রিমঝিম আহমেদের কবিতাগুচ্ছ

  রাক্ষস   তুমি মাংসখেকো এ কথা জানা– কেন তাও পাঠালাম পাগল নিশ্বাস? ভেতরে এতটা রাক্ষস পুষে দুইবেলা তোমার নিরামিষ ভোজন। তোমার জিভ থেকে, লালা থেকে উদগ্র কামনাগন্ধ তেড়ে আসে। দাঁতে মাংসলাগা হাসি। আমি কি বিষণ্ণ হব? আমি কি কেঁদেকেটে মাথায় তুলব পাড়া? ছড়াব আর্তচিৎকার রাত্রির বিষাক্ত ক্ষরণে? দু’হাতে তোমাকে সরিয়ে দিই। বোধের অঙ্গন থেকে উপড়ে নিতে চাইছি সমস্ত কামনাফল। ছুরির ফলার মতো নখ বিঁধে যাচ্ছে কণ্ঠে, নাভি ও ঊরুতে। স্ববিরোধ অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে আমার মুখ। আর হা করলেই হড়বড় করে বেরিয়ে আসছে লালারক্ত। আমি ধুয়ে নিতে চাইছি তাবৎ রক্তরিরংসা।…

Read More

গালিব উদ্দিন মণ্ডলের কবিতাগুচ্ছ

রুহুরোপন অথবা জন্মদিনের কবিতা ভোরের বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে ঘাস । খুলে গেছে আঁতুড়ঘরের জানালার ছিটকিনি । স্নানের পরে মায়ের থুতনির মতো এই ফজরের আকাশ ।পায়রাছানার মতো ফুরফুরে হাওয়া । এক তাল মাটি থেকে এক-আদমের কারখানা । ডারউইনের চ্যাপ্টার হারিয়ে যাচ্ছে-যাচ্ছে-এমন-দিনে নুহ তার নৌকায় তুলে নিলেন রূপান্তরের সন্দর্ভ ।   দুই ছিপছিপে এই ঝুমুর গানটি রাখো অনেক দুরের ক্যারাভানটি তোমার সব জয় করো , তৃষ্ণাটুকু হাঁড়ির সরার গায়ে লেগে থাক শালিক পাখির চোখের মতো এই বিস্ময় একদিন আমরা পেয়ে যাব ব্যাঙ্গাচি কেটে কেটে ফিরে আসছে খোলাম উদোম গায়ের ঘুড়ি পাট শাক…

Read More

পৌষালী চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

ঠিকা শ্রমিকের ইস্তাহার মথুরানগর থেকে বসন্তে আসেনা আর কোনই মস্তান মুরলিবিহীন পথ ছয়লাপ শুধু আজ ছাদ পেটানোর গানে ধীরে ধীরে ভরে ওঠে শহরের মেধাবী শূন্যতা তবু তো সহজ নয় ভাবি বেদনার পরিবর্তে এই নির্মোহ নির্মাণ… মাঝেমাঝে ওদের, কেউ কেউ পড়ে থাকে নষ্ট ঘিলু যেন থ্যাঁতলানো আপক্ক ফল অক্ষিকোটর ছেড়ে ঠিকরানো তৃণগুল্ম- তাকিয়ে থাকা আর প্রিয় স্পর্শহীন কোনো সমাধিস্থল নৌকাপটু ভীল তরুণীকে চেনাতে চাইলে কেন ট্র্যাফিক সিগন্যাল! খ্রিস্টজন্মের কথা চিনার গাছের পাতা, তোমার উড়ন্ত ছায়ার দিকে আমার কেবলই মনে পড়ে ক্রুশ কাঁধে হেঁটে যাওয়া মেরীর সে ছেলেটির কথা গ্রাম নদী কন্দরের…

Read More

রুম্মানা জান্নাত-এর কবিতাগুচ্ছ

`মিস করি` সিনট্যাক্সের বাইরে, তোমাকে ২৮ তোমার শৈশব দেখতে ইচ্ছা করে। পেন্সিলের ভাঙা নিব, কবুতর খুঁজতে থাকা বিকাল আমি কল্পনা করেছি৷ ওই পুরানা গড়ের মাঠ আমার বহুবার দেখা৷ তোমাকে লিখেছি, একটা ছবি হয়ে থাকা শাপলার বিলে কখনোই যাওয়া হয় নি আমার৷ আজ পাশাপাশি থাকার সত্যতা জানি। সন্দেহও৷ জানি, তোমার না তাকানোর ভঙ্গিমা কত যুগ ভারি। তোমার বড়শিতে গেঁথে থাকা বৃষ্টির মাস, বেদেনির মুখ- আমাকে আচ্ছন্ন করে। তরুণ হয়ে আসা মুখ, ভাঙা স্বর আমি শুনতে পাই। মনে হয়, তোমার ছেলেবেলা থেকে একটা বাতাস এসে আমাকে ছোট্ট হলুদ ফুলের মতো দোলায়—  …

Read More

শৈবাল সরকারের কবিতাগুচ্ছ

অসুখের ভ্রমণচিহ্নগুলি ১. বাদবাকি ওষুধগুলোর দিকে চেয়ে থাকি প্রতিটি দিনের জন্য এতোগুলো রঙ মেঝে থেকে ওগরানো জলে গুলে যেতে থাকে দূরে কেউ একজন পাগল হয়ে যাচ্ছে এমন স্বর্গীয় মুখোশের দিনে সেই দিকে ছুটে যাচ্ছে সমস্ত হাওয়াগাড়ি তার পাঁজর ভর্তি গাছপালা নিয়ে ২. তারগুলি ছড়ানো রয়েছে যাতায়াত জুড়ে কবরের বোতাম খুলে উঠে আসা বাতাসেরা সেইসব তার বেয়ে ছুঁয়ে আসে ঢেকে রাখা মুখগুলি। এই তাদের শেষটুকু ছোঁয়াচ রঙচটা অসমান একটা অ্যাম্বুলেন্সে চেপে দিগন্তের দিকে ছুটে চলেছে ৩. দিনকাল মেঘলা হয়ে এলো হাতির পায়ের কাছে বসে আছে নিরীহ শহর এক তার ছেঁড়াখোঁড়া জামাখানি…

Read More

আম্রপালী দে’র কবিতাগুচ্ছ

  হুল ১. হে মানবতা, তুমি জানো এখনো শীতকাল আসেনি তবুও বহু শরীর শীতল আলুর গুদামে অথবা দিনের অন্ধকারে আকাশের নিচে থরথর করে কাঁপছে কাঁপতে কাঁপতে ওরা স্থির হয়ে যায় বহু গল্প ভেসে ওঠে, মিলিয়ে যায় ২. এক পৃথুলা অন্ধকারে ঘুমিয়ে আছি কিছু গুলি লক্ষ্যভেদ করে শরীরের ওপর আছড়ে পড়ল শরীর ভেদ করে গাছ হল যার প্রতিটি ফুল একেকটি সদ্যোজাতের মুখ ৩. হে ঈশ্বর, মৃত পাতাটির মত স্থির এক দেশের কথা জেনেছি শুনেছি সেখানে আগ্নেয়গিরি থেকে লাভার বদলে রক্ত বেরিয়ে আসে ৪. ঐ দেখো পিরামিড তৈরি হচ্ছে প্রতিটি স্তরে গুঁজে…

Read More

রঘু জাগুলীয়া’র কবিতাগুচ্ছ

সারাদিন ১ সারাদিন কীটপতঙ্গের শোভাযাত্রা দেখি পাতায়-পাতায়, এক ডাল থেকে অন্য ডালে, তবু সংসাররূপী গাছ তারও আছে কিছু সংশয় বলো, ভালোবাসা নিয়ে আসে কোন পাখি? কোন নদীর নৌকাগুলি স্মৃতি হয়ে ভেসে আসে? এখানে আলোর ঝর্ণা তোমাকে সাজায় রঙীণ, মাঝে মাঝে সমবেদনার মতন আকাশ নীল দু-একটি প্রজাপতি এদিক-ওদিক উড়ে যায় ওদের পথ হারানোর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখিনি। ২ মোরগের ঝুঁটির মতো বিচ্ছুরিত লাল আকাশ ক্ষীণ একটা রেখায় মিশে আছে বনভূমি এমন একটি নদীর পাশে এসেছি আমি যার বুকের ভিতর পানকৌড়ি, হাসপাখি ডুবে ডুবে খেলা করে আর কূলে কূলে সুন্দরী-বাইন ফল ভেসে আসে…

Read More

অভিজিৎ বেরা’র কবিতাগুচ্ছ

১ ম্যামথের সাদা দাঁত আর শৃগালির— পাতায় পাতায় বুনে যে উষ্ণীষ সে যাবে মৃত পুত্রের মাথায় যে বাজুবন্ধ সে পুত্রীর হাতায় তোল ওদের শোয়াও কবরে। যে খেজুরের বিষে ওরা মৃত— আর সে বৃক্ষে থাকে যে হুর ওকে দিও দাঁতে গাঁথা শকুনির মাথা। শান্ত কর শান্ত কর ওকে কে জানে আরও কত চাই ওর কচি কচি শিশুশব কাঁচা! ২ কপাল পড়তে পারি। যে বালক সামনে দাঁড়াল তার মুখে তাম্বুল সুপারি। তার কপাল পড়তে পড়তে— ভয়ে চোখ বন্ধ করি। সে শকট থেকে মুখটি বার করে। থুতু বাইরে পড়ে। বাইরে থাকা বিরাট কান্ডতে…

Read More

আকাশ রায়ের কবিতাগুচ্ছ

মাস্টারমশাই যত না লিখি তার চেয়ে কাটাকুটি খেলি বেশি ঘুমাবো এবার,না কাটলে শূণ্য পাবো কীভাবে! ধুতির কোঁচড়ে মাস্টারমশাইয়ের ব্যর্থতা উঁকি দেয় প্রণামের অছিলায় দেখেছি কয়েকবার সত্যি বলছি স্যার-আমি কেটে গেছি শূণ্যে ভরিয়ে দিন আমায় তারপর সাদা খাতায় ফুটে উঠুক- এক অস্থির বালিকা যে প্রতিদিন জল দেয়,ছায়া দেয়,মাথায় মাখিয়ে দেয় পাহাড়িয়া ঝুরো মাটি সফলতা কি এতো সহজ মাস্টারমশাই? ভেবে দেখুন তো,পুণ্যের অহংকার বেশী নাকি শূণ্যের…   সার্কাস শরীরে অজানা জ্বর, ভেবে দেখো আজ মিলিত হবে কিনা। বাতাস বেয়ে নেমে আসছে ধূসর সার্কাস।ট্রাপিজের দুপাশে তুমি আর আমি। আমাকে নির্বস্ত্র করে নাচাও তুমি।…

Read More

শৌভ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছঃ

অনন্ত-গাথাঃ একটি অতিবাস্তব উপন্যাসের খসড়া ১ যখন সকাল তাকে, অন্ধকার সমগ্রতা থেকে, সহসা বিচ্ছিন্ন করে পর্দার ফাঁক দিয়ে, সকালের আলো যেভাবে ছেতরে পড়ল মেঝের ওপরে, যেন তাকে ডিমের কুসুম বলে ভ্রম হয়— তেমনি কমলা আর সামান্য আঁশটে গন্ধ, ঈষদুষ্ণ। ডিমের প্রসঙ্গ উঠলে, জন্মের কথা মনে পড়া স্বাভাবিক—ভাবো, সেই আলো, যোনির মাংস-ছেঁড়া, রক্তমাখা আলো, কী ভীষণ যন্ত্রণার, সদ্যোজাত শিশুটির কাছে, যা তাকে কাঁদিয়ে ছাড়ে! এবং, বাধ্য করে শ্বাস নিতে, মায়ের বুকের ওমে, অন্ধকারে ফিরে যেতে প্ররোচনা দেয়! যেন সেই কান্না থেকে মানুষের ভাষার সূচনা— ক্রমশ সমস্ত বোধ, বিপন্নতা, যন্ত্রণার গায়ে পৃথিবীর…

Read More

সুমন সাধুর কবিতাগুচ্ছ

  হাউ আগলি ইউ আর অভ্যাস ভেবে দু’হাতে বড়ো যত্ন করে তোমাকে সরাই। যার একটি হাত ‘শাস্তি’ গল্পের ‘মরণ’-এর মতো নিষ্পাপ। আর একটি ঋতুস্রাব মাসিক ঘোচায়। এখানে অল্পের চেয়েও দামী মাঘ মাস। বুকের কলিজায় লেখা এক মাঘে তো শীত যায় না। কত কত মাঘ গেল। মৃতপ্রায় হয়ে ঘুমিয়ে রইলে। ভেজা ডানা শুকোতে শুকোতে তোমার ছটফটানি। এ কথা মেনে নিলে তোমার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে না। বরং চলো, আরেকবার ডানা ছাঁটি। তোমাকে সরিয়ে ফেলি— যত্নে— যন্ত্রণায়।   স্ট্রেঞ্জ কাপল ফ্রিদাকে দেখেছিলাম দরবেশে যুদ্ধ চলাকালীন। মাথায় গোলাপি ফুল। আঙুলে বাহারি আংটি। ঠোঁটে রক্তজবা।…

Read More

অরিত্র সোমের কবিতাগুচ্ছ

আচ্ছে দিন চাক-ভাঙা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়ছে ব্যারিকেডের ওপর। সবকিছুই দৃশ্যত পরিষ্কার; তবুও লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে হয় ভিড়ের মধ্যে। ঝকঝকে দিনের গায়ে স্ট্যাম্প ফেলো, ঠেলে দাও আন্ডারগ্রাউন্ডে। কুয়োর ভেতর ছটফটিয়ে মরুক পিঁপড়ের দল। আমারও তো বাড়ি আছে— ছেঁড়া পর্দা, আধপাকা বিড়াল আর নড়বড়ে বিছানা…  আলো নিভিয়ে অনেকক্ষণ বসে আছি রাস্তার ওপর। গায়ে এখন রংওঠা রদ্দি গেঞ্জি। কোনো ঢং নেই; পৃথিবী গভীর হলে এখানে সবাই স্বাধীন (?)। সবাই স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত। স্বপ্নের গায়ে একটা লাল ওড়না ওড়ে। স্বচ্ছ, অথচ স্নিগ্ধ। ঠিক যেমন আমার সামনে পড়ে আছে। চারটে কাক তাকিয়ে আছে সেদিকে।…

Read More

সৌমনা দাশগুপ্তের কবিতাগুচ্ছ

মার্জারস্বভাবী  কোঁচকানো তামাকপাতা, শান্ত একটি পাইপ নির্জন চেয়ারে রাখা আছে    নাবিক ডেকেছে এক ধোঁয়ার প্রসবঘরে  প্রপেলারে যাচ্ঞাচক্র, অহো পাঞ্চজন্য শাঁখ                       কী স্পর্ধা, কী স্পর্ধা ব্যাঙাচিও ফাল পাড়ে, সে-ও এক স্প্রিং ইশারায় আমিও নেচেছি কত কত  কুড়িয়ে বেড়াই যতো হরির লুটের খই                       খুচরো বাতাসা    দুপকেটে নুড়ি ভরে নেমে যাব আর্টেজিও কূপে                 ভাবি, আকণ্ঠ স্নান হবে আজ  শ্রীমতী সমুদ্র এসে নাকে চোখে ঢুকে যাবে নোনাবালি, জ্বলে যাবে কর্নিয়া    রেটিনোপ্যাথির দিন। অন্ধ গায়ক গান গায়  গান নয়, চোখ থেকে গড়িয়ে নেমেছে রক্ত                     হেঁটে যায় মীড়ে মীড়ে   পার করো আমারে…

Read More

অমিতরূপ চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

  ইভ আমাদের দুষ্প্রাপ্য উৎসাহের মতো কিচিরমিচির করে উঠছে গাছের অলিগলিতে প্রচুর পাখি। তোমার পিছলে যাওয়া হাত আমি ফিরে এসে ধরতে পারি নি। শুধু মণিবন্ধের উল্টো পিঠে একটা কাচের চুড়ি ভেঙে, ফেটে ক্রুদ্ধ ইন্দ্রধনুর মতো হয়ে গিয়েছিল। নাবালক ফেনাগুলি হতভম্বের মতো তোমার আমার দুজনেরই হাতে লেগেছিল। যেন তারা এই, এই প্রথম কোনও আতঙ্কের মুখোমুখি হচ্ছে। যদিও আমরা জানি সেটা আতঙ্ক নয়, নিছকই একটা ব্যর্থতা। তবু আমাদের মতো পরিণামদর্শিতা বা ভাষাবোধ তো ওই নাবালক ফেনাগুলির ছিল না। ওরা শুধু সিঁড়ির ধাপে নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেখছিল দু’জন মানুষ কেমন মল্লযোদ্ধার মতো আচরণ…

Read More

বঙ্কিমকুমার বর্মন এর কবিতাগুচ্ছ

বঙ্কিমকুমার বর্মন এর কবিতাগুচ্ছ ১. শূন্যময় কত কিছুনা এই দুটি হাতে । ছায়াসম্ভবা দীর্ঘ প্রাচীর জড়িয়ে ধরে বিন্দু মাত্র ধ‍্যানে । জলস্তর ছুঁয়ে থাকে সব আশ্চর্য আশ্রয়ে । তুলে ধরুক নদীর ভাষা অদৃশ্য সমর্থন । আমিও চেয়েছি তার যাপনচিত্রে সরল কক্ষপথ । কিছু শ্রাবণের আবদার ফেরায়নি বরং ঢের দিয়েছে আশ্রয় । কত কিছুই সারল‍্যে জিহ্বায় বসতি গড়ে । খোলামেলা বারান্দার যাপন চাষ লম্বালম্বি ভাবে শুয়ে পড়ে আমার ভেতর, ঘুমনোর ভান করে । আর পোড়বাড়িটা ঝুলে থাকে পৃথিবীর কোনো নবীন দৌড়ের শিকড়ে ।   ২ অবশেষে তোমাকেই ভাবি দূরত্ব বাজিয়ে ।…

Read More

দীপ্তেন্দু জানার কবিতাগুচ্ছ

যা কিছু খনিজ ১. গত জন্মের কান্না গুলো জমা ছিল আপনারই কাছে আপনার আশ্চর্য ব্রণ চাইতে আবার জন্মাইনি অনুষ্কা, এই জন্মে আমার কান্না গুলো ফেরত নিতে এলাম   ২. শুধু একটি হাত- সেও এক আস্ত শরীর শুধু একটি হাত- তারও আস্ত মন আছে একটি হাতের ভেতর অজস্র কান্না আশ্চর্য সব কান্না দিয়ে বানিয়েছি একটি তানপুরা একটি হাত আর ছোঁয়াচে তানপুরার মাঝে কি উহ্য থাকে অনুষ্কা জানে সব উড়ন্ত পাথর     ৩. এত ভাষা – তবু ভাষা নেই যে শব্দেই ভরতে যাই ঘট উপচে ওঠে ওই মেটাফিজিক্যাল হাসির সামনে প্রতিটি…

Read More

পার্থজিৎ চন্দ’র কবিতাগুচ্ছ

রাত, অক্টোবর (উৎসর্গ – হিউ এভারেট)   ম্যাজিশিয়ানের তাঁবু   বিস্ফোরিত ইঞ্জিনভ্যানে ম্যাজিশিয়ানের তাঁবু আসে, কালো কবুতর, রাস্তা ছিল ইঞ্জিনের চাকা দিয়ে বাঁধা। চাকা গড়িয়েছে আর রাস্তা হাড় পেতে অপেক্ষা করেছে রাস্তা গ্রাসে পুরে বহুদূরে ম্যাজিশিয়ানের তাঁবু এসেছিল বিস্ফোরিত ভ্যানে কিছু নেই শুধু মুর্দাখোর তুলে এনেছিল ছায়াকবরের স্নেহ-মাখা স্নায়ু জাদু-টুপি থেকে কালো কবুতর তীব্র সংশয়ে…সুতীব্র পায়রা… নিজের ছায়ার দিকে বারবার ছুটে চলে গেছে, তার গায়ে লেগে থাকা স্মৃতি ঠুকরে খেয়েছে…ছায়া-খতমের খেলা নিয়ে জাদুকর রাত্রি ফুঁড়ে চলে এসেছিল; তার কিছু মৌল-জাদু – ঝরনার জল যেন স্থির হয়ে রয়ে গেছে রাত্রিপাথরের গায়ে…

Read More

দিদিমবাড়ি

দিদিম নামের বাৎসরিক বারোমাসের দানের কলসি। মাটির ছায়ার ভরা ছোটোবেলার গ্রাম। তখন তোমার রঙের বয়স ? দেখা হয়েছে দাদাসোনার সঙ্গে ? না না সে তো অনেক পরে। উঠোনে মা-বাবা আমি ছিলাম সবার ছোটোবোন। জংলা ঘাটে খেলার সঙ্গী সেই কবেকার শ্যাওলা ধরা পুকুর তোমার জন্য বারোমাসের জল পাঠাল আজ… প্রেতের যেন কী নাম ? গোত্র কী যেন? বলুন: শান্তি… শান্তি… পুরোহিতের পাশেই রাখা খাট-বিছানা-বালিশ তার ওপরে ঢেউ-এর মতো এই জীবনের রোদ্দুর— নিজের চোখেই দেখছে নিজের পারলৌকিক কাজ !   এখন যত দুপুরবেলা গ্রামের নাম বিরহী সন্ধ্যাদিরা কেমন আছেন ? সাধনা আর…

Read More

শীর্ষা মন্ডলের কবিতাগুচ্ছ

সংসারগাছ আমাদের সংসার এক প্রাচীন বটগাছ – ঝুড়ি ধরে দোল খায় বাবা এক একটি প্রাক্তন বর্তমান ভবিষ্যৎ প্রেমিকার কথা ভেবে। মা ঠায় মাটি থেকে জল আর খাদ্য তুলতে থাকে। মায়ের শাড়ি খসে পড়া তামাটে কোমর – বাবার নন্দলাল দৃষ্টিতে সমস্ত প্রেমিকার কোমর ঠিক এরকম, অবিকল এক। বাবাকে জল আর খাদ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখবে বলে   দান কিংবা বোবার না না সরু রোগাটে নদীর মতো তোমার চলে যাওয়া পড়ে থাকে। পাড়ের মাটিতে ঘুরে বেড়ানো একজোড়া জুতোর ছাপ আঁকা, এলোপাথাড়ি। আমার ঝাল ঝাল হিংসেমাখানো বমিমাখানো অস্পষ্ট-স্পষ্ট ছাপ। নদীর কান্নামাখানো হাওয়া এসে ভিজিয়ে…

Read More

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

ভাণ্ড দেহভাণ্ড উল্টে যায়, মনভাণ্ড নড়ে। নিজ মুণ্ড কাটা গেছে। ধড় মাঠে চড়ে। মাঠে ঘাস, চোখে ঘাস, শিশ্নে ঘাস লেগে; প্রতিটি শ্মশান ফুঁড়ে গাছ ওঠে জেগে। প্রতিটি রমণ ছিঁড়ে জেগে ওঠে তারা; ঢলে পড়ে মহাকাশ। অথচ পাহারা যতদিন দেহ ছিল, দিয়েছিল হাড়। কিছুই হবার নয়, তবুও খাবার ধড়ের ফুটোয় ঢালি, ধোঁয়া ওঠে খুব। রক্তে ভরা স্নানাগার। আস্তে দাও ডুব। হেঁটে যাই খঞ্জ খই ছড়াতে ছড়াতে যে-যার মায়ের মুখে আগুন ধরাতে। ধড় মাঠে চড়ে। আর দ্যাখে কাটা মাথা– গৌতম স্তনের দুধ। অপত্য সুজাতা।   পাখিসংসার বিকেলের গাছে বসে আমরা ভাইবোনেরা ঠোঁট…

Read More