সাম্য রাইয়ান

সাম্য রাইয়ানের কবিতাগুচ্ছ

 

অন্ধকাল

বেরিয়ে আসতে পারো শামুকী
খোলস ছেড়ে দেখতে পারো
পুরোটা আঁধার — কতোটা জটিল
জ্বালানীবিহীন কী নির্মম এই অন্ধকাল!

আকাশে মেঘ নেই, তবু
পৃথিবীজুড়ে অন্ধকার
নিবিড় অন্ধকার!

 

 

শাদা প্রজাপতি

এইখানে আমি একা, নিঃসঙ্গ পরিব্রাজক।
তারপরও সে আছে এখানেই
মাড়াইকৃত চালের মতো শুভ্র শরীর নিয়ে
এখানেই কোথাও সে রয়ে গেছে
অপ্রকাশিত প্রজাপতি হয়ে।

শাদা প্রজাপতি এক জীবন্ত এরোপ্লেন।
হাত বাড়ালেই তার উন্মাতাল গান
উঠে আসে হাতে কান্নার সুর।

 

 

দৃশ্যের মিউজিয়াম

জীবনকে মনে হয় ছায়াশীতল মিউজিয়াম।
তুমি কি ধ্বংশমতো কারাগারের রক্ষী?
একদিন শাশ্বত হয়ে যেতে পারে
সবকিছু, অযাচিত ভোররাত; ফুটন্ত আগুন।
তীব্র কবিতার মতো নিশাচর পতিতাদের
হাস্যজ্জল কথাবার্তা; এ ওর গায়ে ঢলে
পড়া ঝিনুকের কণা, মিউজিয়ামে জমা
হয় এইসব অগুনতি দৃশ্য।

 

 

দৌড়

দৌড়ে গেলে ‘দৌড়’
ভায়োলিনঅলা পাখিটিও স্থির থাকে না!
ডানামেলা জানালা থেকে উপচে পড়ে
নাচের মুদ্রা; উজ্জল ঘাসফড়িঙের মতো
বিচিত্র রঙের ফোটা — জেগে ওঠে শরীরজুড়ে, আহত
মাছেরা উপেক্ষা ক’রে বেদনার ছায়া
ডানামেলে ভাসে অপর ডানার দিকে।
কিছু ছেঁড়াপাতা উড়ে যায় পুরনো
গ্রন্থ থেকে; শিউলী ফুলের মতো
উবে যায় অস্ফুট স্বরের মানুষ;
ভুল বানানে রচিত হয় একেকটি রাত!
হাস্যজ্জল মাছেদের যৌবনজুড়ে তবু
আমাকে নিয়ে কোনো স্মৃতিকথা নাই!

 

 

আশ্চর্য যাপন

কেন নেমে আসে চিৎপটাঙ
নিস্তরঙ্গ ডেউটিন থেকে মৃদুমন্দ কম্পনে!
কেন ঝরে যায় খেয়াঘাটে ফোটা
শাদা অন্ধকার! জোনাকীরা আলো দিয়ে
বিগলিত মন নিয়ে চলে যায়।
প্রাণের আতঙ্কে প্রাণ
ছুটে পালায়; যায়
ধরাছোয়ার বাহিরে।

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment