প্রচারক উদাত্ত গলার আওয়াজে তারা মন্দির-প্রাঙ্গণের বাইরে এল। রুক্ষ পাথুরে রাস্তাটার উপর সাদা কাপড়ে মাথা ঘাড়। চোখে শেডস। অনাঘ্রাত সেই যুবতীর দল বিস্ময়ে ভেবেছিল তাকে কোনো সন্ত বা প্রচারক, নিদেন তীর্থক। তার পিছন দিক থেকে যখন বেরিয়ে যখন ঘিরে ধরল ছায়ামূর্তিরা তখনও তারা শঙ্কিত হয়নি। প্রচারক ঠান্ডা গলায় তাদের বলল, সঁপো – তারা বোঝেনি – জংলি পোশাকের হাতগুলো তাদের বুক, পাছা থেকে ছিঁড়ে নিতে লাগল আবরণ, দেওয়ালের গা থেকেও যেমন প্রত্যেকটা ইঁট। একখান চেয়ার মাঝখানে রেখে কনচার্তো-র সফল কন্ডাক্টরের মতো ব্যস্ত ছিল সে, উত্তেজিত ও মগ্ন। সার্চ…
Read MoreCategory: মাইলফলক
কৌশিক ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ
সন্ধ্যায়, আনমনে ১ হাওয়ার মর্মবেদনার গায়ে চুম্বনটুকুর রেখে আসে যে রেশ তারে তুমি বীজের সম্ভাবনা দিও প্রেম শিশিরের নিশিডাক শুনে যে জীবন ব্রাত্য রয়ে গেল তার হৃদকমলে তুমি ফুটে উঠবে সন্ধ্যামণি ফুল? এদিকে এ দেহে কৃষিকাজের সম্ভাবনা নেই বলে পাড়ায় পাড়ায় কী ভীষণ বদনাম রটে গেছে বদনখানি তার আলুথালু পড়ে থাকছে বস্ত্রহীনের ডেরায় চোখে একদিন ঘুঙুর বেজেছিল এই তার অপরাধ নিঃশ্বাসে একদিন নদী ডেকেছিল এই তার অপরাধ? আলোর আস্তানা দেখে মাটির ময়লা যে ঝেরে ফেলেনি তার খোঁপায় তুমি একদিন তারা হয়ে দুলো, দুলে উঠবে তো জোনাকি? …
Read Moreসহোদরা
আমাদিগের চক্ষুলজ্জা নাই। দয়িত আলোয় যে অশ্রুকণার দপদপা তাহা গড়াইয়া পড়িলে উৎপন্ন হয় শব্দগুচ্ছ। উহার না আছে আঁধার, না আছে অতল। অক্ষর ছিন্নবস্ত্রা হেতু আপোষে বহন করিতেছে শুধুমাত্র অর্থ; তাও গুটিকতক। ফলত স্নানরতা রাজিয়াকে ‘সুলতানা’ উপাধিতে ভূষিত করিয়া রাবেয়া ভাবিতেছিল ইয়ার্কি। ঠেঁস। যাহার গঠন নভিস নিবন্ধের মতো শীর্ণ, টীকা ও টিপ্পনী নাই; ফলত স্নানঘরে জলের শব্দছটায় সে অনুমান করিতে পারে মাই-এর কাঠামোতে কুঞ্চিত চামড়ার ব্যাভিচার, দুই কুড়ি পেরোয়নি এখনো, ইতোমধ্যে কাষ্ঠ – জলকণা গাত্রে আটকাইয়া যায়, যেন বা বনস্পতির কাণ্ডে পিপিলিকার সারিবব্ধ গমন; ফাটাফাটা রোঁয়া ওঠা সোয়েটার যেমন…
Read Moreতন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ
সময়জ্ঞান চোখ বুজলেই মৃত একটা শরীর। হাত বাড়িয়ে বলছে টেনে তোলার কথা। মৃত, অথচ দেখে মনে হয় ঘুমন্ত—এমন ভুলচুক দিন আমাদেরও কেটেছে অনেক। তালু থেকে ছিটকে পড়েছে জলের ঝাপট। সাড়া না-পেলে সন্দেহ গাঢ় হয়। কান গিয়ে হাজির হয় বুকের ওপর। যে শরীর মৃত, সে কি টেনে তুললে বসে থাকতে পারে? ভাবতে পারে, হাসপাতালের পথেই জীবের ক্রমমুক্তি? সাতপাঁচ ভেবে চোখ বুজে ফেলি। কেউ এসে হাত ধরে টানুক, আমি জানি, বসতে পারব ঠিক। বন্ধুরা পৌঁছয় ঠিকই, দেরি করে খুব— সীমাবদ্ধ শুরুর খানিক পরই বোঝা যায়, এ কোনো নতুন…
Read MorePoems of Barrina South
Cockatoos my eyes caress his limbs diaphanous droplets glisten like a crown on the canopy I press against the cool bark from the valley floor whee-la whee-la whee-la a mournful cry that has circled all day bringing more makarra some land heavy loosen the jewels that shower down onto the nape of my neck others crack pinecones a glimpse of a yellow blush cheek I eavesdrop on clicks and chatter envious of their gentle allopreening as they leave believing I can touch their sombre underbellies reach out I am home…
Read Moreবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অ্যালবাম
কবির কিছু বইয়ের প্রচ্ছদ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কৃত কিছু ফোল্ডার সাহিত্যবাসরের ছবি প্রচ্ছদপটের তথ্যপঞ্জী কাব্যগ্রন্থ / কাব্যপুস্তিকা ১। শিরোনাম : আর এক আরম্ভের জন্য প্রথম প্রকাশ : ২৫ বৈশাখ,১৩৮৮ / মে, ১৯৮১ প্রকাশক : সুরজিৎ ঘোষ, প্রমা প্রকাশনী, কলকাতা গ্রন্থস্বত্ব : রানী চট্টোপাধ্যায় প্রচ্ছদশিল্পী : সুবোধ দাশগুপ্ত মুদ্রাকর : গীতারানী ঠাকুর, জেনুইন প্রিন্টার্স,কলকাতা মূল্য : ছ’ টাকা উৎসর্গ : শ্রী সুখময়…
Read Moreবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর প্রচ্ছন্ন স্বদেশ
দেশ এক দিকে, এবং তার বিপরীত প্রান্তে, বিপক্ষেও বলা যায়, রাষ্ট্র; ব্যক্তি তথা লেখক বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর ভাবনায়, সত্তা দু’টি একে অপরের থেকে বহু দূরে চ’লে গেছিল ব’লেই প্রায় সারা জীবন জুড়ে তিনি এতটা সন্তাপ ভোগ করলেন। ‘মাটি’ শব্দটি বিশেষ প্রিয় ছিল তাঁর, কিন্তু তাঁর কবিতার পাঠক বিলক্ষণ জানেন, শব্দটি ব্যবহার ক’রে কেবল মাটিকে চিহ্নিত করতে তিনি চান নি, এ-মাটি যতটা মাটি ততটাই আকাশ, ততটাই নদী, ততটাই মহানগরীর ফুটপাথে মলিন কাঁথার ’পরে ঘুমিয়ে-পড়া পথশিশু। এ-সমস্তই তাঁর মনের মধ্যেই রয়ে গেছিল শেষ পর্যন্ত, ক্রমে তিনি অনুধাবন করেছিলেন, দেশ যাকে আপন ক’রে নিতে…
Read Moreসত্যিকারের স্বদেশের খোঁজে
জন্মভূমির বর্ণপরিচয় নূতন করে পড়তে বলেছিলেন বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। সমর সেন বা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতো চমক নয়, মামুলিভাবেই শুরু করেছিলেন তিনি, তাতে ছিল আবেগ ও উচ্ছ্বাস, শিথিলতা। তা বেশ গতানুগতিকও। ১৩৫০-এ প্রকাশিত প্রথম বই ‘গ্রহচ্যুত’-তে ছিল অনির্দিষ্ট প্রেমের আকুতি বিরহবেদনা, নিঃসঙ্গতার বোধ। জীবনানন্দ- প্রভাবিত সেইসব দুর্বল পঙ্ক্তি ছিল প্রথাসিদ্ধ ‘তুমি’-র উদ্দেশে। কবির মনোজগৎই তার উৎস, বস্তুপৃথিবীর সঙ্গে তা সম্পর্কহীন। তার মধ্যেই হঠাৎ উঁকি মারে লাঞ্ছিত জীবনের মর্মবেদনা ‘চোখের স্বপ্ন ক্ষুধার আগুনে গিয়েছিল পুড়ে’ (নগরীর চোখে চোখে/গ্রহচ্যুত)‘। ‘নতুন মাস’ বা ‘২৬শে জানুয়ারি’ কাব্যগ্রন্থেই মাঝে মাঝে ধরা পড়ছিল ব্যক্তিগত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসার…
Read Moreশম্ভু রক্ষিতের নির্বাচিত কবিতা
নির্বাচনঃ গৌতম বসু, সেলিম মল্লিক, সঙ্ঘমিত্রা হালদার, অনিমিখ পাত্র। আমাদের প্রেম আমাদের নতুন বাড়ির দিকে আসার পথে পাশাপাশি তুমি তিনটে সিনেমা হাউস দেখতে পাবে, যেখানে হিন্দী আর নোংরা ছবি সব শোতেই দেখানো হচ্ছে। সিনেমা হাউসের নামগুলোও বিশ্রী, নোংরা এবং দীর্ঘ উদীরিত। আর তারপরেই হোটেল, চায়ের দোকান, মনিহারীর দোকান ইত্যাদির ভিড়। অতঃপর মুখোশ ও পরচুলার একটা দোকান, তার পাশে পশ্চিমী মজুরদের একটা খানাঘর, পেঁয়াজিভাজার দোকান, মুদিখানা ― এসবের পাশ দিয়ে ডাকবাংলোর গেট, গেটের পাশে আবার খানকতক বিচিত্র দোকান পশরা, তারপর পেট্রল পাম্প, দুর্লভ কেবিন, সোডাওয়াটারের স্টল, এবং সেই ঘরেই মুদিখানা দোকান,…
Read Moreকবির পোর্ট্রেট
পাহাড়পর্বত, মেঘমালা
শম্ভুদার প্রয়াণে আমি শোকাচ্ছন্ন। তাঁর সম্পর্কে কিছু লিখতে গিয়ে আমার দুচোখ সজল হয়ে উঠছে। তাঁর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আমি এই অচল-জগৎ পরিস্থিতিতে তাঁর শেষযাত্রায় যেতে পারিনি এজন্য মন বিষণ্ণ। সে মন নিয়েই কিছু লিখছি। সে গত গত শতাব্দীর ষাটের দশকের শেষার্ধ। ১৯৬৭-৬৮ সাল। স্কুলের অষ্টম-নবম শ্রেণীর ছাত্র আমি, আমাদের শহরের অগ্রজ কবিতাপ্রয়াসীদের উৎসাহদানে আমি তখন কবিতা রচনায় সবে সচেষ্ট হয়েছি। তাঁরা আমাকে কিছু কিছু কবিতার বই, লিটল ম্যাগাজিন দিতেন। সেসব থেকেই, ওই সময়, শম্ভু রক্ষিতের কিছু কবিতা পড়ি। সোমনাথদা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, রমাদি, রমা ঘোষ, শৈলেনদা, শৈলেনকুমার দত্ত, আমাদের এই শহরে…
Read Moreশম্ভু ও সিকিমের ছাম্ব্ হ্রদ
মেদিনীপুরের মাটি ফুঁড়ে বেড়ে ওঠা কবি- শম্ভু রক্ষিত। প্রাসাদ-পিরামিড-ড্রাগন-গন্ধর্ব অধ্যুষিত এক অলৌকিক বৈভব ও সম্ভোগের জগৎ। তা আকাশে মেঘের সৌধমালা। শম্ভুর ব্যক্তিজীবন নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেন। কিন্তু তার কবিতার কোনো আলোচনা কোথাও দেখিনি। অথচ গত তিন দশকের বাংলা কবিতার ইতিহাস যখন লেখা হবে তখন শম্ভুর কথা আসতে বাধ্য– যা তথাকথিত মূল স্রোতের অনেক কবির বিষয়েই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। যদি ইয়োরোপের ১৯ শতকের নের্ভাল কি ২০ শতকের ডাডাইস্ট কি ফিউচারিস্ট কবিরা এখনও আমাদের কৌতুহল উদ্রেক করে থাকেন, তবে ব্যাপক না হলেও বলা যায় যে আগামী কয়েক দশকে শম্ভু বিষয়েও…
Read Moreএক উদ্বৃত্ত মানুষের কবিতা
শম্ভু রক্ষিতের প্রয়াণের দিন, তাঁরই সমবয়সি একজন কবিকে সোসাল মিডিয়ায় মন্তব্য করতে দেখেছি যে, শম্ভুর মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হল ‘এক অসম্ভবের যাপন’। এবং তারপর আরও অনেকেই ওই কথাটি মাঢ়ীতে চেপে জাবর কেটেছেন। সবারই লক্ষ্য শম্ভুর ব্যক্তিজীবন যাপনের দিকে। এভাবেই আমরা প্রায় সকলেই তাঁর জীবনযাপনে কৌতূহলী হয়ে তাঁর কবিতাকে নজর করিনি সেভাবে। আর তাঁর জীবনানুষঙ্গে যে তাঁর কবিতাকে খোঁজা অহেতুক, তা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। ‘কবির ভিতর-বাহির অপাংক্তেয়’, তাই কবিতাকে জীবনচরিতে খুঁজতে চাওয়া, আসলে কবিতাকেও অপাংক্তেয় করে দেখার দুরভিসন্ধি বই আর-কিছু নয়। অথচ আমরা খেয়াল করলামই না, আমাদের চিরাচরিত কবিতাচর্চার পাশে তাঁর…
Read Moreবাংলা কবিতার স্বাধীন পুরুষ মহাপৃথিবী’র কবি শম্ভু রক্ষিত
একটা গোটা জীবন ছিল কবিতার জন্য উৎসর্গ। শুধু কবিতাকে ভালবেসে পার্থিব সুখকে হেলায় উপেক্ষা করে সুদীর্ঘকাল ধরে নিষ্ঠা ও ধৈর্য্য সহকারে; ঘন্টা বাজিয়ে ছুটন্ত ঢেউয়ের শব্দে বাংলা সাহিত্যে নতুন ভাষা চয়নের মাত্রা যোগ করেছিলেন মহাপৃথিবীর কবি শম্ভু রক্ষিত। তিনি গত ২৯ জুন সকাল আটটায় নিজস্ব বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শুভানুধ্যায়ী, গ্রামবাসী, আত্মীয় পরিজনবেষ্টিত হয়ে পুত্র, জামাতা, এক সাহিত্য সেবকের কাঁধে চেপে মহাপ্রস্থানে চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের ব্যতিক্রমী কবি শম্ভু রক্ষিত। স্থানীয় চাঁপী-পানা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। প্রথাগত শিক্ষার প্রতি তাঁর কোনদিনই আগ্রহ ছিল না। হাওড়ার নরসিংহ দত্ত কলেজে…
Read Moreশম্ভু রক্ষিতের কবিপ্রতিভার রহস্য
‘The poet is like the prince of the clouds who haunts the tempest and laughs at the archer. Exiled on the ground in the midst of the jeering crowd, his giant’s wings keep him from walking.’ — Baudelaire ১৯৭১ সালে প্রকাশিত বইয়ের (‘সময়ের কাছে কেন আমি বা কেন মানুষ’) একটি কবিতায় কবি শম্ভু রক্ষিত লেখেন : ‘রবি ঠাকুর বা নজরুল নই আমি, আমি শম্ভু রক্ষিত :’ এ কবিতাতেই আরও (‘আরামখেকো ঈশ্বরের প্রতি’) পড়ি : ‘আমি একজন কবি, আমি বাংলার কমার্শিয়াল বুদ্ধিজীবীদের গুম করে জখম করে দিতে চাইছি।’ উত্তম পুরুষ…
Read Moreশূন্য-স্থানে তাকাও
নব্বইয়ের কবিতায় যে বিশ্বায়ন এসেছিল, শূন্যের কবিতায় তা যুগোচিতভাবেই সুদূরপ্রসারী । কোনো একটি বিশেষ প্রবণতার দিকে ঝুঁকে দলগতভাবে লেখালেখির উদাহরণ শূন্যে বিরল নয়। শূন্য দশক এই সময়কাল এর মধ্যে অনেকগুলি প্রবণতাকে প্রত্যক্ষ করা যায়। এই বহুমাত্রিক সম্ভাবনা তৈরি করতে পারাই যে কোনো দশকের কবিতাচর্চার সার্বিক সাফল্য। শূন্যে দশকে এসে যন্ত্রসভ্যতার সুফল এবং কুফল দুই-ই মানুষ পেতে শুরু করেছে। যার ফলস্বরূপ ভোগপণ্য, যন্ত্র, পাউচ প্রবণতা মানুষকে সম্যক শান্তি দেয়নি। এখন এই নাথিংনেস যে শূন্যের কবিতায় সঞ্চারিত হবে তাতে বিস্ময় কী ! এই যন্ত্র এবং স্ট্রিট রিয়েলিটি নির্ভর কাব্যচর্চাকে অনেকাংশে ঐতিহ্যরহিত এবং…
Read More“এতই সহজ আমাদের মেরে ফেলা” সাহিত্যে দশক বিলাসিতা ও ‘শূন্যে’র অবস্থান
সৃষ্টির আদিতে শূন্য। অন্তে, অনন্তেও। এখানেই সবকিছুর শুরু। এখানেই শেষ। এত যে শূন্যতা ঘিরে থাকা, তবু শূন্যের প্রতি আমাদের অবজ্ঞা, অচেতনতা, উদাসিনতার বুঝি শেষ নেই। হয়তো এটাই স্বাভাবিক। যা কিছু বোধ বা চেতনের বাইরে, তাকেই ‘অস্বাভাবিক’ বলে দাগিয়ে দেয়া আমাদের ‘স্বাভাবিক’ প্রবনতা। আর সেই ক্ষয়িষ্ণু প্রবনতা ক্রমেই ‘উন্মাদনা’র আকার নেয়, যখন সেই সত্যের প্রকৃত মূল্যায়নে অক্ষম হই আমরা। তা সে দার্শনিক চেতনা, বোধই হোক অথবা বাংলা সাহিত্যের শতক ও দশকের কুম্ভিপাকে পাক খেতে খেতে তিরতিরে, অবিরত জেগে ওঠা ‘শূন্য দশক’ নামক ব-দ্বীপ’টির অস্তিত্ব স্বীকার। কালক্রমে যা বিরাট মহাদেশে রূপান্তরিত হতে…
Read Moreপ্রকৃত বহুরৈখিক ভাষা চরাচরঃ শূন্য দশক
২১ শতকের প্রথম দশক বা ২১ঃ ০ বা শূন্য দশক নিয়ে এই উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশেষত বাংলা ভাষার নিরিখে ভাবতে বসলে প্রথম যে কথাটা মনে আসে সেটা হল তার পূর্বশর্তহীনতা। এই সেই দশক যে তার দু একটি মিসিং লিঙ্ক ছাড়া তার ভাষাকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র করে নিয়েছে। এই সেই দশক যেখানে বাংলাভাষা তার বিভাজিত ভূখণ্ডে সামগ্রিকভাবে দুটি ভাষার প্রবর্তন ঘটিয়েছে। এই পরিবর্তনের সামাজিক ও ঐতিহাসিক উপাদান হয়ত সমাজতাত্ত্বিকের কাজ। কিন্তু কবিতার পরিবর্তনগুলোকে দেখা আমাদের কাজের এক্তিয়ার। প্রেক্ষিত নব্বই দশকের বাংলা কবিতার যে প্রধান বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ ছান্দিক কাঠামোর মধ্যে থেকে বিষয় ভিত্তিক কবিতা…
Read Moreমহাশূন্যের লিটল ম্যাগাজিন
২০০০ সালের মার্চ মাসেই ৫০০০ পয়েন্টের শিখর ছুঁয়ে ফেলেছিল ন্যাসড্যাক। পরের বছরই বিন লাদেনের ফুঁ স্তব্ধ করে দিয়েছিল মার্কিন মুলুক, শিউরে উঠেছিল বিশ্ব। আর, এর চার বছরের মধ্যে, মানে, দশকের প্রায় মাঝামাঝি, ২০০৫ সালে, পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি দেশের মধ্যে যে-খেলা চলত, সেই ক্রিকেটে, শুরু হয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক ‘কু-কুড়ি’ পদ্ধতি। আপাত বিচ্ছিন্ন তিনটি ঘটনা এই ইঙ্গিতই করে যে পুঁজি, সন্ত্রাস, আর বিনোদন – এই তিন মশলায় মাখো-মাখো হয়ে কীভাবে একটা সময়ের ম্যারিনেশন সম্পন্ন হয়েছিল। গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডার চালু হওয়ার পর পৃথিবীর প্রাণীদের সেই প্রথম কোনো সহস্রাব্দের সূর্যোদয় প্রত্যক্ষ করা। আর আশার বেলুন…
Read Moreগোঁসাইবাগানে একদিন
আলাপে বিস্তারে জয় গোস্বামী সঙ্ঘমিত্রাঃ আপনার বইগুলো যদি প্রথম থেকে পড়া যায় ভালো করে তাহলে দেখা যাবে যে একটা বই থেকে আরেকটা বই – জার্নিটা যত এগিয়েছে – অনেক বেশি কমিউনিকেটিভ হয়ে উঠেছে। ব্যতিক্রমও আছে। যেমন ‘আজ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করো’, ‘পাগলী, তোমার সঙ্গে’র পর যখন ‘গোল্লা’ আসছে, সেটা একটা ব্যতিক্রম মনে হয়। জয়ঃ না, ‘আজ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করো’ আর ‘গোল্লা’ একই বইমেলায় একইসঙ্গে প্রকাশিত হয়েছিল। মানে, একইসঙ্গে দু’রকম লেখা লিখেছি। সঙ্ঘমিত্রাঃ আচ্ছা! ‘বজ্রবিদ্যুৎ-ভর্তি খাতা’ তো এর পরের জার্নি। কিন্তু সেটাও অতটা কমিউনিকেটিভ নয় বলে আমার মনে হয়। জয়ঃ …
Read More