সৈকত সরকার

সৈকত সরকারের কবিতাগুচ্ছ

একাদশী ও ম্যালিগন্যান্ট ভোর

১.
লোহা ছুঁয়ে থাকলে
রাতের পরব গায়ে লাগে না।
টেম্পোর খোলা মঞ্চে তখন মড়া নিয়ে তুমুল মোচ্ছব
পয়সায় পয়সায় টোকা লেগে তাল দিচ্ছে শোকের বিতানে

লোহা ছুঁয়ে আছি
সশস্ত্র লোহার কোনো হিতাহিত জ্ঞান থাকে?
যেমন আলোর থাকে কাফের মাড়ানো অপরাধ

 

২.
গুলমোহরের শুভেচ্ছা পৌঁছতে দেরি হয়
বর্ষার ছবিও তো হরিদ্রাভ তোমারই রঙের
ফুলদানির কৌলীন্য মেখে
যেসব মরশুমি লেখাগুলো হেঁটে গেছে কলম উঁচিয়ে

তুমি তার প্রুফ-না-দেখা প্রমাদ
প্রতি সৌজন্য সংখ্যায় কেমন চড়ুই-সমারোহে ফুরিয়ে যাও শোকের মতন!

 

৩.
হাত পা ছড়ানো কিছু আকার দিতে গিয়ে
প্যাস্টেল ভোঁতা হয়। তুমি জানো গায়ের জোরে ঘষলেই তার দুঃখের রঙ খোলে, আড্ডার উপনিবেশ বাড়ে। সুতো আর ঢিল মেপে বয়সের সঙ্গে সমকোণে রাখো। নিজেকে ঘুরিয়ে দাও।
সব দেখার পাশে আমি পাথর রেখে চলি, পাছে ভুলে যাই। ঘুণ ধরে বলেই বই পুরনো হয়, অথচ পুরনো বলেই তাকে স্নেহ করি। স্নেহের দৌরাত্ম্যে পড়তে ভুলে যাই। পড়া আর না-পড়ার ভেতর যেটুকু ব্লার্ব, মাদলের মতো পার্বণ জুড়ে দেয়, তুমি তার ঘুণ খাও; প্রথা ঠেলে জাগাও আমাকে।

 

৪.
গলা অবধি ডুবে আছে আতর-সমাধি
সমস্ত শরীর শুধু সুষে নিচ্ছে অতলের ঘ্রাণ…
আমার গ্রীষ্মকাল হোমের শীতলে নিভে গেছে
কিছুমাত্র ঢেউ দিলে ডুবে যাওয়া অসঙ্গত নয়

গলা অবধি ডুবে আছি, আতরও তো রক্তমাংস গেলে
যদি না পোষায় তার নির্বাসিত ইবের আপেলে

 

পাহাড়

অনেক বাড়ির পাশে দু-একটা গলি শুয়ে থাকে
গলিদের কোনো পিতৃপরিচয় নেই।এমন জারজ উপকূলে
অনুসন্ধিৎসু
জুতোজোড়ার কথা কমবেশি আমরা জানি, সকলেই।
প্রতিটা বাঁকের কাছে হেঁটে এলে
লটারির মতো মনে হয়;
প্রতিটা বাঁকের কাছে নত হই, কুর্নিশ করি।

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment