অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়

অভি কর্ষিত চারণভূমির ডাইরি

১.
তোমার অন্তর্বাসের পরিপূর্ণ জানালা দেখতে চেয়ে
যে গূঢ় তত্ত্বের অবতারণা করতে হলো, তার সাথে
শুধুমাত্র তৃষ্ণার্ত উটের তুলনা দিতে পারি। যে উট
বসতিতে আসামাত্র সমস্ত কুঞ্চিত জন্মদ্বারে লেগে
গিয়েছিল অমূলক আগুনের শঙ্কা। শূন্যে ভাসমান
প্রতিটি সুস্থ বারান্দা ফিলআপ ছিল দেবতাদের
উন্মাদ কলকাকলিতে। উটটির বোধহয় সামান্য
বাতজ বেদনার প্রকোপ ছিল। না হলে কেন
বলো বারবার অর্ন্তবাসের জানালায় নাক ঠেকিয়ে
জেনে নিতে চাইছিল দৈব ওষুধের প্রকরণ ক্রিয়া।

 

২.
কার্যত প্লেজ়িয়ারিজমের ঘনত্ব অনুধাবন করা
আকাটা হীরকখন্ডের মতো কঠিন। সুবাতাস
এড়িয়ে ঘৃত ও গব্য চর্চিত বাঁশ দিয়ে ঠেলে
তোলা মাংসের বস্তুবাদ তোমার কাছে জননী
সুরক্ষা থেকে প্রাপ্ত টাকার সমান, যা দিয়ে তুমি
একশো ব্যাঘ্র শাবককে ঘাস খাইয়ে ছিলে। কার্যত
অক্ষম মুদ্রাদোষে একটি লৌহখন্ড জ্বালিয়েছি
বৈমাত্রেয় ছাইদানে। কোথাও এক টুকরো ধোঁয়ার
সিলেবল্‌ নেই। তবু আজ, লোহাটির মনখারাপ।

 

৩.
কণা কণা ঈশ্বরজ্ঞান- আমাকে দাও মধ্যরাত্রি
বিভাজন করার মতো তলোয়ার। আমাকে দাও
নকল পাথর বসানো জ্যোতির্ময় আংটির আশা।
ছেঁড়া নোট দাও, টুটাফুটা স্বপ্ন দাও, দাও ফর্ম
হারানো খেলুড়ের সঙ্গলাভ। এ স্থবির জীবনচর্যায়
দাও অপেক্ষার চূড়ান্ত শীর্ষে গমনের যোগ্যতা।
রক্তে দাও প্রোটনের নির্বাণ। ইলেকট্রনের বৈধতা।
বিন্যস্ত বা অবিন্যস্ত যেভাবেই স্থিরতা পাক
তোমার মহাজাগতিক রহস্যোপন্যাস, তুমি কিছু
দাবি কোরো না শুধুমাত্র আমার বিস্ফোরণোত্তর
লিঙ্গটুকু ছাড়া।

 

৪.
কবিতার নিকষিত হেম হে ব্রাদার
বিকশিত কন্টক ফুলের মেটাফর,
কাষ্ঠ সাজ়ায়। ইহজন্মের অপ্রকৃতস্থ
গ্রহ পা টেনে চলে গ্যাছে ভৌমজলের
সারল্য বিন্দুতে। কবচ কুন্ডল তার
গচ্ছিত রাখা আছে সদ্য চাকুরিহারা
যুবকের সমাধিফলকে। এখন মধুক্ষরা
সাঁঝ। লবণ নিবন্ধীকরণ শেষ। গ্রেভইয়ার্ডে
নিভে যাচ্ছে অগ্নিশলাকা। যুবকের অশক্ত
চিবুকের নিচে এসে আড্ডা জমাচ্ছে
মাতাল ভ্রমর আর বৃদ্ধ হওয়া স্যাক লেটার।

 

৫.
তোমার আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বসমূহ ইতিউতি মাথা
গলাচ্ছে হাফ্‌বেকড শ্বদন্তের সহায়তায়। রক্ত
নয়, বিঠোভেনের বেহালার খোঁজে। কোনোকালে
একপ্রকার নগ্ন সুর ধসিয়ে দিয়েছিল তার ধারালো
প্রাচীরের ব্যাবস্থাপনা। এখনও ধার্মিক কিছু লোক
সেইসব কথা বলে-টলে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা
করে মুমূর্ষু বন্দনাগীতি। বেহালায় ঢুকে পড়ে
আহত চাঁদের স্মৃতিকথা। নশ্বর ঠেক ভেঙে
যাওয়ার পর পৌনে পাঁচজন ছায়া তাস পেটাতে
বসে গানের স্কুল ফেরত শ্বদন্তের মেখলায়।

 

৬.
পাড়া যেন বিপ্লবীমুখর রেড করিডর। ক্লাবঘর
গুপ্তসমিতির শ্রেণিকক্ষ। ক্লাস টেস্টে যথাযথ পাশ।
এবার চেন ফ্ল্যাগ টানো বিকেলের এমাথা থেকে
ও মাথায়। পৃথিবী ফুটো করে ঠেসে ঢুকিয়ে দাও
পতাকা বহনকারী দন্ড। পতাকার শীর্ষে ধ্বনি, কার্ফু
গুমখুন, কার্তুজের খোল, প্রভাতফেরি সহ সামগ্রিক
প্যাকেজ মধুরতা উৎসর্গ করে দাও অতি সংগ্রামীদের
নামে। জিহ্বায় ঢালো আবশ্যিক তরলের বিভা।
নেশা নেমে গ্যালে পর মনে হবে আমিই
বিপ্লব সখা, আমিই আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে থাকা
উজান স্থপতি। বৃষ্টিতো আগস্টের ছদ্মবেশ মাত্র।

 

৭.
বংশ পরম্পরায় ছড়িয়ে দিলে নৃত্যের বীজ সান্ধ্য
দৈনিকের তৃতীয় পাতায়। এবার সংসার সমুদ্র
মন্থন করে বাঁচতে চাইবে লক্ষীর ঘটগুলি।
হতেই পারে আজকের ভাষ্য আমার দৈবাদেশের
মতো মিথ্যে। ভরহীন শিমুলের মতো স্পটলেস।
কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার মতো শুকনো, কাঁচুমাচু।
জয় তব ব্ল্যাকশেডের শাড়ি পরা অর্ন্তলীন বৃষ্টি।
এমন ভেজালে পাঞ্জাবি, সহজেই বিমূর্ত ডিঙি চলতে
পারে। কম্পাস ঘুরিয়েও নাগাল পাইনি যে
জলের আজ তার পুনর্দর্শন হলো, আর তুমি
আলাপ বোঝাতে ছুঁড়ে দিলে ধন্যবাদ, হাসি।
রিপ্লাইতে পাঠাচ্ছি শুধু এই কবিতার বিনির্মাণটুকু।

Facebook Comments

Related posts

Leave a Comment