১
বিনুনির ভাঁজে রাখা মন ক্লান্ত হয়ে আসে
এত ক্লান্তি, হে পাঠক !
বালিশের তুলোয় ধরে না বলে
সে মিথ্যে মিথ্যে জন্ম দেয় আয়না-সকাল
মিথ্যে মিথ্যে ট্রেনে করে যাওয়া
দু-ধারে জল
জলে পেকে ওঠে তার ঘুম
ঘুমের সন্তান তাকে
হাত ধরে ধরে নিয়ে যায়
সিলিংফ্যানের দিকে
২
আজকাল সিলিংফ্যানই তার সব
তার ঘূর্ণন ঘর্ঘর জমে থাকা ধুলো
সেই ধুলো জড়ো করে করে, বিছিয়ে
তৈরি করা একটা পথ
পথের কিনারে ল্যাম্পপোস্ট
আদিগন্ত সবুজ। রাতের কিছু বমি
প্রতি রাতের এই শ্রমে
তার চিবুকের রঙ নীল হয়ে আসে
৩
আমি কল্পনা করি নীল তার শরীর
লিঙ্গ নীল , নীল বিষাদ
সে যে আদপেই একটা ঘুমিয়ে পড়া জ্যোৎস্নার খিদে
তার সেই বিশ্বাস রাখা আছে মাঠময় শস্যদানার গর্ভে
রোদে যার দেহ এখনও কেঁপে কেঁপে উঠে
ছেড়ে আসে খোলস ।
৪
ভোরকে নজরবন্দি করার একটা রাগ
সে চেয়ে নিয়েছিল।
তারপর থেকে স্বপ্নের মধ্যে নীল কলেজবাড়ি
লাল হয়ে যায়
সব সম্বোধন উল্টো হয়ে হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়
সে আর কোনো স্বপ্ন দেখবে না স্থির করে,
শুধু পাখি গোনে ।
তার ভুল হয়ে যাওয়া রাস্তা কখনও বাড়িতে ফেরে না আর।
৫
মুহূর্তে তাকিয়ে আছ
তাকিয়ে কি ক্ষমার মতই বেঁকে গেলে ?
বেঁকে গেল পথ আর নিঃসঙ্গ শীৎকার
একটা গানের শরীরে
তোমায় জন্ম দিয়ে গেলাম
আর একটা বিস্মৃতির দোলনায়
তুমি এখনও দুলছ…
৬
উত্তর আসে না বলে শুধু শীত করে। শুধু শীত করে বলে উত্তর আসে না।
মফঃস্বলের ফাঁকা ঘরদোর । সাদা পাঞ্জাবী পাজামা, সাদা সাদা চায়ের কাপে ফোঁপানোর শব্দ জেগে ওঠে। গোড়ালিহীন একজোড়া নূপুর হেঁটে বেড়াচ্ছে একা ঘরময় । কে যেন আসবে খুব মাথা ব্যথা কাঁধে ব্যথা নিয়ে।
৭
অসুখের দড়ি থেকে একটা সন্ধে ঝুলে আছে। সন্ধের হাতে কলম। কলমের নীচে পাতা শবের আঙুল । মৃত্যু থেকে মৃত্যুর পর্বে একটা গোটা ট্রেন চলে গেল। শুশ্রূষা দিতে এসেছিল যে তার ভাষা অসাঢ় হয়েছে এতদিনে। নিঃশ্বাসের স্বর থেকে ঝরে পড়ে দাহ , ভোরের স্বপ্ন এতটুকুই তো পারে ,বলো ? শেষবার যদি ডেকে যাই , শুনছ ? শুনতে পাচ্ছ তো ?
৮
মাথার ভেতর চাপ চাপ অক্ষরের বোঝা !
পায়ের কাছে অনন্ত শ্বাস
আর অবরুদ্ধ একটা ঘোরে আমি আটকে পড়েছি ।
সেই ঘোরের মধ্যে এক একটা নীল খাম প্রসব হচ্ছে
নীল খামের নদী ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে
চলে গেছে কোন পথে? কার দিকে?
যে সম্পর্কের কোনও নাম দিতে নেই
Daruun daruun….