অপরাহ্ণ সুসমিতো

আমার হাতে হোক রাত্রি রচনা

দুপুর গনগন করে বিদায় দিয়ে দিতে হয়, রাখা যায় না… রাখার কিছু নাইও… ছবির মত জীবন না। জীবন শুধু বিদায় দিয়ে দেয়ার। ভালোবাসি না এমন ভান করার। জড়িয়ে না ধরার। গায়ের গন্ধ না নেয়ার। বৈশাখের দুপুর খুব গনগন করতে জানে।

আর ওর তো মনে কোন প্রেম নাই! সত্যি কথা প্রেম নাই। অনেকটা সাধু সন্ন্যাসী টাইপ, ওর কোন শারীরিক অস্থিরতাও নাই, প্রায় ভগবানের মতো। এইজন্যে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আমার অস্থিরতা কমছে কিন্তু মায়া বাড়ছে। আমার মনে হয় ও একটা রাজহাঁস, ওর লম্বা গলা, নরম পেট…

ওর পেটে চুমু করতে ইচ্ছা করে, কিন্তু পারি না। ওর এসব ইচ্ছা করে না। দিন দিন আমরা বন্ধু বন্ধু গোলাপ ফুল হচ্ছি। আমার মনে হয় ওরে ছাড়া আমি কী করে বাঁচব বাংলা সিনেমার মতো। আর ওর মনে হয়: আচ্ছা, ও থাকলে ভালো হতো, কিন্তু নাই তাতে আমার চলবে না তা না।

ওকে আমি বাবাই ডাকি। আমার স্বামী এবং আমার বাবাকেও ডাকি বাবাই।

সুবর্ণ (গতকাল আপনাকে যার কথা বলেছিলাম) আমাকে চড়ুইপাখি ডাকে… তারপর বলে আল্লাদি। ডাকে ঘুড্ডি, সোনাও ডাকে…আরো যা মুখে আসে তাই। ডাকাডাকির কোনো গুগল নেই।

এইসব ডেকে ডেকে আমরা শৈশব ফেরাই। এই যে আপনাকে এতো সব লিখছি, বলছি..কেন কে জানে! লেখকদের নাকি সব কথা বলতে হয় না। লিখে ফাঁস করে দেয়। আপনি আমাকে নিয়ে লিখবেন? 

আমার স্বামী অস্ট্রেলিয়া যাবে এই জুনের ৬ তারিখ। আমার বন্ধু সুবর্ণের একটা বিয়ে দিতে পারলে খুব ভালো হতো। কিন্তু ও বিয়ে করবে না। কেন তা আমি জানি না।

ওর মা বাবা অস্ট্রেলিয়া থাকে, বোন ও। ওর মা ফোন করে কাঁদে। বিয়ে করতে বলে সুবর্ণকে।

একা থাকতে চায় সুবর্ণ, তার প্রেম প্রত্যাশী কতো মেয়ে আছে তাদের কাউকে বিয়ে করে ফেললেই পারে। করে না। এই মে মাসের ১২ তারিখ ওর ৩৩ শেষ হলো। আর ২ বছর। এর মধ্যে না করলে ধরে নিতে হবে বিয়ে নাই কপালে।

আজকে একটা মজার ব্যাপার শুনলাম। সুবর্ণের এ পর্যন্ত যত মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়েছে সবাই ওর চেয়ে বয়সে বড় এবং সবাই হয় বিবাহিত নয়ত অন্য কারো সাথে এনগেজড!

এইটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পুরানো তথ্য। আমি বয়সে ছোট এবং কঞ্জুগাল লাইফ নিয়ে সুখী আর আমার সাথেই তার দ্রুততম সময়ে সম্পর্ক। এখন এমন আন্তরিক হইছে যে ও খুব কমফোর্ট ফিল করে আমার সাথে আর বলে যে আমি ওকে বুঝি। বলে ও আর আমি প্রায় এক‌ই রকম, অক্ষম বুদ্ধিমান… কিন্তু আমি একটু অস্থির এইটাই তফাত….

এই যে দেখেন আমার মোহন ভাই এবং তার বউ…এক ফ্রেমে আটতেছে না তারা, দুজনের কী রকম সাইজ। হিহিহিহি..
মানুষরে সুখী দেখতে কী ভালো লাগে…!

এরকম সংসারী, প্রেমময় বউ…

আপনারও একটা বৌ ( বৌ নাকি বউ?) থাকুক…সংসারী প্রেমময়… থাকবে জানি…। কবে বিয়া করবেন বলেন তো?

মানুষের সুখী হওয়াই দরকার। দরকার হইলে সুখ ডাউনলোড কইরা সুখী হওনের দরকার। আপনার বিয়া হইলে অনেকেই খুশী হবে…আমি হব সবার থেকে বেশি… সত্যি কথা… আচ্ছা ২ বছর সময় দেয়া হলো। মনে থাকে যেন !

আপনার জন্য তো গামলা বউ দরকার। গামলা বউরা ভালো হয়। নরম। হুমায়ূন আহমেদ মার্কা।

আপনিও তো নরম…।

নাহ, ওইটা মায়ায় ভাবলাম আপনাকে নরম।

কিন্তু আপনি আসলেই নরম।  যা অদ্ভুত! ওহ…মনে পড়ে যাচ্ছে আদর আমার সোনাটা…নরম সবকিছু লুকায়া রাখে…কেউ জানে না! আমি জানি শুধু…আমার গায়ে লেগে আছে নরম টা…আমার রাজহাঁস টা! চুমু সব নরমে…কষ্ট দিয়েন না, না খাওয়াইয়া রাখবেন না, নিজেরে আর কাজ শেষ হলে কোলে আমার আসবেন…চুপচাপ ঘাড় গুঁজে কোলে আসবেন…কোন বিষাদের কথা না…আঙুল বুলায়া বিষাদে বিষাদে কাটাকাটি খেলব অনেক আদর জমা করে রাখছি…।

এই শহরে সব আছে। ঘুষ আছে, চাপাতির কোপ আছে, বজ্রপাতে মানুষের মরণ আছে। সরকারি দল করলে ক্যাসিনো আছে। হলে হলে টর্চার সেল আছে। শুধু আদর নাই। আমার রাজহাঁসটা না খায়া রোদে রোদে একা ছোটে, আমার ভালো লাগে নাকি?

এই যে আল্লাদি কনভারশেসন আমিই সব বলি, আপনি বলেন না। তাতে আপনার নিষ্কাম কর্মের থিয়োরিতে ভাটা পড়বে বোধ হয়। 

থাক, বেশি আল্লাদ করে ফেলছি আজ।

আমি বহু দিন সেক্স করি নাই। যৌনাকাঙ্ক্ষা জমে জমে পাললিক শিলা হয়ে আছে। যার কারণে অস্থিরতা। মন খারাপ। হঠাৎ মনে হলো আই সুড বি প্র্যাক্টিক্যাল। আবুল হাসানের কবিতা পড়ে তলপেটে মন খারাপ মোচড় দিয়ে উঠতেই পারে, কিন্তু এই গ্রহের একটা প্রাণি মাত্র আমি, একটা মেশিন, আই নিড সেক্স। মাস্টারবেশন করলাম লাইক আ গুড গার্ল। গট অর্গাজম ফর ফাইভ টাইমস। তারপর মনে হলো মানুষ কেঁচো হয়ে জন্মালেই পারতো।

এই পাঁচ বার অর্গাজম পেতে যদি কোন ছেলে মানুষের সহযোগিতা নিতাম, কী একটা ধস্তাধস্তি পরিস্থিতি দাঁড়াত, কী ইগো, কী লাভ ক্ষতি সামাজিকতা অসামাজিকতার হিসাব! তারপর যদি কপাল আরও মন্দ হতো মানে ছেলেমানুষটি যদি আপনার মতো কেউ হতো যার জন্য আমার বোকা বোকা আবেগ কাজ করে সেক্ষেত্রে তো আমার মান সম্মান শেষ! আপনি মানে ঐ সহযোগী লোকটি কেন আমাকে ভালোবাসে না তাই ভাবতে ভাবতে আর স্বেচ্ছা অপমানে ভুগতে ভুগতে আমার গাধা মেয়েজন্ম ফুরিয়ে যেত।

তারচেয়ে কেঁচো ভালো। ইগো নেই, প্রেম নেই।

কার যেন চুলের ফিতার মতো একটা নদী ছিল আমাদের গ্রামের বাড়ি। বাড়ির পাশে কলাবেণীর মতো প্যাঁচানো আমার জীবন যাপন। মানুষ আছে ঘর আছে তবু আমি হাহাকার নিয়া ঘুম যাই, কাজ করি। ভাবতে থাকি আমার মানুষ শরীর। 

রান্নার চ্যানেল আমার বেশ প্রিয়।

আমার খুব কৌতূহল হয় যে কিভাবে একই দেশের মানুষ হয়েও হিন্দু আর মুসলিমের রান্নার এত পার্থক্য!

এমন যদি হতো যে বাঙলাদেশের সব অঞ্চলের অথেনটিক লোকাল রান্নার রেসিপি সংগ্রহ করতে পারতাম! ইশ একটা যদি বই করা যেত! আমি নিশ্চিত দারুণ অজানা সব রেসিপি বেরোবে।

আর মজার ব্যাপার হলো গরীব মানুষের রান্নাই ঘুরেফিরে ঐ অঞ্চলের অথেনটিক রান্না। সব দেশেই। পরে বড়লোকেরা সেগুলো মোডিফাই করে প্রেজেন্টেবল করে তোলে। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পুলি পিঠা ভালোবাসে না, রেস্টুরেন্টে বসে মোমো খায়।

আচ্ছা এই সব কথাই কি আমি আপনাকে আগেও বলেছি! তাই তো মনে হচ্ছে।

কাকরোল দিয়ে মৌরলা মাছের পাতলা ঝোল, পাটশাক মুচমুচে করে ভাজি, উচ্ছে দিয়ে ডাল আর সাথে বিন্নি ধানের ভাত। এই খাবার কেউ সামনে দিলে আপনি কী তাকে ভালোবাসবেন না? খাওয়া শেষে ঘরে পাতা দই আর তারপর একটা সিগারেট। 

কাল রাতে খেতে বসে আর্ট ফিল্মের নায়িকাদের মতো কাঁদলাম। মানে এরকম কান্নায় চোখ দিয়ে পানি পড়ে কিন্তু কোন আওয়াজ হয় না। 

সেদিন ফোন ধরলেন না। এখনো ধরেন না। আমার বাবা মাঝখান থেকে মরে গিয়ে বুঝিয়ে দিলেন আসলে কেউ পরাণ হয় না। শুধু আষাঢ় এর মতো বিভিন্ন নামে ডাকার ইচ্ছা।  আসলে কারো কোন নাম হয় না।

পুরুষের হরমোনাল চক্র এটা আমি ভেবেছি অনেক, আসলেই হয়? কোন আর্টিকেল থাকলে আমাকে পড়তে দিবেন। মানুষ সবাই ৯৯.৯ ভাগ সেইম জিনিষ, মানে প্রাণি হিসেবে একই, পৃথিবীর সব মানুষ সেই অর্থে ফ্যামিলির মতো।

পিরিয়ডের আগে আমার যে ভয়াবহ মানসিক পরিবর্তন হয়, এরকম কিছু ছেলেদের না থাকলে তো ছেলেরা মেয়েদের থেকে অনেক আলাদা, যা হবার কথা না। সেজন্য আপনার কথা বিশ্বাস যোগ্য। আমার পিরিয়ডের আগের দুই দিন আমি অন্য মানুষ, একদম অন্য। গতকাল থেকে সেই দুইদিন শুরু হয়েছে, আমার শরীর একটা হঠাৎ ভল্কানোর মতো আচরণ শুরু করেছে। কাল আমি কতবার মাস্টারবেট করেছি জানেন?  ৬! এবং তারপর নিজের যোনির কাছে স্যরি বলেছি যে আর পারবো না এবং সে তখনও অসুখী এবং বিরক্ত। 

স্বাভাবিক সময়ে এটা ভাবা যাবে না। মেজাজ খিটখিটে হওয়া কান্না পাওয়া তো আছেই। অদ্ভুত এবং অসহ্য। 

ছেলেদের এত তীব্র না হলেও কাছাকাছি কিছু থাকা উচিৎ।

আচ্ছা দুনিয়াটা পিতৃতান্ত্রিক না হলে আমি যদি চাইতাম, আপনি কি আমার শিশুর বাবা হতে রাজি হতেন? সেক্ষেত্রে সে মেয়ে কেমন হতো দেখতে? তাকে ঠিকঠাক মার্ক্সবাদ শেখাতে পারতাম? আবার বুর্জোয়াঁ ফেমিনিস্ট হয়ে যেত না তো!

দেখা গেল বড় হয়ে লিবারটারিয়ান বুর্জোয়াঁ ফেমিনিস্ট হয়ে গেল। জোর তো করা যাবে না। তবে প্রচুর তর্ক করব। কোন ছাড় নেই। 

আচ্ছা অন্য কথা বলি। আপনি চিনি এবং টক দই বাদ দিয়ে পারবেন রান্না করতে? খুব সহজ।

কোন রান্নায় অতিরিক্ত মশলা দেওয়া যাবে না। আপনি বাসায় রান্না করেন? আসলেই রান্না করেন? না করলে কেমন হলো!

আজকাল বাংলাদেশের ছেলেরাও মানে মেয়ে পটাতে দাড়ি রাখে, ছোট বাচ্চার ডায়পার পাল্টায়। জিমে যাওয়া ছেলেরা বাধ্য হয়ে কিছু কিছু রান্না শিখছে। মানে তাদের সাথে যদি কোন মেয়ে অফিসে দেখা করতে যায় বা বাসায় হয়তো তখনো “সব” হয়ে যায়নি, সেরকম পরিস্থিতিতে, এই ছেলেরা খুব হন্তদন্ত হয়ে একটা কাজ করে, চা বা কফি বানায়ে খাওয়ায়। 

আমি আগে ইমপ্রেসড হতাম। পরে বুঝলাম এরা এটা রপ্ত করেছে। এরা মোচার ঘন্ট রাঁধতে পারবে না। তবে সেটাও ভালো। 

শোনেন, পুঁজিবাদ না গেলে সম্পত্তির উত্তরাধিকার না গেলে, ব্যাক্তিগত সম্পত্তির বিলোপ না হলে, বাচ্চা পালন সামাজিকভাবে না হলে, পুরুষ নারীকে নিজস্ব সম্পত্তি ভাবার সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারবে না। ঐ উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট এগুলো ছাড়া হয় না। সেদিন আপনার সুবন্ধু নবনীতা চৌধুরীর পোস্টে আমি এসব লিখতে পারতাম। পরে ভাবলাম লিখে লাভ নেই সে বুঝবে না বা ভুল বুঝবে। 

ব্যক্তি মালিকানার দুনিয়ায় মানুষ তার বউ বা বরকে ব্যক্তিগত প্রোপার্টি ভাববে না এই দাবি করা হাস্যকর। মানে ছেলেমানুষেরা সব খারাপ হয়ে গেছে তা না তো। 

মানুষ কোন বিষয়েরই গভীরে কেন যেতে চায় না? মানুষের কি ঘুম পায়?

শোনেন না, শুক্রবার সকালে কেমন বিদেশ বিদেশ লাগে। রাস্তায় গরীব মানুষ নেই, ট্রাফিক কোলাহল নেই। সুন্দর বিল্ডিংগুলোর মাঝে মাঝে শরতের আকাশ ঝকঝক করছে। আমরা শুক্রবার সকালে নিজেরা আলাদা আলাদা জগৎ করে নেই। কেউ কারো এটেনশন চাই না। আমাদের একসাথে থাকাটা অদ্ভুতভাবে অতিরিক্ত প্রগতিশীল হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। মনে হয় ক্রমাগত ছবির হাটে আড্ডা দিয়ে যাচ্ছি। বেশ কয়েকটা বছর হতে চললো এখনো তো আশ্চর্য আর সবার মতো সংসার করা হলো না। বাচ্চা কোনদিন হতে পারে এটা ভাবতেই পারি না। বড় হচ্ছি না কেন! আমার কলেজের ক্লাসমেটদের দুইটা বাচ্চা।  বাড়িতে গেলে আমি আপনাআপনি ভাইয়ের মেয়ের সাথে খেলা শুরু করে দিলাম, তার বুদ্ধিও আমার কাছাকাছি। আমি কি আর বড় হব না?

****

ধুস শালার নিস্কাম ভালোমানুষের জীবন। মনে হচ্ছে ভালো মানুষ হইলে পুণ্য। কেউ যেন তার পুরষ্কার নিয়া খাড়াইয়া আছে..

আজ যাই ?

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment