সেবন্তী ঘোষ

সেবন্তী ঘোষ-এর কবিতাগুচ্ছ

পাহাড় বিষয়ে আমি যা জানি

বৃষ্টি
বৃষ্টি বড়ো চেনাশোনা এখানে
যে কোন সময় পথ হয়ে ওঠে ঝোরা
আবার বাক ঘুরলেই কোথায় কী?
কম্বলের মতো মেঘের দল ভিজিয়ে দেয়
লাল টুকটুকে নাকের ডগা
মেয়েটির ছাতার নিচে মিহি জল ঝরে
হেয়ার পিনে মসৃন গিয়ার টানতে টানতে
ফাটা জিন্সের প্রেমিক
সংগীতের ধুনে ইশারা দিয়ে যায়-
বৃষ্টির দল ওকে ঘিরে নামে পর্দার মতো সম্ভ্রান্ত
ইয়াকের দুধের ছুরপি আর মোমোর ভাপ নিতে নিতে
টিনের ছাদের ওপর যেই সুর তোলে জল
গিটার ধরবে বলে মগ্ন যুগল, শেষ ট্রিপ ছেড়ে চলে যায়

বাঁধ
ফড়িং জানে ওই শ্যাওলা পড়া জলাধার
বড় শান্ত, যেন লাগাম পরা ঘোড়াটি-
দু’দণ্ড পাড়ে, আগাছার ফুলে শরীর কাঁপে তার
জলাশয় জুড়ে মহাশোল ঘাই মেরে যায়
কচিৎ ঢেউ খেলে বৃষ্টি ফোঁটায়,
বাকিটা সময়, কাটা পাহাড়ের ছায়া পড়ে,
পথের ডিজেল মবিল গলে মিশে যায়
ফড়িঙেরা জানে, মানুষের কেরামতি বড় বেশি দিন নয়!
মূর্খ মানবের মতো জলাধারে নয়-
পাথরে লাফ মারা ঝর্ণার দিকে ডানা মেলে দেয়

 

ধস
ওই পথ যেখানে বেঁকে চুরে গেছে,
আকাশ ঢেকে গেছে মশারির মতো লতায় ,
হাঁ করা মেয়ে তুমি,
চিরকাল পূর্বাপর বিবেচনাহীন
এক মনে মাকড়সা আর হৃষ্ট পিঁপড়ের খেলা দেখছ
বয়স বেড়ে যাওয়া প্রেম সামাল দিতে
অনিবার্য জল- পুষ্প- লতার মাঝে এসে থেমে যাচ্ছো
দেখছো পাগলাঝোরাও প্রৌঢ়যৌবনে
বিধ্বংসী জলধারা রাখার মতো পাত্র না পেয়ে
মাটি খসিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে সমতলে

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment