রাহুল পুরকায়স্থ এর কবিতাগুচ্ছ

রঙিন কবিতা এক জল, তরঙ্গজলের ধ্বনি, ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে দেখো তার অঙ্গের বাহার, মৃত্তিকার কাছাকাছি সে-ও দুলে দুলে চলে হাওয়াকলের গায়ে তার রেণু লেগে আছে, রক্তবর্ণ, বায়ুচর, হেলে আছে খানিক উত্তরে এই পথে তিনি আসবেন — ভেবে ভেবে সাজিয়ে তুলেছি ছায়াপথ, নগরসীমান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছি যেন ইহজন্ম, পরজন্ম, ভ্রমজন্মব্যাপী, বাউল, ফকির, খ্যাপা খেপি, মিশে যাচ্ছে অক্ষরে-অক্ষরে শ্বাসমাত্রা প্রলম্বিত, শূন্য এক গ্রামের ইস্কুলে চাঁদ ওঠে! চাঁদের আলোয় বাজে বাঁশি ওই বাঁশি জলধ্বনি, এইমাত্র জেনে বেকুব মাস্টার আমি শব্দরূপে অর্থ দিতে চাই হে তুমি অন্ধের ঈশ্বর আজ আমি নিজেই নিজেকে দেখো কীরূপে…

Read More

সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কবিতাগুচ্ছ

পুনর্বার কবিতাগুচ্ছ ১. শীতের সমূহ ভয় থলি ভরে এল এই সন্ধে-শনিবারে সর্পভয় সবুজে সবুজ আর রক্তমাখা ঘোরলাল বেগুনি কালশিটে সদ্য জেগে-ওঠা মুখ ভাঙা ও পাণ্ডুর দ্যাখো দূর থেকে একে বলো মার, বলো সরস্বতীবৎ সাদা কলহের গুণে জিভ পুড়ে যাচ্ছে চুনে, মনে পড়ে কথা সব মনে পড়ে শীতের থাপ্পড় রোমশ দুবাহু আজ ঝুঁকে পড়ছে শীতের বাজারে কী কঠিন পেশি, তাতে ঝুলে রয়েছে খাদ্যাখাদ্যসমুচ্চয়, থলি যে-থলিতে ভরা আছে ছোটো ছোটো অঙ্গরাশি হাসি, বাঁকা একে একে গুনে নিই হিসেব মিলিয়ে গুনে নিই নিজের আঙুল নিমেষে মচকে যাই ভেঙে যাই ব্যথায় ফ্যাকাশে সবজির উৎসব…

Read More

শংকর চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

কলঙ্কের কথা গাড়ির বাইরে চাঁদ ভিজে যায় স্নানে তারারা কোথায়? খোলামেলা নিপুণ ভঙ্গিমা চাঁদে শিশিরকণায় মুখ দেখেছিল একবার সে ছিল বর্ষার কাব্য―–কালো রাতে অসুখী শরীর হাত ছুঁয়ে দেখে নেয় শিউলি গাছের ডালগুলি সে ছিল শ্যামলা মেয়ে মুখচোরা এমনই পুতুল কলঙ্কে ফেলেছে আলো বিপুল আভায় তখনও বাইরে চাঁদ মেঘের আড়ালে আঙুল ভিজিয়ে নিয়ে এঁকেছিল ঢেউ স্নান শেষ হলে বারবার রাতগুলো দেখে মনে হবে শূন্যতায় বুঝি গরাদ এঁকেছে কেউ।   রাস্তা রাস্তা থেকে আলো সরিয়ে নিল কেউ বড়ো রাস্তা জুড়ে মানুষের ভিড় গিজগিজ করছে তুমিও লুকিয়ে বারান্দায় কাঁদছিলে সেদিন তোমার মুখ ও…

Read More

পূর্বা মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

শীত এখন আমরা সব ভুলে ভুলে যাই। বয়স হয়েছে। কোনও হুটোপাটি নেই। রয়েসয়ে গল্প হয়। তারিয়ে তারিয়ে। এ ওর সমস্যা বুঝি,সমাধান চাই। আমাদের যৌথ সমস্যা নেই কোনও। আমাদের শীতকাতরতাগুলি ঘুমন্ত এখন বেলা-অবেলার অঙ্ক ভুলে গিয়ে, মুগ্ধ তন্দ্রাতুর সূক্ষ্ম সুতোর কাজে সেজে ওঠে পশমিনা দিয়ে। দূর রুপোলি জুলফির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জ চোখ বলেছে আমায় রোদের ঝালর দেখছি, অন্য কিছু নয় বিদ্যুৎ এলাকা ছেড়ে চলে গিয়ে স্বীকার করেছে, সে এই রোদের খুবই দূরাত্মীয় হয়। ইশারা চিত্রার্পিত ভাষা। এক তুমুল বাইসন। আমার কীলক লিপি। রক্তে লেখা খিদে। যে পালায় স্বপ্নে তাকে বাস্তব অক্ষরে…

Read More

ঋতব্রত মিত্র-এর কবিতাগুচ্ছ

তোমার নয় যাবার দিন তোমার শুধু যাবার দিন, ফেরার দিন নেই আমার খুশি আমি খুশি, খুশি তো অল্পেই কাটাকুটি যোগবিয়োগের এমন বিষম খেলা খেলারামের হুহুঙ্কারে কাটলো সারা বেলা যাবার সময় পিছুডাকের পুরনো অভ্যেসে মিলের থেকে অমিল খুঁজে হদ্দ হলে শেষে আল বেঁধে জল ধরতে গিয়ে জোড়াতালির মাঠে ডানার জখম লুকোয় পাখি উড়ন্ত পাখসাটে ভাব বলতে গিয়ে যদি মুখ ফসকে আড়ি আনবাড়িতে পা দিয়ে ফের মাথায় সারা বাড়ি মুখ ভেংচে বলছো — তুমি বাসি বাসি বাসি তবু আমি ঘৃণা দিয়ে তীব্র ভালোবাসি   ক্রিয়ামাতৃক মুখের কথা খুঁজতে খুঁজতে ঢুকছি তোমার মুখের…

Read More

তপোব্রত মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

১। মায়ামেঘ – ১ ছায়া ঘনাইছে… ঘরে ঘরে যেটুকু অন্ধকার ঢোকে, তার ফাঁকে ফাঁকে ফাঁক গলে বিচিত্র ছবি এসে পড়ে — থুক করে ফেলে যাওয়া দেওয়ালের গায়ে গায়ে লাল পিক এভাবে সম্মান করে নাক চেপে চলে যাওয়াদের, সবটুকু দাঁত বার করে ছোপধরা, যতক্ষণ না মাড়ি গাল ব্যথা হয়ে ফের হাসি থেমে আসে। এমতি ঘনায় ছায়া বাড়িঘরে যেটুকু দেখা যায় তার চেয়ে বেশী চোখ রাস্তায় রাস্তায় আলো খোঁজে, কলকাতার পুজো — পুঁজ হয়ে সাদা সাদা আলো রঙ জ্বলে ওঠে বাজনায় বাজনায়; ঢাকে যে দাঁতন পড়ে সে দাঁতের ঠিকানা মেপে নেবে সাদা…

Read More

বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায়-এর কবিতগুচ্ছ

  এলাম্নি মিট শেষমেশ সে এলো না। আমরা তার হাত ধরে ঝোলাঝুলি করলাম ফেরার রাস্তায় দেখি কড়া মদ্যপ রোদ উদ্যত চাবুকে দুপুরকে পেটাচ্ছে, যে দুপুর তার বউ নয় এই মফস্বলের দুপুর যার কোমরে মেদের ঘামে চিকচিকে হঠাৎ কামনা শান দেওয়া বাড়িগুলোর ঠাণ্ডা মেঝেয় কারা সারি সারি ঘুমোয়? উঁকি দিলাম, অন্ধকারে দেখাই গেলো না শেষমেশ সে এলো না আমরা তার পা ধরে বলতে গেছি “দেহি পদপল্লবম উদারম” কিন্তু তার পায়ে ব্যাখ্যাহীন চোট তার ব্যাণ্ডেজ খুললেই সে কি গন্ধ আর ব্যাণ্ডেজের মধ্যে আমাদের কবেকার একতাড়া চিঠি সেই গন্ধে পুরো পাড়া ওপাশ ফিরে…

Read More

সৌমাল্য গরাই এর কবিতাগুচ্ছ

বিভ্রম যতটা সীমানা তার ততদূর নয় আসমান আলোরা মায়ার মৃগ অন্ধকার বনে অতর্কিতে ফাঁদ পাতে দৃষ্টির আড়ালে অনেক ভ্রমণ শেষে ধ্বংসস্তূপে এখনো দাঁড়ালে কেবল বিভ্রমে কেঁপে উঠি, যাকে এতকাল ধরে খুঁজেছি নিজের ভেবে সাক্ষী রেখে নিজস্ব আয়নায় মিলেনি কিছুই তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপ আমিও নকল তাই বিপরীত দিকে আমাকেই ভ্রম ভেবে ছায়া আরও বড় হতে চায়   অভিলেখ বিষাদ শূকরী পুুুষি, দিই তাকে প্রভূত খাবার হাঁটু মুড়ে বসে নখ দাঁতসহ, ক্রমে তার ছায়া অন্ধকারে সবেগে ঝাঁপায়। শেষ অব্দি পৌঁছাতে না পেরে ব্যর্থ ওই লাফগুলি জোড় বেঁধে রমণে বেরোয় ফাঁকা কাচঘরে…

Read More

দেবব্রত কর বিশ্বাসের কবিতাগুচ্ছ

তোমাকে বলছি, নিজেকে বলছি ৬. বিকেল আর সন্ধের মাঝে যে অন্ধকার সেখানে যখন অঝোর বৃষ্টিপাত হয়, ঠিক তখন সেই আবছায়ার ঘন শীতল হাওয়ায়, বিছানায় শুয়ে শুয়ে তোমার কথা মনে পড়ে আমার মনে হয়, বুকের ভেতরটা একটা ভিজে মাঠ বৃষ্টির জল পড়ে পড়ে নরম হচ্ছে মাটি আমি আর টাল রাখতে পারি না কিছুতেই জল কতরকমের হয় আমি কি জানি না? শুধু কিছুতেই বুঝতেই পারি না কতটা ডুবে গেলে অন্ধকার সয়ে যায় কীভাবে ঘুমোলে নিজেকেই মনে থাকে না আর?   ৭. মাঝেমধ্যে পাগল পাগল লাগে আমি একা একা আর নিতে পারছি না…

Read More

নীলাব্জ চক্রবর্তী-র কবিতাগুচ্ছ

  সিনট্যাক্স ভাবতে ভাবতে একটা অ্যালগরিদম সরে পড়ছে দু আঙুলের ফাঁক দিয়ে গলে যাওয়া মানে জ্যোৎস্নার সিনট্যাক্স ভাবতে ভাবতে উপকূলবর্তী শব্দটার ঘ্রাণ কেমন ফারাক এনে এতদূর দৃশ্যচেতনায় বাউন্স করছে একটা কাগুজে ইশারা মাংসের শব্দে শব্দে যে স্মৃতি এক ঘটমান বর্তমান ক্রিয়া হয়ে…   রঙ এক ফ্রেম রঙ এক ফ্রেম ছিঁড়ে ফেলছে জলে পড়া একটা দিনের ভেতর বোটানিকা বোটানিকা উচ্চারণে পাতার বিজ্ঞাপন শান্ত একটা পতাকায় সরে যাচ্ছে একটা ব্যালান্সিং অ্যাক্ট খুব ফিকে ছায়া খুলে ভাঙা ভাঙা লাইন পড়েছে পোড়া ভাষায় যা কিছু জন্মদাগ পর্যন্ত চকোলেট ক্ষেতের আরও ডানদিক বরাবর জ্বর আসার…

Read More

শ্রীদর্শিনী চক্রবর্তী’র কবিতাগুচ্ছ

বর্ষার লেখা ৩ আকাশে প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়, তবুও আষাঢ় তুমি ইদানিং হারিয়েছ পুরাতন গ্লোরি। শহরে কদমের ফুল এখন বাড়ন্ত আর বিরক্ত মুখের কাছে হেরে যাচ্ছে সুখী বর্ণমালা। তাও এই বিকেলের নিজস্ব গহ্বরে ফিরে ঠুমরির বিলাসিতা করি আমি ক্লান্ত নাগরিক – দেশ যে রাগের নাম তাকে ভাঙা যায়নি এখনও।   ৪ বুগেনভিলিয়ার ডাল পাতাশূন্য পুঁতে দিয়ে অপেক্ষায় আছি গোলাপি দুপুরের। কাঁটার স্পর্শে যে ব্যথা – বলে দেয় কিছু তবু হল – তার। এ ঋতু টুকরো থেকে গাছ হয়ে ওঠার কথায় সম্ভাবনার মত মায়া ছড়িয়েছে মাটিময়। তুমি তাকে ভালোবাসো – অপেক্ষা করো দুটি-একটি…

Read More

অনিন্দিতা গুপ্ত রায়-এর কবিতাগুচ্ছ

প্রকৃতি, পরমা এক নিজেকে পড়তে পড়তে প্রতিবার খুঁজে পাই নদীর ওপর ঝুঁকে পড়া গাছ বেগুনী বেগুনী ফুল, কালচে পাতায় ঘুম, মৃত্যুজটিল ফাঁদ। আমার আঙুল সেই গিঁট খুলে খুলে ঘুম দিতে চায়। অবিন্যস্ত মায়া থেকে কাচপোকা বেছে রাখে কলসির অতল গভীরে, গর্ভগৃহে। ভেজা গামছায় ঢাকে গতরাত্রের পান্তা ডোবানো টকজল। কোথাও বৃষ্টি এলে এ পাড়ায় নদী ফুলে ওঠে। কাত হয়ে থাকা নৌকোর খোলে স্যাঁতসেঁতে শীতলপাটির খুলে যাওয়া লেখার পাতার মত অবিকল। পান্ডুলিপির গায়ে জমে ওঠা বাস্পবিতান, মেঘপুরাণের ইতিকথা, জলভারনত অক্ষরমালা। সন্ধ্যাসকাল তবু দেওয়ালের কাছে যাই অভ্যেসবশে। জানলাবিহীন তার দৃষ্টি ছাড়িয়ে উঠে যাওয়া…

Read More

দীপ্তেন্দু জানা’র কবিতাগুচ্ছ

বাকিটা অস্পষ্ট থাক ১) আমারই রচিত রহস্যে আমিই ফেঁসে গেছি জাল ফেলে বসে আছে জেলেরা এত সুর কোথা থেকে আসে ভেবেছো কি তোমাদের বলছি শোনো প্রিয় সন্তান মহামস্তিষ্ককে প্রণাম কর সোজাসাপটা বলছি শোনো প্রিয় সন্তান সব উত্তর জানতে নেই ২) প্রশ্ন একটা পথ উত্তর তাকে সমাপ্ত করে আমাদের ভেতর অপেক্ষা আর অপেক্ষার ভেতর আমরা হেঁটে বেড়াই রহস্য একটা পথ রহস্য তাকে লম্বা করে উদযাপন কর এই রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য নয় ৩) মহাসমারোহে হাঁটো হাঁটতে হাঁটতে নিজের সাথে দেখা হয়ে যাবে ঠিক নিজেকে আর ব্যাখ্যাতীত মনে হয় না খুঁজে পেয়েছি মেধাফুলকি…

Read More

দিব্যেন্দু দলুই-এর কবিতাগুচ্ছ

০.০১ শাপলার বেদনা যেথা রূপ হয়ে ফুটে আছে, সেইখানে মজে গেল ঘুণে-ধরা শালতির গলুই পরিহাস ছলকে ওঠে জোছনার, নির্জন ঢিবির খেদ বিহ্বলতা এনে দেয়— ঝিনুকের বোবা ঘুম, নক্ষত্রের নীচে গূঢ় কালো জলের নির্বন্ধ, টানা ঝিঁঝিঁডাক শুনে যে-শ্রমিক নেমে গেল গহীন পাতালে, তার বুকের কাদায় শিঙিমাছ মরে গেছে বহুদিন: মেয়েটি বাসন মাজছে আঘাটায় বসে দু-চোখে তমালছায়া, থুতনিতে লাজুকতম তিল, ঝুড়ি হাতে জোছনার দশক ডিঙোচ্ছে হাওয়া দিয়েছিল সে আমার অসুখে শেকড়বাটা লেপে কোনো একদিন আমি তার গোলাপি নরম ঠোঁটে রেখেছি বিষের নীল, আজও রাত গেলে বেগনি আভায় ফুটে ওঠে সেই প্রেম শালতির…

Read More

গৌতম চৌধুরী’র কবিতাগুচ্ছ

অপরগুচ্ছ ১. উঁচুনিচু সাত রকম অন্ধকার। নিজের ছায়াও অচেনা ঠেকিতে পারে। ওদিইকে খেলার প্রহর গড়াইয়া যায়। অবশ্য, খেলিতেই হইবে, এমন কোনও মাথার দিব্য কেহ দেয় নাই। ঘরের কোণে থুম ধরিয়া বসিয়া নেশাভাঙ করিলেই বা কাহার কী! তুই বেটা মর্‌, মরিস না কেন – বলিয়া ঘুলঘুলির ফাঁক হইতে শাপান্ত করিবে একটি ঘাঘু মাকড়সা। সে ভাবিতেছে, তাহার বাড়া ভাতে বুঝি ছাই পড়িল। ঘর-দুয়ার ফাঁকা থাকিলেই তাহার পোয়াবারো। একটু পরে ছাদের কার্নিসে বসিয়া জ্যোৎস্না ভাঙিতে বসিবে পরীর দল। ঘুলঘুলির ফাঁক হইতে উপুড় হইয়া তাহাদের ঠ্যাঙের দুলুনি দেখিবে মাকড়সা। তাহার দৃষ্টি অতটুকুই। ঠ্যাঙের উপরে…

Read More

কুন্তল মুখোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

প্রস্তাব শরীর কেমন আছে ? এ কথার উত্তরে বারবার বলেছি ‘ সুধা তোমাকে ভোলেনি’, দেখো মেনোপজ সন্ধ্য নেমে আসার আগের এই দুপুর, তুমিও রোদের দিকে পিঠ দিয়ে বসে আছ , আমি বাতাসে ভেসে যাবো কীনা ভাবছি কারণ অতীতের সমস্ত উড়ান কোনো দুর্নিবার আকাঙ্খায় নষ্ট হয়ে গেছে , দূরের সপ্তাহের ডানা ভাঁজ করে রাখা আছে ছাদের গোঁসাঘরে , তুমি রৌদ্রের নমিতস্নান সেরে উঠলে দেখতে পাবে যে মাদুরে বসে আছ সেখানের আল্পনা পাল্টে যাচ্ছে , মূলত আমাদেরই সম্পর্কজটিল ঘূর্ণি কী ,এক মিথোস্ক্রিয়ায় , সূর্যের আলোতে বারেবারে পাল্টে যাচ্ছে , বিগত সকালে আমি…

Read More

সাম্য রাইয়ানের কবিতাগুচ্ছ

  অন্ধকাল বেরিয়ে আসতে পারো শামুকী খোলস ছেড়ে দেখতে পারো পুরোটা আঁধার — কতোটা জটিল জ্বালানীবিহীন কী নির্মম এই অন্ধকাল! আকাশে মেঘ নেই, তবু পৃথিবীজুড়ে অন্ধকার নিবিড় অন্ধকার!     শাদা প্রজাপতি এইখানে আমি একা, নিঃসঙ্গ পরিব্রাজক। তারপরও সে আছে এখানেই মাড়াইকৃত চালের মতো শুভ্র শরীর নিয়ে এখানেই কোথাও সে রয়ে গেছে অপ্রকাশিত প্রজাপতি হয়ে। শাদা প্রজাপতি এক জীবন্ত এরোপ্লেন। হাত বাড়ালেই তার উন্মাতাল গান উঠে আসে হাতে কান্নার সুর।     দৃশ্যের মিউজিয়াম জীবনকে মনে হয় ছায়াশীতল মিউজিয়াম। তুমি কি ধ্বংশমতো কারাগারের রক্ষী? একদিন শাশ্বত হয়ে যেতে পারে সবকিছু,…

Read More

উজ্জ্বল ঘোষের কবিতাগুচ্ছ

  চা খাও, জীবন   যদি ভেবে নাও মহাশূন্যে বসে আছে চায়ের দোকানী, তবে হাওয়া ভরে যাবে সুবহ-আড্ডায়, বাঁশবাগানোর মতো ফুটে উঠবে মানুষের রাঙা কলরব। আটখানা দীর্ঘদেহী নারকেল গাছ লম্বা হাত মেলে দেবে তোমার দু’দিকে। নীচে কলা বন, আর হানার দু’ধারে ঝোপঝাড়, কয়েকটা বাড়ি কাছে দূরে। মাঝখানে তুমি, মাটি ছুঁয়ে দাঁড়িয়েছ, মাটির কটোরা। রবিবার শুক্তো রান্না সেরে, চান করে চুল শুকোচ্ছে শ্রীমতী। যদি তুমি শ্রীমতীর কুচি ধরে দাও; যদি সোম-শনি তাকে বাসস্টপে ছেড়ে বল’, “সাবধানে যেও”; তবে ঠিক জেনো মহাশূন্যে উঁকি দেবে কেটলির মুখ, মাটির কটোরা থেকে উৎসারিত হবে ভোলগা-গংগা…

Read More

তাপস বিশ্বাসের কবিতাগুচ্ছ

  দাগ   এইখানে দাঁড়ালে ছোট হয়ে আসে সহজের জনপদ। ডানা কাটা বিন্দু যেমন দু’পাশ থাকে না, আমি থাকে। স্বমেহন থাকে। আত্মার চাতুরির মতো শীত থাকে। এই যে পা চিনে চিনে উপায়ের শৃঙ্গ হল এই যে সম্মোহন জমে জমে বাদাম হল তোমার শেখানো ভাষায় নিজেকে কামড়ের অদ্ভুত দাগ হল     ডার্করুম   ফিল্মে ফুরোচ্ছি যেন আবার। যেন ফিরেও আসছি। চকমকি গানের মতো যেন এও এক বিনিময়। সুতোয় চোখ ভুলে ঝুলে আছি যেন। নিষিদ্ধ হয়ে আছি। যেন চোখেরই অবশিষ্ট কোনও রং। তুমি থেকে থেকে আসছ এমন এক অন্ধতা নিয়ে যার…

Read More

দিদার মালেকী’র কবিতাগুচ্ছ

  সব ডুবে যাচ্ছে, প্রিয়ে   করলডেঙা কতো দূর? গরুর গলায় ছুরি গাছের আগায় আগুন করলডেঙা কত দূর? পেটে আসে না পুত্র রাজা ফিরিয়েছে জায়া মেধসমুনিকে স্বপ্নদর্শন! দুর্গতিনাশিনী দেবী তারই দ্বারে কৃতদার আরতিতে জাগছে আশ্রম ‘কোথায় কৈলাশ মাগো সন্ধানে আমি জ্যান্ত লাশ দেখা দাও ফুল দেবো’ পাতা কুড়োচ্ছে দশভূজা তিন প্যাঁচে পরিধেয় তার লোহিত ছুটছে ত্রিনয়ন! ঘৃতমুখি নারীদের জটলা বচসা লেগেছে রমণে কার পান্ডা কতোটা সবল! তারই মাঝে সুফি এক ‘সত্যরে দেখেছি আমি দেখাবো ভক্তিসম্মিলনে’ তারপর জোছনা বালিকা মালিকা গাঁথছে নুড়িতে বসনে তার বাসন্তী চীবর পেট ফুলে গেল তার স্ফীত…

Read More