বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর প্রচ্ছন্ন স্বদেশ

দেশ এক দিকে, এবং তার বিপরীত প্রান্তে, বিপক্ষেও বলা যায়, রাষ্ট্র; ব্যক্তি তথা লেখক বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর ভাবনায়, সত্তা দু’টি একে অপরের থেকে বহু দূরে চ’লে গেছিল ব’লেই প্রায় সারা জীবন জুড়ে তিনি এতটা সন্তাপ ভোগ করলেন। ‘মাটি’ শব্দটি বিশেষ প্রিয় ছিল তাঁর, কিন্তু তাঁর কবিতার পাঠক বিলক্ষণ জানেন, শব্দটি ব্যবহার ক’রে কেবল মাটিকে চিহ্নিত করতে তিনি চান নি, এ-মাটি যতটা মাটি ততটাই আকাশ, ততটাই নদী, ততটাই মহানগরীর ফুটপাথে মলিন কাঁথার ’পরে ঘুমিয়ে-পড়া পথশিশু। এ-সমস্তই তাঁর মনের মধ্যেই রয়ে গেছিল শেষ পর্যন্ত, ক্রমে তিনি অনুধাবন করেছিলেন, দেশ যাকে আপন ক’রে নিতে…

Read More

সত্যিকারের স্বদেশের খোঁজে

জন্মভূমির বর্ণপরিচয় নূতন করে পড়তে বলেছিলেন বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। সমর সেন বা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতো চমক নয়, মামুলিভাবেই শুরু করেছিলেন তিনি, তাতে ছিল আবেগ ও উচ্ছ্বাস, শিথিলতা। তা বেশ গতানুগতিকও। ১৩৫০-এ প্রকাশিত প্রথম বই ‘গ্রহচ্যুত’-তে ছিল অনির্দিষ্ট প্রেমের আকুতি বিরহবেদনা, নিঃসঙ্গতার বোধ। জীবনানন্দ- প্রভাবিত সেইসব দুর্বল পঙ্‌ক্তি ছিল প্রথাসিদ্ধ ‘তুমি’-র উদ্দেশে। কবির মনোজগৎই তার উৎস, বস্তুপৃথিবীর সঙ্গে তা সম্পর্কহীন। তার মধ্যেই হঠাৎ উঁকি মারে লাঞ্ছিত জীবনের মর্মবেদনা ‘চোখের স্বপ্ন ক্ষুধার আগুনে গিয়েছিল পুড়ে’ (নগরীর চোখে চোখে/গ্রহচ্যুত)‘। ‘নতুন মাস’ বা ‘২৬শে জানুয়ারি’ কাব্যগ্রন্থেই মাঝে মাঝে ধরা পড়ছিল ব্যক্তিগত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসার…

Read More