সুমন সাধুর কবিতাগুচ্ছ

  হাউ আগলি ইউ আর অভ্যাস ভেবে দু’হাতে বড়ো যত্ন করে তোমাকে সরাই। যার একটি হাত ‘শাস্তি’ গল্পের ‘মরণ’-এর মতো নিষ্পাপ। আর একটি ঋতুস্রাব মাসিক ঘোচায়। এখানে অল্পের চেয়েও দামী মাঘ মাস। বুকের কলিজায় লেখা এক মাঘে তো শীত যায় না। কত কত মাঘ গেল। মৃতপ্রায় হয়ে ঘুমিয়ে রইলে। ভেজা ডানা শুকোতে শুকোতে তোমার ছটফটানি। এ কথা মেনে নিলে তোমার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে না। বরং চলো, আরেকবার ডানা ছাঁটি। তোমাকে সরিয়ে ফেলি— যত্নে— যন্ত্রণায়।   স্ট্রেঞ্জ কাপল ফ্রিদাকে দেখেছিলাম দরবেশে যুদ্ধ চলাকালীন। মাথায় গোলাপি ফুল। আঙুলে বাহারি আংটি। ঠোঁটে রক্তজবা।…

Read More

অরিত্র সোমের কবিতাগুচ্ছ

আচ্ছে দিন চাক-ভাঙা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়ছে ব্যারিকেডের ওপর। সবকিছুই দৃশ্যত পরিষ্কার; তবুও লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতে হয় ভিড়ের মধ্যে। ঝকঝকে দিনের গায়ে স্ট্যাম্প ফেলো, ঠেলে দাও আন্ডারগ্রাউন্ডে। কুয়োর ভেতর ছটফটিয়ে মরুক পিঁপড়ের দল। আমারও তো বাড়ি আছে— ছেঁড়া পর্দা, আধপাকা বিড়াল আর নড়বড়ে বিছানা…  আলো নিভিয়ে অনেকক্ষণ বসে আছি রাস্তার ওপর। গায়ে এখন রংওঠা রদ্দি গেঞ্জি। কোনো ঢং নেই; পৃথিবী গভীর হলে এখানে সবাই স্বাধীন (?)। সবাই স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত। স্বপ্নের গায়ে একটা লাল ওড়না ওড়ে। স্বচ্ছ, অথচ স্নিগ্ধ। ঠিক যেমন আমার সামনে পড়ে আছে। চারটে কাক তাকিয়ে আছে সেদিকে।…

Read More

স্ট্যাচু

ভোররাত। নীলার খুব শীত করছিল। সূর্যের আলো চোখে পড়তে ঘুম ভাঙল। চোখ খুলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মাথায় পরীটার মধ্যে নিজেকে দেখতে পেল। পিঠের ডানা হাতের বাজনা সমেত পাথরের শরীর। শীতল। আশ্চর্যের বিষয় হল যে গোটা ব্যাপারটা তে তার যতটা  চমকে যাওয়ার কথা ছিল তার ভগ্নাংশ ও সে চমকাল না। যেন এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। এমন কিছুর স্বপ্নই সে দেখেছিল  নীলাঞ্জনের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া চত্বরে প্রেম করে বেড়ানোর দিনগুলোয়। তফাৎ শুধু নীলাঞ্জনকে আর সে আশপাশে দেখতে পেল না। একটা চিল কোথাথেকে এসে তার হাতে ধরা বাজনাটার ওপর বসলো। চিলের সঙ্গে চোখাচোখি হতেই নীলার…

Read More

জ্বলন্ত অন্তরঙ্গতার পৃথিবী ও কোরাল ব্রাচো

ভাবনার ইঙ্গিত পথেই চালিত হয়। গত কয়েক বছর ধরে স্পষ্ট হচ্ছে আমাদের মাথায় গেঁথে থাকা ঔপনিবেশিক মানচিত্রের স্পষ্টতা। এই যে আমাদের ভাললাগা মানেই ইউরোপ বা তদৃশ ভূদৃশ্যে সৌন্দর্য অনুধাবনা থেকে শুরু করে বাংলা ভাষার ক্রমশ লোগোসেনট্রিক হয়ে ওঠা এবং আমাদের তা মেনে নেওয়া। সুধীর স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই দুনিয়ার আসল মেরুকরণ — ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র এবং অধীনস্ত উপনিবেশ। এই অধীনস্ত উপনিবেশ যত দূরেই চলে যাক তার প্রাক্তন প্রভুর থেকে গায়ে লেগে থাকে উপনিবেশের অনপনেয় দাগ। তার চলন সারাজীবনের অধমর্ণের। আর এইখানেই তার প্রকৃত সংগ্রাম। তার ভাষাকে প্রভুর প্রতীক ব্যবস্থা ( লোগোস)…

Read More

নিউটন-৫

‘থিয়োরি অফ কালারস্‌’ কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির সদ্য গ্র্যাজুয়েট, তরুণ নিউটন আলোর নতুন এক থিয়োরি পেশ করলেন। একান্ত নিভৃতে নোটবুকের পাতায় রচিত হল অভিনব সেই আলোক তত্ত্ব। সুদীর্ঘকালের লালিত মানুষের যে বিশ্বাস – সূর্য থেকে আগত শুভ্র আলো সবচেয়ে খাঁটি, সবচেয়ে বিশুদ্ধ, অর্থাৎ, মৌলিক চরিত্রের, আর তা অন্ধকার ও ছায়ার প্রভাবে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের বলে প্রতিভাত হয় মাত্র, এবং নানা বর্ণের আলো যা প্রকৃতিতে দেখা যায়, সেগুলি সাদা আলোর ‘মডিফিকেশন’ অর্থাৎ অপর কোনো রূপে প্রকাশ ভিন্ন আর কিছু নয় – নিউটন বুঝলেন, এ-সমস্তই ভ্রান্ত ধারণা। সূর্যালোক আদৌ বিশুদ্ধ নয়। সাদা আলো, আদতে…

Read More

দাভিদে কোর্তেসে’র কবিতা

ইংরাজি ভাষান্তরঃ পিনা পিক্কোলো বাংলা অনুবাদঃ অনিমিখ পাত্র   কবি পরিচিতিঃ  দাভিদে কোর্তেসে’র জন্ম ১৯৭৪ সালে সিসিলি’র বেলাভূমি বরাবর লিপারি দ্বীপে। ২০০৪ থেকে তিনি রোমে বাস করছেন। প্রথম কবিতা সঙ্কলন ES প্রকাশিত হয় ১৯৯৮-এ। পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয়েছে   “Babylon Guest House”, “Storie del bimbo ciliegia”, “ANUDA”, “OSSARIO”, “MADREPERLA”, “Lettere da Eldorado” ইত্যাদি আরও সঙ্কলন। কবিতার জন্য ২০১৫ তে তিনি গুরুত্বপূর্ণ Premio Internazionale “Don Luigi Di Liegro” পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি লিখেছেন   “Tattoo Motel” নামে একটি উপন্যাস। প্রকাশিত হয়েছে দুটি ছোটো গল্পের সঙ্কলন ও আরও অন্যান্য গদ্য।  দাভিদের কবিতায় ছোটো…

Read More