তথাগত’র কবিতাগুচ্ছ

অহরহ দেবতা আমার ১. কিচ্ছু লিখছি না। হে নাথ, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ঘটে গেলে পরে কিছুই লেখেনি কোনো কবি। হৈমন্তী বা চৈতি – ফসলের এই সুমধুর নামগুলো মানুষের ভাষা থেকে লুপ্ত হয়ে গেছে। কে লেখে? কী লেখে? সমুহ মাত্রাগণনা রীতি মান্য করে তারা ভুল লেখে, মিথ্যে কথা লেখে। ভুল আশা ভুল দ্রোহ ভুল মঞ্চে শৃঙ্গারশতকগাথা। ফুল তার মধু , দিয়েছে, অবিশ্বাসে – সেই কথা লেখো। বাতাস, উদ্গ্রীব বলাকা চঞ্চুতে রেখেছে কোমল স্তন, বলেছে হে কোমলপ্রাণ, বসন্তকর্ণিক, এসো, ছিঁড়ে খাও। – এই অবিশ্বাস্য ছবিটিকে লেখো। কিছুই লিখিনা নাথ। বীরের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাচ্ছে…

Read More

পিনা পিক্কোলো’র কবিতা

অনুবাদঃ অনিমিখ পাত্র কবি পরিচিতিঃ  গুরুত্বপূর্ণ দ্বিভাষিক (ইতালিয়ান ও ইংরাজি) কবি-অনুবাদক-সম্পাদক-সংগঠক পিনা পিক্কোলোর জন্ম ১৯৫৬। তাঁর পরিবারে রয়েছে বারংবার অভিবাসনের ইতিহাস। উচ্চশিক্ষা আমেরিকায়, ১৯৭০-এর উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছাপ ফেলে তাঁর চেতনায়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন ইতালীয় ভাষাসাহিত্য। দারিও ফো’র ওপরে করেছেন মৌলিক গবেষণা। ২০০৩ সাল থেকে পাকাপাকিভাবে ইতালির বাসিন্দা। তাঁর কাব্যসংকলন I canti dell’Interregno প্রকাশিত হয়েছে ২০১৮য়। এছাড়াও তাঁর কবিতা নানান আন্তর্জাতিক সাহিত্যপত্রে এবং সংকলনগ্রন্থে রকাশিত হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক The Dreaming Machine এবং La Macchina Sognante নামক দুই যমজ সাহিত্যজার্নালের।  কবিতা তাঁর কাছে একইসঙ্গে ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রকাশ। ভীষণরকম রাজনৈতিক…

Read More

জন্মান্তর

(১) এ বেটা, এক গ্লাস দে! লোকদুটো মদ খাওয়া থামিয়ে তাকাল বালকনাথ বাবাজির দিকে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না তিনি, ছোট্ট শরীর টলমল করছে অনেকক্ষণ ধরেই। ইতস্তত করতে লাগল ওরা। বালকনাথ চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘কী সোচ্‌ছিস? সাধুকে ফিরাতে নেই। দে জলদি।’ লোকদুটোর মধ্যে যে চেলা গোছের, প্লাস্টিকের গ্লাসে মদ ঢালতে ঢালতে বলল, ‘দিচ্ছি, তবে আমাদের এই বাবুকে একটু আশীর্বাদ করে দাও।’ আংটিভর্তি হাত মাথায়-মুখে বুলিয়ে দিলেন বালকনাথ। ‘আশীর্বাদ আশীর্বাদ! সতীমা’র কৃপায় তোর সব ভালো হবে। খুশ থাকবি তুই। আশীর্বাদ। …আরেকটু জল ঢাল্‌ না বে!’ মদ আর জল মেশানো টইটম্বুর সেই তরল…

Read More

সুজিত মান্না’র কবিতাগুচ্ছ

এইসব ছায়াধ্বনি ১. স্মৃতি তো এক এঁকে রাখা পাহাড়, ঝুলিয়ে রেখেছি দেওয়ালে ঝিনুকের মতো অভিমান তোমার। তাদের গুছিয়ে নিলে নিজেকে মাংসাশী মনে হতে পারে এমনই সব অভিমান ভাঙতে ভাঙতে হেঁটে পৌঁছবো এক মুখ থুবড়ে থাকা একটি সাঁকোর পায়ের সামনে তোমার প্রশ্ন হবেঃ সাঁকোর কি তবে শেষ-শুরু আছে? ধুলো ওড়াতে ওড়াতে তোমার প্রশ্নটিকে ভেঙে ফেলবো ভুল খুঁজতে গিয়ে দেখবো, আমরা একই চাঁদের অংশমাত্র নিজেদের ক্ষত শুকিয়ে নিচ্ছি অন্যের তাপে…   ২. নির্জনতার ভেতর ঘন হয়ে নামছে একটি মস্তিস্ক প্রসূত অন্যায় অন্যায় দেখতে ঠিক সন্ত্রাসবাদের মত তাকে ইন্ধন দাও, মুখের ওপর এঁকে…

Read More

সৌমাভ’র কবিতাগুচ্ছ

আত্মহত্যা আত্মহত্যার সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়, আত্মহত্যার বাড়ি উঁচু দেওয়াল বাই জিরো জিরো ঘুলঘুলিপুর রোড, আত্মহত্যা হলুদজামা পরা এক নাদুস টিকটিকি, ঘুলঘুলি থেকে রোজ মুখ বাড়ায়… তার শীতল বিস্ফারিত চোখে চোখ মেলানোর জন্য মুখ তুলতে হয় শূন্যের দিকে, আপন মনে সে আলোর ম্যাপ পয়েন্টিং করে দেওয়ালে, এই ম্যাপের ভিতরে হুট করে একেক দিন ঢুকে পড়ে আমাদের মন, মন নিয়ে টিকটিকি পাড়ি দেয় মহাকাশে, সমস্ত তারা সেদিন পরে থাকে হলুদ রঙের জামা… মাঝেমধ্যেই দরজা জানালার ফাঁকে অজান্তে আত্মহত্যাকে পিশে মেরে ফেলি … কয়েকদিন পর শুকনো আত্মহত্যা টুপ করে ঝরে পরে মাটিতে…

Read More

সজল দাসের কবিতাগুচ্ছ

জিরোপ্রপাত ১ কান্না ভাঙে না অর্থাৎ জল এক প্রকার মৌলিক দুঃখ হাসির টুকরো ও ধোয়ার শব্দ ফেরত চলে যাচ্ছে পাগলের বাড়ি কী একধরণের অচেনা গ্রাম না মাইক যে ফেটে পড়বে বাবার নামেই   ২ জলের প্রান্ত থেকে কাকে ডাকো পুকুরের মা গড়িয়ে গেলেও তাকে ভুল বলা যায়? তুমি জানো, অদ্ভুতভাবে দুজন মানুষ একই কথা ভাবতে পারে   ৩ টিপের পাতা দেখেই বুঝলাম একধরণের গাছ আর ঘাম বেয়ে সূর্যাস্তের সাপ নেমে আসছিল পিঁড়ির বিয়ের দিকে   ৪ তীব্র বেদানার গান আমি শুনেছি রক্তক্ষর স্রোত কীভাবে গাছের মধ্যে বনের মধ্যে বাকল ডুমুরের…

Read More