সব্যসাচী মজুমদার

সব্যসাচী মজুমদারের কবিতাগুচ্ছ

কতটা সিগাল তুমি

কতটা সিগাল তুমি ,সে জানে আমার গুল্ম …
গুল্ম বলতে মেঘ বুঝো ,বুঝো তার কবীরের হাড়
যেন পড়ে আছে মাঠে… মাঠে কত ভোরের মনসা !
মনসা মানেই গাছ … সিঁদুরের ফলা এ ধার ও ধার …

পরনে কয়েক রতি সহজ পাথর
পাথরের নীচে গ্রাম,বিশ্ব সাহিত্যের টুকর টুকর…
— এ তুমি পড় হে, তুমি, কমলা লেবুটি ,
বুঝো পাহাড়ের ওপাশে পাহাড়
পাখি নেমে আসে যেন জীবনে লেখেনি কেউ তাকে …

 

কাকচক্ষু

কাকচক্ষু ফুটে আছে অপর্যাপ্ত ফসলের ক্ষেতে
ঘটল মানুষের শক্তি মানুষের অপরাধ বৃত্তি
ঘটেছে অপরিসীম চিন্তা-ভাবনাময় মনোবল
তখন তোমার ডিম কেনার সময় হয় বুঝি !

তুমি যত মন্দিরের গঠন… প্রণালী প্রধানত …
ধাবমান একটি বৃক্ষ … বৃক্ষের সমস্ত সংখ্যা তুমি…
— এভাবে ভেবেছি বলে ঝিল্লি কেঁপে কেঁপে ওঠে শুধু
কেঁপে ওঠে ভেদ্য পর্দা, অভেদ্য অরণ্যের সড়ক

তুমিও কেবল ঢেউ বিনিময় প্রথার মতন
কত পাখি গুল্ম হয় ! কত চাষী নদীর চলন !
কত কেউ পুড়ে গেলে জল হয় তারার ভেতর ?
সে সব জানার মতো কাকচক্ষু ফুটে আছে ধানে
আমিও প্রেতের পক্ষে দাঁড়িয়েছি পুজোর আবহে

 

দুর্গা রয়ে গেছে

দুর্গা রয়ে গেছে তার গমকে সারঙে
দুর্গাটি রয়েছে কার ততোধিক জলে !
রয়েছে, বয়েছে তার চাঁদ ও পাথর
বয়েছিল গণতন্ত্র — সুফির চাদর…
রয়েছে প্রতিমা ভরা হেমন্তের রঙ
তুমি তার পাখি ? দাও ওড়ার ধরন !

মুছে যাচ্ছে ছেলে হাঁস, দূরের বসত
মাছের ভেতরে ঢোকে মাছের জগৎ
ঢুকেছে পৃথক ঢেউ, তৃতীয় নয়ন …
শিরোমণি,সেরে রাখ শস্য আয়োজন…
ক্ষমা কর রক্তপাতে বনের ভেতর
দুর্গা হয়ে গেছে বৃক্ষ – জোড় ও বেজোড়

এখন সুরের আগে কেউটে জমে থাকে
রজস্বলা হতে দেখি শ্বাপদের মাকে…

 

ভাবতে পারি না

ভাবতে পারি না এই জনপদে এই কোকনদে
বিশালাক্ষীর সব মন্দির মন্দির থেকে
বার হয়ে এল যে সাপের মোহ,সন্ধে হলেই
যাকে কতবার কলা আর দুধ,দুধ আর কলা
ঢ্যামনার ব্যাথা দিয়ে অংশত নিভিয়ে রেখেছি !

যাদের রেখেছি,তার বদলে কী অতিপার্থিব
জেলির বেদনা আমার মধ্যে ধানক্ষেত হল?
ধানক্ষেত থেকে যেতে যেতে প্রিয় কবির অসুখে
ঢলে পড়ে বুঝি তুমিও যাও না রুক্ষ পাহাড়ে!
পাখি লিখে রেখে তলিয়ে গিয়েছ। ডুবে মরবার
পেছনে যতটা বহুমাত্রিক সাদা রং আছে,
তার অশ্রুর অনেক অনেক জগতের বুকে
একটি বিনীত রোদ্দুরে তুমি ব্রাহ্মণ যেন

দাঁড়িয়ে রয়েছ…

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment