালি জানেন, এর উত্তর মিলতে পারে…

Read More

সৌমাল্য গরাই এর কবিতাগুচ্ছ

বিভ্রম যতটা সীমানা তার ততদূর নয় আসমান আলোরা মায়ার মৃগ অন্ধকার বনে অতর্কিতে ফাঁদ পাতে দৃষ্টির আড়ালে অনেক ভ্রমণ শেষে ধ্বংসস্তূপে এখনো দাঁড়ালে কেবল বিভ্রমে কেঁপে উঠি, যাকে এতকাল ধরে খুঁজেছি নিজের ভেবে সাক্ষী রেখে নিজস্ব আয়নায় মিলেনি কিছুই তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপ আমিও নকল তাই বিপরীত দিকে আমাকেই ভ্রম ভেবে ছায়া আরও বড় হতে চায়   অভিলেখ বিষাদ শূকরী পুুুষি, দিই তাকে প্রভূত খাবার হাঁটু মুড়ে বসে নখ দাঁতসহ, ক্রমে তার ছায়া অন্ধকারে সবেগে ঝাঁপায়। শেষ অব্দি পৌঁছাতে না পেরে ব্যর্থ ওই লাফগুলি জোড় বেঁধে রমণে বেরোয় ফাঁকা কাচঘরে…

Read More