হিমালয় জানা

ভোরের প্রথম পঙ্‌ক্তি

আমার ভাষায় আমি নেই, শুধু
আমার বিভ্রম।

বালির চিৎকার সারা দিন।

তবে কি তোমার দিকে যাব? উঁচু-নীচু
টিলার ওপারে কার মন?

এখানে নিজের ছায়া দীর্ঘতম। সন্ধ্যার আকাশ
মৃত্যুপথযাত্রী এক শ্বাপদের মতো

জল খেতে দিগন্তে নেমেছে।

 

থাকো তুমি পতঙ্গ-নজরে

সে কোন্‌ বৃষ্টিতে কালো ডাল নাকি পাতা থেকে
তোমাকে সবুজ চোখে দেখছিল,হঠাৎ

গিরগিটি পেছনে এসে লকলকে আঠালো জিভ হেনেছে বাতাসে

তোমার থাকার জায়গা না থাকলে কোথায় থাকো তুমি?

 

গলা
ফাটিয়ে স্বরের বুনো
শেকড় নেমেছে

পুরোনো বাড়ির
শব্দ-
খসে-পড়া
দৃষ্টি

ঘর
চৌকাঠ পেরিয়ে
চলে গেছে

 

বালিশ তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে
টেবিল ল্যাম্প তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে
সাদা পাতাও আজ ফিরিয়ে দিয়েছে তোমাকে

জানালাও তোমাকে খুলে দেয়নি আর
দরজাও টেনে নেয়নি ভেতরে

সব কিছুর বাইরে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় হি-হি করে কাঁপছ তুমি

একটা ট্যাক্সিও দাঁড়াচ্ছে না

কী মজা কী মজা ব’লে হাততালি দিচ্ছে একটা কাঠবেড়ালি

 

কেননা স্বপ্নের থেকে

নীচু কোনো উপত্যকা নেই

এবং মাটির থেকে নেই কোনো সন্তপ্ত মহিমা

পুরোনো দেওয়ালে রোদ এসে পড়লে তবু এক সকালবেলায়

বাচ্চারা কাকের মুন্ডু প’রে দেখি ছুটে যাচ্ছে নিজেদের ছায়ার ভেতরে

মৃতদের সঙ্গে লুকোচুরি

খেলছে মনে হয়

 

ভোরের প্রথম পঙ্‌ক্তি

তার জন্য টেবিল নিজেই
সাফ হয়ে গেছে আর ঘাসের ভেতরে গুঁড়ি মেরে
এগিয়ে এসেছে এক কঠিন বিদ্যুৎ

গলার ভেতরে দুটো প্রজাপতি, ডানার ধড়ফড়

আঙুলের দীর্ঘতম দ্বিধা

লেখা মাত্র উড়ে যাবে রোদের ভেতরে একে অপরের পিছু, ওরা

ভোরের প্রথম পঙ্‌ক্তি, আমার লেখা না

 

আরও কিছু পাখি প্রয়োজন

তবেই না পাণ্ডুলিপি অর্ধেক পাথর ঠেলে
জেগে উঠবে আকাশের দিকে

ছেনি আর বাটালির আঘাতে জগৎ
কিচিরমিচির ক’রে ডেকে উঠবে

সদ্য-চোখ মেলে
কী খাবে, আমাকে?

সে-প্রশ্ন দূরের, আজ
নিজেকে অস্পষ্ট লাগে শুধু কিছু পাখির অভাবে

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment