সৃষ্টির আদিতে শূন্য। অন্তে, অনন্তেও। এখানেই সবকিছুর শুরু। এখানেই শেষ। এত যে শূন্যতা ঘিরে থাকা, তবু শূন্যের প্রতি আমাদের অবজ্ঞা, অচেতনতা, উদাসিনতার বুঝি শেষ নেই। হয়তো এটাই স্বাভাবিক। যা কিছু বোধ বা চেতনের বাইরে, তাকেই ‘অস্বাভাবিক’ বলে দাগিয়ে দেয়া আমাদের ‘স্বাভাবিক’ প্রবনতা। আর সেই ক্ষয়িষ্ণু প্রবনতা ক্রমেই ‘উন্মাদনা’র আকার নেয়, যখন সেই সত্যের প্রকৃত মূল্যায়নে অক্ষম হই আমরা। তা সে দার্শনিক চেতনা, বোধই হোক অথবা বাংলা সাহিত্যের শতক ও দশকের কুম্ভিপাকে পাক খেতে খেতে তিরতিরে, অবিরত জেগে ওঠা ‘শূন্য দশক’ নামক ব-দ্বীপ’টির অস্তিত্ব স্বীকার। কালক্রমে যা বিরাট মহাদেশে রূপান্তরিত হতে চলেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার- উপেক্ষা সেদিন’ও ছিল, উপেক্ষা আজও বর্তমান। জানি, পরেও তা থাকবে।
১. ‘শূন্যের কোন ক্রাইসিস নেই’
ঠিক এই কথাটিই আপ্লুত কন্ঠে বলে উঠলেন যিনি, তিনি বিতর্কসভার প্রস্তাবের পক্ষে অথবা বিপক্ষের বক্তা নন, তিনি সভা-পরিচালিকা। এই বয়ানে যতটা না ‘শূন্যে’র পক্ষে সওয়াল করতে ওঠা বক্তারা অবাক, তার চেয়েও বেশি অবাক হলেন ‘শূন্যে’র বিরুদ্ধে সওয়াল করতে ওঠা দুই বর্ষীয়ান কবি। ব্যাপার’টা খুলেই বলা যাক।
সম্প্রতি দিল্লীর বাঙালি সাহিত্য মহল আলোড়িত হয়ে উঠেছিল একটি বিতর্কসভা ঘিরে। একটি সাহিত্য উৎসব’কে ঘিরে আয়োজিত হয় ‘সভার মতে নব্বই দশকের কবিতা শূন্য দশকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী’ – শীর্ষক এক বিতর্ক সভার। কপাল দোষে, সেই বিতর্কে প্রস্তাবের ‘বিপক্ষে’ আমাকে সওয়াল করতে বলা হয়। সভা শুরুর আগেই একপ্রস্থ গুঞ্জন ওঠে, আদৌ এই বিষয় প্রাসঙ্গিক কিনা! কিন্তু আয়োজকেরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পরে বুঝেছিলাম, এ বিষয় উত্থাপনের প্রয়োজন ছিল। অগত্যা, পক্ষে ও বিপক্ষে সওয়াল করতে ওঠা বাদি-বিবাদীরা একত্রে কোমর কষেন। কিন্তু অদ্ভুতভাবে দেখা যায়, বিতর্ক নয়, গোটা সভাই যেন ‘শূন্যে’র বিরুদ্ধে অলিখিত ‘জেহাদ’ ঘোষণা করেছে। মতের বিপক্ষে যে কেউ ছিলেন না, এমনটি অবশ্য নয়, তবে তা কতিপয় মাত্র। এই পরিবেশ সত্যি বেদনাদায়ক। প্রস্তাবের পক্ষে এ নিয়ে বলতে ওঠা বক্তারা যুক্তিযুক্ত ভাবে ৯০’র গুনকীর্তন ও ‘শূন্যে’র তুলোধনা করেন। ‘শূন্যে’র পক্ষে সওয়াল করতে আসা বক্তারা (আমি যার একজন) বিনা যুদ্ধে কিন্তু সূচাগ্র মেদিনী ছেড়ে দেননি। কিন্তু মাত্র ৪ মিনিটের বেঁধে দেয়া সময় ও তার মধ্যে যাবতীয় ঢক্কানিনাদ অহেতুক শব্দ কল্পদ্রুমের সৃষ্টি করে। হারিয়ে যায় বহু প্রসঙ্গ। এমনকি, ‘সিনিয়র’দের কথাই ‘শেষ কথা’ এমন একটি চিন্তাভাবনা সামনে রেখে হয় যবনিকা পতন। বলা হয়, ‘শূন্যে’র নাকী কোন ‘ক্রাইসিস পিরিয়ড’ নেই। এহেন মন্তব্যের সামনে অট্টহাসি ছাড়া আর কিছুই পায়না। সহানুভূতি জাগে ‘শূন্য’ দশক নিয়ে এই নজিরবিহীন ‘অজ্ঞতা’র কথা ভেবে। যেন একা গোটা নব্বই দশক বাংলা কবিতার জগতে উঠে আসা যাবতীয় ‘ক্রাইসিস’ সমৃদ্ধ গোবর্ধন পাহাড় কড়ে আঙুলে মাথায় তুলে ধরেছে, আর তার তলায় ‘শূন্য দশক’ আহ্লাদিত হয়ে তাথৈ তাথৈ নৃত্য করছে। ‘সত্য সেলুকস, কী বিচিত্র এই দেশ!’ সেই সময়ে সময়াভাবে না বলা কিছু কথা এই বেলা তুলে ধরা সঙ্গত বলে মনে করি। কারুর পক্ষ নিয়ে বা কাউকে আঘাত দিয়ে লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়, তবু ‘শূন্যে’র আদর্শকে মাথায় রেখে যতটা সম্ভব সত্য-কথনের পথে হাঁটাই আমার উদ্দেশ্য। উদ্দেশ্য এটাও বোঝানো যে কবিতার জগৎ কোন ‘কুস্তির আঁখড়া’ নয়।
২. ‘সুন্দর, কিন্তু নির্বোধ মুখের জয় সর্বত্র!’
বাঙালি বিভাজন বিলাসী। বাঙালি বিভাজন নিয়ে তুলনায় বিশ্বাসী। ‘এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ, তবু রঙ্গে ভরা’। সেই তুলনামূলক বিচারে বাদ যান কেউই। সাহিত্যে উৎকর্ষতা নিয়ে সমানে তুলনা চলেছে রবীন্দ্র-নজরুলে, জীবনানন্দ-বুদ্ধদেবে, সুনীল-শক্তিতে, প্রনবেন্দু-মনীন্দ্রে বা হালে জয়-সুবোধে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই তুলনামূলক মানসিকতা আদৌ বাংলার সাহিত্যজগৎ’কে সমৃদ্ধ করেছে কিনা! আর সেখানেই উঠে এসেছে এক বিরাট, অখণ্ড প্রশ্নচিহ্ন। কালক্রমে, পর্যবসিত হয়েছে দশক দিয়ে দশক ভাঙাগড়ার খেলায়। রবীন্দ্রযুগ বেশি আধুনিক নাকী রবীন্দ্রত্তোর কল্লোল যুগ, ত্রিশের দশক বেশি স্বতন্ত্র নাকী চল্লিশের দশক, পঞ্চাশ আমাদের সাহিত্যের সীমারেখা অতিক্রম করা শিখিয়েছে নাকী ষাট, সত্তরের দশক তার উত্তর আধুনিকতায় বেশি সমৃদ্ধ, নাকী আশির নিস্তরঙ্গে লুকিয়ে আছে জীবনবোধের প্রকৃত হাতছানি – এমন অসংখ্য প্রশ্ন বারবার আমাদের নাড়া দিয়েছে, ভাবিয়েছে, প্রতিক্রিয়াশীল করে তুলেছে৷ কিন্তু প্রশ্ন রয়েই যায়, এই বিভাজন সংস্কৃতির নান্দনিকতা নিয়ে। সম্প্রতি যা প্রবল ভাবে শুরু হয়েছে নব্বই ও ‘শূন্য’ দশকের বাংলা পদ্যচর্চা’কে কেন্দ্র করে।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, আমি বিভাজনবাদে বিশ্বাসী নই। সে ধর্মাধর্মে, সমাজে সংস্কারে বা মানুষে-দশকেই হোক, অথবা সাহিত্য পরিসরে। ইদানিং দশকবিভাজন ও তার গুনকীর্তন নিয়ে বাংলা সাহিত্যে, বিশেষ করে পদ্য সাহিত্যের জগতে যে বিভাজনরেখা টেনে সুনির্দিষ্ট দশক-স্তুতির ‘আত্মঘাতী’ প্রক্রিয়া দেখা গেছে, আমি নিজেকে তার থেকে দূরে রাখতেই ভালবাসী। দশকের মাপকাঠিতে কোন একটি কালখন্ডকে ‘ঔজ্জ্বল্য’দান ও অপেক্ষাকৃত ‘তরুণ’ কোন নব্য সময়কাল’কে ‘ব্যাকফুটে’ ঠেলা-এই প্রবনতাকে আমি কোনভাবেই সমর্থন করিনা। যদিও এটা মনে করি যে দশকবিভাজনের বেশ কিছু সদর্থক দিক ও সমস্যাও আছে।
কোন কবি কোন সময়ে দাঁড়িয়ে কাব্য রচনা করছেন, সেটি গভীর ভাবে তার লেখায় প্রতিফলিত হয়। সেই লেখায় উঠে আসে সময়, দেশ, কাল, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থার তারতম্য। সেদিক থেকে কিন্তু দশকবাদ অবশ্য স্বীকৃত। কিন্তু কবিতাকে বা কবিকে নির্দিষ্ট দশকের আওতায় ধরা সম্ভব নয়, যদি তিনি লেখাকেই উপজীব্য মনে করেন বা যদি তার লেখনী নিজগুণে সময়ের বেড়াজাল অতিক্রম করে বিভিন্ন দশকের পাঠকের কাছে সম্ভ্রম আদায়ে সক্ষম হয়। উদাহরণস্বরূপ, ৯০ দশককে ধরা যেতে পারে। সেই দশক যেখানে বিশ্বায়ন, পন্যায়ন, অর্থনীতি, সমাজবাদ বা উত্তরাধুনিকতার বিরাট রদবদল চোখে পড়ে। চোখে পড়ে কর্পোরেট সংস্কৃতি ও প্রাতিষ্ঠানিকতাও। ৯০’র কবিতা ও কবিদের মধ্যে সেই ‘স্মার্টনেস’ প্রশ্নাতীত। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, ৯০’র প্রথমদিকে কতিপয় কবি তাদের কবিতার মধ্যে ‘চোখধাঁধানো’ দীপ্তির পাশাপাশি স্বচ্ছন্দ ভাবে দর্শন ও বোধের প্রকাশ তুলে ধরতে সক্ষম হলেও, পরবর্তীকালে ক্রমশই যার বিলুপ্তি ঘটেছে। যা উঠে এসেছে তা কবিতা নয়, ‘স্মার্টনেসে’র আলোয় অন্ত্যমিল ও তির্যক মিলের কিছু অট্টহাস্যকর নমুনামাত্র। তবু ৯০ আমাদের ভাবিয়েছে, শিখিয়েছে। চিনিয়ে দিয়ে গেছে কবিতার স্বধর্ম ও স্বর্গারোহণ থেকে বিচ্যুতি কাকে বলে। আর ৭০ ও ৮০ দশকের সূত্রে প্রাপ্তি যে ভুঁইফোড় প্রাতিষ্ঠানিকতার স্বাদ, উক্ত দশকের পদ্যচর্চার কফিনে ঠুঁকেছে শেষ পেরেক। আর ঠিক এখান থেকেই, ঠিক এখানে স্বতন্ত্র ‘শূন্য’কাল।
৩. ‘ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির ধারায় মাতৃস্তন্য ধরা থাকে’
যদি কেউ মনে করে থাকে ‘শূন্য’ দশকের কোন ‘ক্রাইসিস’ নেই, তার প্রতি অনুকম্পা রাখা থাক। যে প্রচন্ড ভাঙনের মুখে ৯০’র যবনিকা পতন, সে মাহেন্দ্রক্ষণে ‘শূন্যে’র পথ চলা শুরু। ‘শূন্য’ কিন্তু কেবলই একটি পদ্যের দশক নয়, ‘শূন্য’ একটি দার্শনিক চেতনা যা ওই প্রজন্মের কমবেশি সমস্ত কবিরাই লালন করে এসেছেন তাদের ভাবনায়, মননে। পরবর্তীকালে যা প্রবলভাবে উঠে এসেছে তাদের লেখাতে। ‘শূন্য’ বহু অলিখিত যুদ্ধের স্বাক্ষী, যে যুদ্ধ ৯০’তে শুরু হয়, অথচ লেখনিতে যা প্রতিফলিত হওয়ার কথা ছিল, আদৌ তা তেমন হয়ে ওঠেনি। সেই সূত্র ধরেই পথচলা শুরু করেছিল কিছু দামাল ছেলেমেয়েরা। একের পর এক ৩’টি গনঅভ্যুত্থান – সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম ও লালগড়ের স্বাক্ষী তারা। স্বাক্ষী থেকেছে #হোক_কলরব বা রাজ্যে হওয়া সারদা সহ একাধিক চিটফান্ডকান্ড ও শিল্পে বিলগ্নীকরনের জেরে নেমে আসা প্রবল বেকারত্ব, দারিদ্র, শিক্ষার বেসরকারীকরন এবং সর্বোপরি সংস্কৃতির নামে কর্পোরেট আধিপত্যে তলিয়ে যাওয়া বাংলার যুবসমাজের কাঠামো। আর ‘ক্রাইসিস’ অতিক্রম করার একমাত্র সহায় রূপে উঠে এসেছে এই দশকে লেখা কবিতা’রা।
এই দশকই নতুন করে কাব্যভাষার গুরুত্বকে মান্যতা দিতে শিখেছে। সর্বগ্রাসী ‘আমিত্ব’ সেখানে অনুচ্চারি। রয়েছে প্রথাগত ‘স্মার্টনেস’ বা ‘ক্রাইসিসে’র ঊর্ধ্বে উঠে দর্শনের খোঁজ। সেই সন্ধানে রয়েছে যে কোন সীমা অতিক্রম করার প্রবনতা। যারা ‘শূন্য’ সম্পর্কে অবহিত তারা খুব ভাল জানেন, নির্দিষ্ট ধরাবাঁধা সংজ্ঞায় আবদ্ধ নয় এই দশকের লেখনী। সচেতন ভাবে তাদের লেখায় নেই অন্ত্যমিল বা তির্যকমিলের প্রচন্ড বাড়াবাড়ি। চটুল, চটকদার শব্দচয়ন বা ‘গিমিক’ বর্জিত সেই কাব্যনির্মান। স্থান পায় চিরকালীন জীবনবোধ। পদ্য-প্রকরন নিয়ে আসক্তি, দর্শন বা ভাবের অগভীরতা, কৃত্রিমভাবে চেস্টিত সেখানে উধাও। স্থান পায় প্রায় সবকিছুকেই নস্যাৎ করার প্রবনতা, অথচ কালাকাল বর্জিত নয় তা। নতুন কাব্য ‘শরীর’ নির্মাণের আনন্দ সেখানে লক্ষনীয়।
কাব্যিক দর্শন বা বিনির্মাণের পাশাপাশি ‘শূন্য’ই দেখিয়েছে যূথবদ্ধতা থেকে কীভাবে দূরে থেকে কী করে ‘স্বতন্ত্র’ স্বর সৃষ্টি করা যায়। দল নেই তাই দলাদলি নেই, ‘দাদা-দিদি সংস্কৃতি’ সেখানে অনুপস্থিত তাই নেই ‘দেশ’-বিদেশের পত্রিকায় লেখার চাহিদা, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তাই অনেকবেশি ‘ওপেন ফোরামে’ কবিতার ‘ময়না তদন্তে’র জন্য তুলে ধরতে এরা ভয় পায়না। নেই কোন বিশেষ রাজনৈতিক বা দলগত মুখোশ বা আনুগত্যের প্রতি ঝোঁক। কোন আন্দোলন বা ক্যাম্প অথবা প্রাতিষ্ঠানিকতার প্রতি আকৃষ্ট না হয়েও যে উত্তাল লেখালেখি করা যায়, তা এই দশকের নবীন কবিরাই দেখাতে পেরেছেন। তাই কোথায় কী ছাপা হচ্ছে, না হচ্ছে সেই বিষয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। পূর্ববর্তী দশকের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েও, নিজের স্বাভাবিকতা বা স্বতন্ত্র স্বর ধরে রাখতে পেরেছে। রয়েছে ভীষন ভাবে শিকড়ে ফেরার তাগিদ। এই শিকড়ের প্রতি ‘শূন্যে’র টান, তাদের আত্মসমীক্ষার প্যারামিটার গড়ে দেয়। সেই আত্মপরিচয়ের সূত্র ধরে আবার উঠে আসে দর্শনের আলো, পদ্যচর্চার এক নতুন আলোকজ্জল অভিযান।
৪. ‘সমস্ত পৃথিবী আজ ঝুলন্ত কলোনি হয়ে আছে…’
এ জীবন ‘শূন্য’ ও ‘শূন্যতা’ নির্ভর। কিন্তু শূন্যেরও নিজস্ব কাঠামো ছিল, আছে থাকবে। তাই একই সাথে থাকবে শূন্যের সংরক্ষকেরাও। একবিংশ শতাব্দীর কিছু তরুণ প্রাণ, যারা ‘শূন্যে’র প্রকৃত মূল্যায়ন করা শুরু করেছে। শুরু করেছে তাদের কলম দিয়ে, রচনার মাধ্যমে। তাই এখনই তাদের মূল্যায়ন কোন প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিয়ে সম্ভব নয়। সেই তুলনা, কালের উদভ্রান্ত গড্ডালিকায় অচিরেই ভেসে যেতে বাধ্য। এখনো সেই সময় আসেনি। তাদের সেই সময় দিতে হবে। হয়তো সেই কারনেই ‘শূন্য’ দশকের কোন নির্দিষ্ট কবির কথা উল্লেখ করা সম্ভব নয়। তবু যারা লিখছে, তারা লিখুক। সময় ছেনে একদিন তারা ‘শূন্যে’র কালখন্ড নির্ধারণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। পূর্বসুরীদের সূত্রে প্রাপ্ত ‘ক্রাইসিস’ ভেঙে নতুন করে বাংলা পদ্যসাহিত্যের নির্মাণ তারা করবেই। বাকী টুকু রাখা থাক সময়ের হাতে। সেই নির্ধারণ করবে কেমন হবে ‘শূন্যে’র অবয়ব, কাব্যনির্মাণ ও দর্শনের শরীর। সেদিন সেই ‘শূন্যতা’র শরীর আমার কম্পিত হাতে স্পর্শ করবো, আর বুঝবো –
“শরীর থেকেই উঠে আসে সমস্ত কথা
সমস্ত কথাই তবু শারীরিক নয়…”
Facebook Comments