অভিমন্যু মাহাত

নিম অন্নপূর্ণা সিরিজ

এক
তুমি যদি জানো ভুল, তাহলে ঈশ্বর বাড়িতে অনুসরণ করবে না। ঈশ্বরের নক্ষত্র পতনের দিনক্ষণ ভ্রষ্ট হয় না। আমাদের মধ্যে অনেক ছোট ছোট বিশ্বাসঘাতকতা আছে। একটি বিশ্বাসঘাতকতা যে ভঙ্গুর, ক্রমে বিরতি দেয়…
ভয়াবহ ত্রুটি চিৎকার করে পাঠালে, ভাঙা আলিঙ্গনে। আলিঙ্গনের মাধ্যমে খেলা আউট, ঝড়। এবং প্রত্যেক খেলা শেষে আত্মার প্যারেড। কিন্তু তুমি যদি সার্কাস ভাবো, ভাণ করো শরীর, তবে যাত্রীবাহী পথটি খুঁজে পাবে না। আমি নিষ্ঠুর এবং সম্ভবত সব নিষ্ঠুরতার জন্য কী ঘটে, জানি না সত্য। তাই একটি অস্থিরতার আবেদন, কিছু ছায়া নয়, মায়া। যদিও আমরা একে অপরকে বোকা বানাতে পারি। কেন মিথ্যা আমার স্বাক্ষরে? জাগ্রত হও, জাগ্রত হওয়া জরুরী। একটি ভঙ্গ লাইনে আমাদের ঘুম নিরুত্তর থাকে। সংকেত দাও, হ্যাঁ বা না। সূর্য ওঠে এই ঘরে। একটি বাউল সঙ্গীত, লেখার খাতায় অজ্ঞান রাখে। আমার ভেড়ুয়া আত্মা তোমার কারণে ওড়ে।

 

দুই
অন্ধকারের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করলাম আজ। খুঁজে পাওয়া যায়নি, উপাস্য তোমাকে। কাঁসাই নদীর রাস্তার ধারে হরেক মৃত জোনাকি। এটা ক্যানিয়ন, এর মধ্যে অভিমান অনাদরে বেড়ে উঠেছিল। যে রাস্তা সংকীর্ণ হয়, সেই স্রোতে আরো মৃত চুম্বন। পুচ্ছের আলো দিয়ে আমি গাড়ির পিছন ঠেলে দিলাম। তুমি যাও কলকাতা নগরীতে, অপেক্ষায় আছে তোমার পুরুষ। আর এখানে ‘কিক’ দ্বারা দাঁড়িয়ে, একটি সাম্প্রতিক হত্যা। আমার একবীজপত্রী চিন্তাকে সাহায্য করছে, তোমার এই ‘রোগী’ সাজা। আমি ইতিমধ্যে প্রায় ঠান্ডা। প্রেম বা ঘৃণা তৈরি করছে তোমার এই চালু চেহারা। আমার আঙ্গুল সমাধিপ্রস্তরের পাশে স্পর্শের অপেক্ষা গোনে। কারণ আশপাশের জমিন উষ্ণ ছিল। ফোনের অপেক্ষা সেখানে আছে। সেই অপেক্ষা…. এখনো জীবিত, এখনও… জন্মান্তর হবে না। অযোধ্যা পাহাড়ের সড়কের পাশে আমি দ্বিধা হারালাম। তারপর ধাক্কা লাল বাঁকের উষ্ণ নিষ্কাশনে…

 

তিন
তুমি তো অপরেরই ছিলে। আমরা এখনও নতুন নাম দ্বারা পরিচিত হতে পারিনি। একারণে তোমার উপরের ঠোঁট লম্বা। লবণ বেশি পড়ে তরকারিতে। গত নয় মাসের সম্পর্কে, বিচ্ছেদ ঘটেছে অজুতবার। দেবতাও বিশুদ্ধতা পায় না। জন্মের ঋণ আছে বলে সমুদ্রে জোয়ার উৎপাদন ঘটে। আর বারংবার মৃত্যু ঘটে গার্হস্থ্য সম্পর্কের। তোমার স্তন থেকে দূরত্বে রাখো আমায়। আমার জন্য প্রার্থণা করো, রসিকতা। আমার নাম পরিবারের শব্দ হতে দাও। তোমার সঙ্গে যে আলিঙ্গন, তাকে ওয়াইন নাম করে মহুয়া খাওয়াও। একমাত্র হৃদয়ের পাঁজরে রিফিল করবে শিশুর আর্তনাদ। জানো, মিথ্যুকের কারণে ট্রেসের বড় প্রভাব। দাও ট্রেস, এটাই মাঘী পূর্ণিমার উপহার।

 

চার
রাতের ঈর্ষা তুমি হয়তো ভাগ করবে না আর। তবু বলব, যে ত্বকে নুড়িজন্ম আছে, তার পতন তাকে দিও না। চুম্বনের ক্ষত স্বাদটুকু আবারো পোহাতে চাই। বাতাস অস্বীকার করবে জানি। তঞ্চকতার… বকুনির ঝড় আর আসবে না। তবু কল্পিত ঝড়ের নাভি থেকে পথ বের হবে। অন্ধকার, সাতটি সুতোহীন বন্ধনের যাত্রাপথ। ত্বকের ফুসকুড়ি ধুইয়ে দেবে বোকা বৃষ্টি। আর শস্যক্ষেতের বৃত্তাকারে বাদামি পায়রারা বসে থাকবে। একান্নবর্তী পায়রার ডানায় পত্রযুদ্ধ নেই। বিজয়ের শিল্ড তুমি বাড়িতে নিয়ে যেও। শ্রীদেবী মাকে দেখিও। ভেবে নেব, আজ এই ভূ-স্বর্গে আমি পরাজিত। ৪৯ টি কফিন আমায় আলিঙ্গন করে আছে। রক্ত ঝরে…. তুমি রান্না ও নিয়তি প্রস্তুত রেখো।

 

পাঁচ
যে জিহ্বা সন্ধাতারায় এল, যে জিহ্বা আমার কানে টোটেমিক চিহ্নে স্পর্শ দিল। তার উত্তর থেকে পশ্চিমে বায়ু এসে পড়ল অযোনিসম্ভূতায়। প্রতিবেশীদের গোপন রাখতে চাই সবকিছু। কলাপাতায় মুড়ে থাকুক ক্লান্তি। এই জিহ্বাটিও বড় একা পড়ে আছে। একটি রবিবারের সন্ধ্যা ডাইনি হয়ে ঝড় বয়। আরেকটি রবিবারে তোমার উস্কানি দৃষ্টি, বেঁধে রাখার। তারপর জিহ্বার ভ্রমণকাব্য হারিয়ে গেল। মাছেদের পেটে পেটে ক্লীব ডিম।

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment