নববারোক নির্মাণ অন্তঃভাষাভূগোল ও আমেরিকা

আমেরিকা এক হিমায়িত চিৎকার বলে চিহ্নিত করার পর একটা কাজ আরও বেড়ে যায় এক অদ্ভুত দায় ও সচেতনতা। যে আমি অন্ধের মত স্পর্শে চিনেছি আমেরিকা পণ্ডিতের মত নয় তার কাছে এই অনুভূতি আর কজন বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া খুবই প্রয়োজন। মার্কিন দেশে এত বাঙালি থাকা সত্ত্বেও এই বিষয়টা আমাদের মত গোদা লোকেদের সামনে কেউ তুলে ধরেছেন বলে মনে পড়ে না। কবিতার ক্ষেত্রে কেউ হয়তো ধরিয়ে দিয়েছেন নতুন ধরনের কবিতার আঙ্গিক এর কথা। কিন্তু কেউ ধরিয়ে দেননি ইউরোপীয় ভাষায় লেখা হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা মহাদেশের কবিতা একেবারে তাদের ঔপনিবেশিক দাগ ঘষে-মেজে…

Read More

নিউটন-৪

আপেল পড়ার গল্প ১৬৬৫-র জুন-জুলাই মাস নাগাদ উলস্‌থর্প ম্যানর-এ ফিরে এলেন আইজাক  নিউটন।  মহামারির প্রকোপ এড়িয়ে নিরাপদে  পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন এই খামার বাড়িতে। কেমব্রিজ থেকে সঙ্গে এনেছেন বাক্সভর্তি বই। সেগুলি রাখার জন্য দোতলার একটি ঘরে পাইন কাঠের সেলফ্‌ বানিয়ে নিলেন নিউটন। এখন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী হল সৎপিতা বারনাবাস স্মিথের থেকে পাওয়া সেই ‘ওয়েস্ট বুক’। ক্রমশ যা ভরে উঠতে থাকল নানা রকম সাংকেতিক চিহ্নে, গাণিতিক সংখ্যায় ও জ্যামিতিক চিত্রে।    তেইশ বছরের এই যুবক আর আগের সেই গ্রাম্য আইজাকের মধ্যে এখন বিস্তর ফারাক। নিউটন নিজেকে এখন ‘আইজাক নিউটন অফ উলস্‌থর্প, জেন্টল্‌ম্যান’…

Read More

প্রকৃত সারস

অমলতাস নিতান্ত নিরীহ নয়, সেকথা জানা ছিল। তবুও তো সে বৃক্ষ। সে যে এমন অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, ধারণা ছিল না শুভ্রার। অথচ সে দেখেছে গ্রীষ্ম দুপুরের একাকী ব্যাঙ, কেমন সে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাফে পুকুরের ঢাল বেয়ে উঠে আসতে আসতে হঠাৎ নেই হয়ে যায়… সহসা সাপের মুখ একবার খোলে, বন্ধ হয়… ধীরে ধীরে ফুলে ওঠে তার গলা, ফোলাটা নামতে থাকে ঘাড় বেয়ে, বুক বেয়ে পেটের দিকে আর ক্রমশ ব্যাঙের স্মৃতি মুছে যায় পুকুরের মানচিত্র থেকে। অশ্রান্ত কাঠঠোকরার পার্কাশনেও এমন গ্রীষ্ম শুনেছে শুভ্রা, বুঝতে শিখেছে কখন অদৃশ্য হয় ছাল-বাকলের আড়াল থেকে…

Read More

সৌমনা দাশগুপ্তের কবিতাগুচ্ছ

মার্জারস্বভাবী  কোঁচকানো তামাকপাতা, শান্ত একটি পাইপ নির্জন চেয়ারে রাখা আছে    নাবিক ডেকেছে এক ধোঁয়ার প্রসবঘরে  প্রপেলারে যাচ্ঞাচক্র, অহো পাঞ্চজন্য শাঁখ                       কী স্পর্ধা, কী স্পর্ধা ব্যাঙাচিও ফাল পাড়ে, সে-ও এক স্প্রিং ইশারায় আমিও নেচেছি কত কত  কুড়িয়ে বেড়াই যতো হরির লুটের খই                       খুচরো বাতাসা    দুপকেটে নুড়ি ভরে নেমে যাব আর্টেজিও কূপে                 ভাবি, আকণ্ঠ স্নান হবে আজ  শ্রীমতী সমুদ্র এসে নাকে চোখে ঢুকে যাবে নোনাবালি, জ্বলে যাবে কর্নিয়া    রেটিনোপ্যাথির দিন। অন্ধ গায়ক গান গায়  গান নয়, চোখ থেকে গড়িয়ে নেমেছে রক্ত                     হেঁটে যায় মীড়ে মীড়ে   পার করো আমারে…

Read More

অমিতরূপ চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

  ইভ আমাদের দুষ্প্রাপ্য উৎসাহের মতো কিচিরমিচির করে উঠছে গাছের অলিগলিতে প্রচুর পাখি। তোমার পিছলে যাওয়া হাত আমি ফিরে এসে ধরতে পারি নি। শুধু মণিবন্ধের উল্টো পিঠে একটা কাচের চুড়ি ভেঙে, ফেটে ক্রুদ্ধ ইন্দ্রধনুর মতো হয়ে গিয়েছিল। নাবালক ফেনাগুলি হতভম্বের মতো তোমার আমার দুজনেরই হাতে লেগেছিল। যেন তারা এই, এই প্রথম কোনও আতঙ্কের মুখোমুখি হচ্ছে। যদিও আমরা জানি সেটা আতঙ্ক নয়, নিছকই একটা ব্যর্থতা। তবু আমাদের মতো পরিণামদর্শিতা বা ভাষাবোধ তো ওই নাবালক ফেনাগুলির ছিল না। ওরা শুধু সিঁড়ির ধাপে নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেখছিল দু’জন মানুষ কেমন মল্লযোদ্ধার মতো আচরণ…

Read More

বঙ্কিমকুমার বর্মন এর কবিতাগুচ্ছ

বঙ্কিমকুমার বর্মন এর কবিতাগুচ্ছ ১. শূন্যময় কত কিছুনা এই দুটি হাতে । ছায়াসম্ভবা দীর্ঘ প্রাচীর জড়িয়ে ধরে বিন্দু মাত্র ধ‍্যানে । জলস্তর ছুঁয়ে থাকে সব আশ্চর্য আশ্রয়ে । তুলে ধরুক নদীর ভাষা অদৃশ্য সমর্থন । আমিও চেয়েছি তার যাপনচিত্রে সরল কক্ষপথ । কিছু শ্রাবণের আবদার ফেরায়নি বরং ঢের দিয়েছে আশ্রয় । কত কিছুই সারল‍্যে জিহ্বায় বসতি গড়ে । খোলামেলা বারান্দার যাপন চাষ লম্বালম্বি ভাবে শুয়ে পড়ে আমার ভেতর, ঘুমনোর ভান করে । আর পোড়বাড়িটা ঝুলে থাকে পৃথিবীর কোনো নবীন দৌড়ের শিকড়ে ।   ২ অবশেষে তোমাকেই ভাবি দূরত্ব বাজিয়ে ।…

Read More